ওশোর যোগমার্গ : প্রথম পর্ব

আধুনিক ভারতের আধ্যাত্মিক চিন্তায় অনিবার্য নাম ওশো। তাঁর হিন্দি বই ইয়োগ কা মার্গের ধারাবাহিক অনুবাদ করছেন অনুবাদক অজিত দাশ। আজ ছাপা হলো প্রথম পর্ব।

 

আভাস

কদিন আগেই আমার এক বয়োজ্যাষ্ঠ বন্ধুর সঙ্গে দেখা হয়েছিল পার্কে। তিনি পেশায় মনস্তাত্ত্বিক। অস্ট্রেলিয়ার ওয়েস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেন। অধ্যাপনা জীবনের বিচিত্র অভিজ্ঞতা নিয়ে আলাপের এক ফাঁকে ব্যাগ থেকে একটি বই বের করে আমাকে দিয়ে বললেন, ‘বইটা তোমার পড়া উচিত’।

 

বইটি হাতে নিয়ে এক অদ্ভুদ অনুভূতি হয়েছিল। আমাকে কিছু জিজ্ঞেস করার সুযোগ না দিয়ে তিনি আবারও  বললেন ‘বইটা তোমার পড়া উচিত’।  বইটি হাতে নিয়ে কয়েক পৃষ্ঠা উল্টাতেই  একটি বাক্যে চোখ আটকে গেল, ‘প্রতিটি মানুষের জীবনে কখনো কখনো এমন সময় আসে যখন সে পুরোপুরি হতাশ হয়ে পড়ে।’

 

আমার অবস্থাও ঠিক সেরকমই ছিল। আমার মনোসমীক্ষায় প্রায় আশিটি মক্কেলের কেস জমা পড়েছিলো এবং আমিও তাদেরকে কোনোভাবে সমাধান দিতে পারছিলাম না। বিষয়টি নিয়ে আমি খুব উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলাম। কোনোরকম সমাধান না পেয়ে আমার মধ্যে খুবই হতাশা কাজ করছিল।

 

যখন বইটি পড়া শুরু করেছি ‘স্নায়বিক অহং’ সম্বন্ধীয় ধারণাগুলো আমার কাছে পরিস্কার হতে লাগলো যার ফলে আমার ব্যক্তি জীবনে এক অন্যরকম পরিবর্তন শুরু হলো।

 

যখন তুমি কোনো বিচার বুদ্ধি ছাড়াই মনকে নিরূপণ করার চেষ্টা করবে দেখবে একটা সময় ‘মন বিচার বুদ্ধির উর্ধ্বে চলে গেছে।

 

এই না-মন অবস্থায় এমন এক শূন্যস্থান, এমন এক সেতু তৈরি হবে যার না শুরু আছে না শেষ, না জন্ম আছে না মৃত্যু।

স্বামী দেব ইন্দিভার

আমরা একটি গভীর ভ্রমের মধ্যে আছি — আগামীকাল কিংবা ভবিষ্যতের ভ্রম। মানুষ আত্মবঞ্চনা না করে বেঁচে থাকতে পারে না। নীটশে বলেছিলেন, মানুষ সত্যের সঙ্গে বসবাস করতে পারে না। বেঁচে থাকতে হলে তার স্বপ্ন, ভ্রম, মিথ্যের ভিতর দিয়েই বেঁচে থাকতে হয়। এবং নীটশে ঠিক বলেছিলেন। এই বিষয়টিকে গভীরভাবে উপলব্ধি করা চাই। তা না হলে আমরা যোগের পথে প্রবেশ করতে পারব না।

 

মনকে গভীরভাবে বোঝা চাই। যে মন স্বপ্ন, ভ্রম এবং মিথ্যের মধ্যে থাকতে চায় সেটিকে গভীরভাবে বুঝতে হবে। মানুষ শুধু রাতে ঘুমিয়েই স্বপ্ন দেখেনা। হাঁটতে হাঁটতেও স্বপ্নে বিভোর থাকে। হয়ত কারো কথা ভাবছে, কারো দিকে তাকাচ্ছে। একটা না একটা স্বপ্ন দিনরাত মানুষকে আচ্ছন্ন করে রাখে। আধুনিক বিজ্ঞান ঘোষণা দিয়েছে, মানুষ না ঘুমিয়েও বেঁচে থাকতে পারবে কিন্তু স্বপ্ন না দেখে বেঁচে থাকতে পারবে না।

