আল্লামা জালালুদ্দিন রুমির বিখ্যাত গদ্য রচনা ফিহি মা ফিহি। ফারসি গদ্যসাহিত্যে মাইল ফলক হিসেবে বিবেচিত হয় তেরো শতকে রচিত এই গদ্য। বইটি ইংরেজিতে Discourse of Rumi নামে পরিচিত। সহজিয়ায় এটি ধারাবাহিকভাবে অনুবাদ করবেন সায়মন আলী।
আমিরের পুত্র এলেন। রুমি তাকে বললেন, “তোমার বাবা সর্বদা আল্লাহর চিন্তায় মগ্ন থাকেন। আল্লাহর উপর তাঁর বিশ্বাস যে কতটা দৃঢ় তা তাঁর কথাবার্তাতে বোঝা যায়। একদিন তিনি আমাকে বললেন, তাতারদের সাথে তাঁর মেয়েকে অর্থাৎ তোমার বোনকে বিয়ে দেয়ার জন্য রুমের জনগণ আহ্বান জানিয়েছে। তাতে নাকি আমাদের ধর্ম এক হয়ে যাবে এবং মুসলিমদের এই নতুন ধর্ম বিলুপ্ত হয়ে যাবে।”
আমি বললাম, “ধর্ম কবে এক হয়েছিলো? কমপক্ষে দুই থেকে তিনটি ধর্ম তো ছিলোই। আর এসব ধর্মের লোকজন সর্বদা পরস্পরের সাথে যুদ্ধ-বিগ্রহে লিপ্ত থাকতো। তাহলে আপনি কীভাবে আশা করতে পারেন যে, ধর্ম এক হয়ে যাবে? এটা সম্ভব হবে কেবল তখনই যখন আবার নতুন করে সব কিছুর সৃষ্টি হবে — সেই নতুন পৃথিবীতে। বর্তমান দুনিয়ায় এটি একেবারেই অসম্ভব, কারণ এখানে বিদ্যমান প্রতিটি ধর্মের আলাদা আলাদা বৈশিষ্ট্য, পৃথক অভিপ্রায় এবং স্বতন্ত্র রেখাচিত্র রয়েছে। পারস্পরিক ঐক্য এখন অসম্ভব। এটা কেবল পুনরুত্থানের সময়ই সম্ভব, যখন পুরো মানবজাতি একত্রিত হয়ে এক জায়গাতে নিজেদের দৃষ্টি আবদ্ধ রাখবে, সকলে একইরকম শুনবে আর সকলের কথাও হবে এক।
আমাদের মধ্যে অনেক কিছুই আছে। পাখি আছে, ইঁদুর আছে। পাখি উপরে খাঁচায় থাকে, আর ইঁদুরের চেষ্টা থাকে সেটাকে নিচে নামানোর। এরকম হাজারো পশুপাখি আমাদের মধ্যে রয়েছে, কিন্তু এগুলো সেই মুহূর্তের জন্য রূপান্তরিত হচ্ছে যখন ইঁদুর তার ইঁদুরসত্তা হারিয়ে ফেলবে, পাখি হারাবে তার পক্ষীসত্তা, আর সকলেই এক হয়ে যাবে। এই রূপান্তরের উদ্দেশ্য উন্নতির দিকে না অবনতির দিকে তা স্পষ্ট নয়। তবে যেদিন রূপান্তরটি স্পষ্টভাবে প্রকাশিত হবে সেদিন বোঝা যাবে আসলে উন্নতির দিকে যাচ্ছে নাকি অবনতির দিকে।
এক মহিলা কিছু একটা হারিয়ে ফেললো। সে ডানে-বামে, সামনে-পিছনে তাকাতে লাগলো। একবার যদি সে জিনিসটি পেয়ে যায় তবে সে আর ডানে-বামে, উপরে-নিচে, সামনে-পিছনে তাকাবে না। জিনিসটি পাবার পর সে একেবারে শান্ত হয়ে যাবে, কোনরূপ দ্বিধায় থাকবে না। সেই ভাবে, পুনরুত্থান দিবসে সমস্ত লোকের দৃষ্টি, শ্রুতি, ভাষা ও উপলব্ধি একইরকম হবে, তারা কোন দ্বিধায় থাকবে না।
ধর্ম কবে এক হয়েছিলো? কমপক্ষে দুই থেকে তিনটি ধর্ম তো ছিলোই। আর এসব ধর্মের লোকজন সর্বদা পরস্পরের সাথে যুদ্ধ-বিগ্রহে লিপ্ত থাকতো। তাহলে আপনি কীভাবে আশা করতে পারেন যে, ধর্ম এক হয়ে যাবে?
যখন দশজন বন্ধু কোন বাগান অথবা কোন দোকানের অংশীদার হয় তখন তারা একই রকম কথা বলে, একই রকম পরিকল্পনা করে, একই বিষয় নিয়ে কাজ করে বলে তাদের চিন্তাভাবনা ও কাজকর্ম একই হয়। সুতরাং পুনরাত্থানের দিন যেহেতু সকলের সমস্ত কার্যক্রম শুধু আল্লাহর সাথে সেহেতু সকলেই এক হয়ে যাবে।
এই পৃথিবীতে সকলে আলাদা আলাদা বিষয় নিয়ে ব্যস্ত। কেউ কোন নারীর প্রেমে মশগুল, কেউ বিত্তবৈভবে মত্ত, কেউ জমিজমা-সম্পত্তি অধিগ্রহণে ব্যস্ত, কেউ বা জ্ঞানার্জনে মগ্ন। ব্যস্ততা আলাদা হলেও প্রত্যেকেই মনে করে নিজেদের সকল উল্লাস, আনন্দ, স্বাচ্ছন্দ্য ও অন্যান্য আবেগ-অনুভূতিসহ যাবতীয় সমাধান নিজেদের ঐ ব্যস্ততার জায়গাতেই নিহিত রয়েছে। এবং সেটাই হচ্ছে একপ্রকার ঐশ্বরিক অনুগ্রহ কারণ যখন তারা তা খোঁজা সত্ত্বেও পায় না তখন তারা আবার চেষ্টা করে। একটা নির্দিষ্ট সময় অপেক্ষা করার পর তারা আবার বলতে থাকে, “কাঙ্ক্ষিত আনন্দ ও উল্লাস অবশ্যই খুঁজে নিতে হবে। সম্ভবত তা পাবার জন্য আমি তেমন চেষ্টাই করি নি । সুতরাং আমাকে আবার খোঁজার চেষ্টা করতে হবে।” তখন তারা আবার খোঁজা শুরু করে কিন্তু তারপরেও তারা পায় না। আবার খোঁজে আবার কাঙ্ক্ষিত আনন্দ পেতে ব্যর্থ হয়, আবার চেষ্টা করে। যতক্ষণ পর্যন্ত বাস্তব সত্য উন্মোচিত না হয় ততক্ষণ এমনটা চলতেই থাকে। তারপর তারা বাস্তবতা বুঝতে পারে।
তবে আল্লাহর কিছু বান্দা আছেন যাঁরা পুনরুত্থানের আগেই বুঝতে পারেন। মুহম্মদের (স.) চাচাতো ভাই ও জামাতা আলী বলেন, “যদি সত্যের পর্দা উন্মোচিত না ও হতো, তবু আমার বিশ্বাসে কোন রকম তারতম্য ঘটতো না।” এর অর্থ এই যে, “দেহ চলে গেলেও এর পুনরুত্থান যখন হবে তখন আমার নিশ্চয়তা এর চেয়ে বেশি কিছু হতে পারে না।” এটি রাতের অন্ধকারে একদল লোকের মতো যারা নামাজের জন্য দিক হাতড়ে বেড়ায়, আশেপাশে বিভিন্ন দিকে তাকাতে চেষ্টা করে কিন্তু কিছুই দেখতে পারে না। দিনের আলো ফুটতেই একজন ছাড়া বাকি সকলে মক্কামুখী হতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে, কারণ সেই একজন সারা রাত মক্কামুখী হয়েই ছিলেন। সুতরাং সেই ব্যক্তি কেনই বা মক্কামুখী হবার জন্য ব্যস্ত হবেন? অতএব সেসকল মুমিন ব্যক্তি দুনিয়ার সমস্ত কিছু থেকে বিমুখ হয়ে সর্বদা এমনকি রাতের বেলাতেও নিজেদেরকে শুধু একটি দিকের প্রতিই মুখাপেক্ষী রাখেন। আর একারণেই পুনরুত্থান তাঁদের মধ্যে সর্বদা সুস্পষ্টভাবে প্রকাশিত।
কথার কোন শেষ নেই, তবে প্রার্থীর সামর্থ্যকে ভিত্তি করে তা বণ্টন করা হয়েছে ।
জ্ঞান হচ্ছে বৃষ্টির মতো। এর সরবরাহে কোন সীমা-পরিসীমা নেই। কিন্তু এটি বর্ষিত হয় যথাযথ উপলক্ষের চাহিদা মেনে। শীতে হোক কিংবা বসন্তে হোক, হোক গ্রীষ্মে কিংবা শরতে, যথাযথ পরিমাপেই হোক কিংবা হোক কিছু কম বা কিছু বেশি; যখন হোক আর যতটুকুই হোক- বৃষ্টির উৎস কিন্তু একটাই আর তা হচ্ছে সাগর, যার কোন সীমা নেই। ওষুধ বিক্রেতা চিনির সিরাপের জন্য চিনি আর অন্যান্য ওষুধের দানাকে কাগজে ভাজে আটকে রাখেন কিন্তু চিনি বা ওষুধের দানা তাতে সহজে আটকে থাকে না। উপাদানে ওষুধের দানা আর চিনি অসংখ্য ও অগুণতি । একটি কাগজের টুকরা সেগুলোকে কীভাবে আটকে রাখবে?
কিছু লোক মুহম্মদ (স.)-কে জেরা করল, “কোরআন আপনার উপর শব্দে শব্দে কেন অবতীর্ণ হয়েছে? অধ্যায়ে অধ্যায়ে অবতীর্ণ হল না কেন?” উত্তরে মুহম্মদ (স.)বললেন, “বোকা বলে কী? এটা যদি সত্যি একেবারে অধ্যায়ে অধ্যায়ে অবতীর্ণ হতো তবে তো আমি আর আমি থাকতাম না, হারিয়ে যেতাম।”
বাস্তবিক যারা অল্পে অল্পে বোঝার চেষ্টা করে তারা গভীর বোধসম্পন্ন হয়ে থাকে। তারা একটি ব্যাপার দ্বারা অনেক ব্যাপার বুঝে নেয়, সমস্ত খণ্ড বুঝতে পারে একটি লাইন পড়েই। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, একদল লোক কোন একটি গল্প শুনতে বসেছে; কিন্তু তাদের মধ্যে কোন একজন মহিলা যেন আগে থেকেই জানেন গল্পে কী ঘটতে চলেছে এবং এমনভাবে জানেন যেন তিনি সে গল্পের ঘটনায় উপস্থিত ছিলেন। গল্পের প্রথম ইঙ্গিতে তিনি পুরো গল্পটি অনুধাবন করতে পারেন। কখনও ফ্যাকাশে হন কখনও বা রক্তিম, অর্থাৎ তার মধ্যে বিভিন্ন আবেগ-অনুভূতির প্রকাশ ঘটে। যেহেতু বাকিরা গল্পের পুরো ঘটনা জানে না তাই তারা যতটুকু শোনে ততটুকুই বুঝতে পারে। ব্যতিক্রম সে মহিলাটি, যিনি গল্পের কিছু অংশ শুনে পুরো ঘটনাটি বুঝে ফেলেন।
ওষুধবিক্রেতার কথায় ফিরে আসি। একজন ওষুধবিক্রেতার কাছে প্রচুর পরিমাণে চিনি থাকলেও তিনি আগে দেখেন যে আপনি কী পরিমাণ অর্থ নিয়ে এসেছেন। তিনি সে অর্থের পরিমাণে আপনাকে চিনি দিবেন। এখানে অর্থকে আন্তরিকতা আর বিশ্বস্ততা সমার্থক বলা যায়। ব্যক্তির বিশ্বাস ও সচেতনতা অনুসারে কথা দেয়া হয়ে থাকে। আপনি যখন চিনি চাইতে আসেন তখন তারা আপনার থলির ধারণক্ষমতা পরীক্ষা করে। তারপর তারা পরিমাপ করে সেটি এক এককের না দুই এককের। তবে কেউ যদি থলের বদলে উটের পাল নিয়ে আসে তবে সেই পরিমাণ চিনির যোগান দিতে ওষুধবিক্রেতা মুনিষ-কামলাদের সাহায্য নিয়ে থাকে।
সুতরাং, সাগর পরিমাণ পেয়েও কারো সন্তুষ্টি হয় না আবার কারো জন্য এক বিন্দু পরিমাণই অতিরিক্ত হয়ে যায়।
এটি শুধু কল্পনা, বিজ্ঞান আর বৈদগ্ধের জগতেই প্রযোজ্য নয়। এটি সবকিছুর জন্য সত্য।
বিত্ত-বৈভব, সম্পত্তি, সোনাদানা এ জগতে অসীম ও অফুরন্ত কিন্তু ব্যক্তিবিশেষের ধারণক্ষমতার উপর ভিত্তি করে সেগুলো বণ্টিত। পাগল না হলে কে-ই বা সেগুলোর অবাধ প্রাপ্তি সহ্য করতে পারে? আপনারা কি মজনু-ফরহাদ বা অন্য বিখ্যাত প্রেমিকপুরুষদের দেখেন নি যারা শুধু নিজের ভালোবাসার মানুষটিকে পাবার জন্য মরুভূমি আর পাহাড়ের মতো দুর্গম জায়গাগুলো পাড়ি দিয়েছিল? শুধু একটি আবেগকে প্রাধান্য দিতে গিয়ে তারা আত্মনিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছিল বলেই তা সম্ভব হয়েছিল। আপনারা কি ফারাওদের ব্যাপারে জানেন না যারা সাম্রাজ্য আর অঢেল সম্পত্তির প্রাচুর্যের ফলে কেমন করে নিজেদের খোদা বলে দাবি করেছিল?
হ্যাঁ, প্রকৃতপক্ষে এই মানুষগুলোর বিশ্বাস আছে কিন্তু তারা জানে না সেই বিশ্বাস কীসের মধ্যে রয়েছে? একইভাবে একটি শিশুও বিশ্বাস করে যে সে খাবার জন্য রুটি পাবে কিন্তু সে জানে না এই রুটি কোত্থেকে আসে। যেসব উপাদান বেড়ে ওঠে সেসব উপাদানের প্রত্যেকটির ক্ষেত্রে এই ব্যাপারটি একইরকম। পানির অভাবে গাছ শুকিয়ে যায়, হলুদ হয়ে যায়। কিন্তু গাছ জানে না, এই পানির জন্য যে তৃষ্ণা জাগে সে তৃষ্ণা আসলে কী?
আমাদের বিশ্বাস পতাকার মতো। প্রথমে আমরা আমাদের বিশ্বাস প্রচারের জন্য পতাকাটি উত্তোলন করি, পরে সেটি সমর্থন ও রক্ষা করতে বিভিন্ন জায়গা থেকে লোকজন এনে তার পাদদেশে জড়ো করি। আমরা কার্যকারণ, বোঝাপড়া, আগ্রাসন ও ক্রোধ, সহনশীলতা, উদারতা, ভীতি ও আশা ইত্যাদি সম্পৃক্ত যাবতীয় আবেগ-অনুভুতি-সংশয়কে অবিরত ও অবিশ্রান্তভাবে পাঠাতে থাকি। যারা দূর থেকে দেখবে তারা শুধু পতাকাটিই দেখবে কিন্তু যারা কাছ থেকে দেখবে তারা এই পতাকার মাধ্যমে আমাদের মধ্যে নিহিত বিশ্বাসের সমস্ত সারবস্তু ও বাস্তবতাও দেখতে পাবেন।
কেউ একজন আসামাত্র রুমি তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন,“কোথায় গেছিলে? আমরা অনেকদিন তোমার সাক্ষাৎ পাই নি। কেন আমাদের থেকে আড়ালে ছিলে?”
আগন্তুক উত্তরে বললেন,“চক্রান্ত বলতে আমরা যা বুঝি এটা তা ই ছিল।”
রুমি বললেন,“আমরা আমাদের পক্ষ থেকে প্রার্থনা করে যাচ্ছি যাতে যাবতীয় চক্রান্তের অবসান ঘটে। চক্রান্ত বিচ্ছেদ ঘটায় তাই সেটি খুবই অনুচিত কাজ। তবে হ্যাঁ, আল্লাহর শপথ করে বলছি-এই চক্রান্তও তাঁর ইচ্ছাতেই আসে। আর তাঁর সম্পর্কিত সবকিছুই ভালো। সত্যি কথা বলতে, আল্লাহর সাথে সম্পর্কিত যাবতীয় ব্যাপার কল্যাণকর আর যথাযথ। কিন্তু আমাদের সাথে সম্পর্কিত ব্যাপারগুলোর ক্ষেত্রে তা কতটুকু সত্য? ব্যভিচার আর পবিত্রতা, ইবাদত এড়িয়ে চলা আবার প্রার্থনা করা, অবিশ্বাস আর ইসলাম, মূর্তিপূজা আর আল্লাহর একাত্মতা- আল্লাহর ক্ষেত্রে সবই কল্যাণকর। কিন্তু আমাদের ক্ষেত্রে ব্যভিচার, চোরাকারবারি, অবিশ্বাস ইত্যাদি অশুভ আর আল্লাহর একাত্মতা, ইবাদত ইত্যাদি শুভ। যদিও আল্লাহর সাথে সম্পর্কিত সবকিছুই শুভ।
একজন রাজার রাজত্বে কারাগার থাকে, থাকে ফাঁসিকাষ্ঠ; থাকে রাজকীয় পোশাকের জাঁকজমকতা এবং সম্পত্তির ঐশ্বর্য; আরো থাকে অপেক্ষারত পরিচারকের বহর, পান-ভোজন, বিলাসব্যসন, বিভিন্ন ধরনের উদযাপন ইত্যাদি। রাজার ক্ষেত্রে এসবই কল্যাণকর। রাজকীয় পোশাক যদি হয় রাজার রাজত্বের সমৃদ্ধির নিখুঁত পরিচায়ক তাহলে কারাগার, ফাঁসিকাষ্ঠ হচ্ছে তার রাজত্বের ত্রুটিহীন অলংকার স্বরূপ। রাজার ক্ষেত্রে তাই এসব কিছুই যথাযথ ও কল্যাণকর কিন্তু প্রজাদের ক্ষেত্রে রাজকীয় পোশাক আর ফাঁসিকষ্ঠ দুটো কি একই গুরুত্ব বহন করে?