 

আমাদের ঘুমের কয়েকটি স্তর রয়েছে। আমরা একটি নির্দিষ্ট স্তরে গভীর ঘুমে থাকি আবার আরেকটি স্তরে স্বপ্ন দেখি। শুরুতে আমরা গভীর ঘুমের স্তরে পৌঁছে যাই। তারপর স্বপ্ন দেখার স্তর শুরু হয়। স্বপ্ন দেখার স্তর শেষ হয়ে গেলে আবার গভীর ঘুমের স্তরে পৌঁছে যাই। সেখানেও একটি ছন্দ আছে। দিন ও রাতের মতো। কোনো কারণে গভীর ঘুমের স্তর যদি বিঘ্ন হয় তাহলে সকালবেলা ঘুম থেকে জাগার পর তোমার মনে হবে না ঘুম ঠিকমত হয়নি। কিন্তু যদি স্বপ্ন দেখা অবস্থায় আমাদের ঘুমের বিঘ্ন ঘটে তখন দেখা যায় সকালবেলা ঘুম ভাঙার পর পর খুব অপূর্ণ লাগে। সারাদিন এমন মনে হয় যে ঘুম ঠিকমত হয়নি।

 

অনেক গবেষক এটা প্রমাণ করেছেন স্বপ্ন দেখে আমাদের মনের চাহিদা পূরণ হয়। মনের চাহিদা পূরণ হওয়ার জন্য স্বপ্ন দেখা অনেক জরুরি। শুধু ঘুমন্ত অবস্থায় আমাদের স্বপ্ন দেখে তা কিন্তু নয়। জাগ্রত অবস্থায়ও আমাদের মন স্বপ্নে বিভোর থাকে। দিন এবং রাত্রি আমাদের মন স্বপ্ন এবং স্বপ্নহীন হয়ে থাকে। আমরা প্রতিদিন নতুন স্বপ্ন এবং আশা নিয়ে ভবিষ্যতের কথা ভাবতে থাকি। বর্তমানকে আমাদের নরক মনে হয়। আর মনে হওয়ার কারণ একটাই আমরা স্বপ্ন নিয়ে ভবিষ্যতে আঁটকে থাকি। হয়ত কাল কোনো সুখের সন্ধান আসবে। কাল থেকে আমার দিন ভাল যাবে। কাল থেকে আমি নতুন করে একটা কাজ শুরু করব ইত্যাদি। আর এরকম করেই তোমার জীবন বর্তমান থেকে দূরে সরে গিয়ে আগামীকালের মধ্যে আটকে থাকে। তুমি বাস্তবের মুখোমুখি হতে পার না। যেটি তোমার হাতের নিকটেই আছে। এই ভবিষ্যৎ এবং আগামীকালকে আমরা নানাভাবে নাম দিই। কেউ স্বর্গ বলেন, কেউ মোক্ষ কিংবা কেউ সুখ বলেন। কেউ স্বর্গের কথা ভাবছেন, হয়ত মৃত্যুর পর তিনি স্বর্গ লাভ করবেন কিংবা কেউ ভাবছেন অর্থ-সম্পত্তির কথা যা ভবিষ্যোতে লাভ করবেন। কিন্তু বর্তমান এবং চলমান মুহূর্তে আমরা কেউ অবস্থান করতে পারিনা।

 

অতীত কিংবা ভবিষ্যৎ যেখানেই অবস্থান কর ঘুরে ফিরে সেটি স্মৃতিকে মন্থন করাই হবে। আর নীটশে দেখ খাঁটি কথাটাই বলেছেন — মানুষ সত্য নিয়ে বাঁচতে পারে না। আমাদের তথাকথিত সত্যগুলো একপ্রকার মিথ্যা। সুন্দর সাজানো মিথ্যা। কেহই নগ্ন সত্যকে দেখতে প্রস্তুত নয়। আর সেরকম মন কখনোই যোগে প্রবেশ করতে পারে না। কেননা যোগ হচ্ছে সত্যকে উন্মোচিত করার একটি পদ্ধতি, প্রক্রিয়া। যোগ হচ্ছে বর্তমানে অবস্থান করার বিজ্ঞান। অর্থাৎ তোমার মন সর্বদা প্রতিটি মুহূর্তে সচেতন থাকবে। ভবিষ্যত কিংবা অতীতের দিকে ঝুঁকবে না। তুমি সবসময় যে মুহূর্তে অবস্থান করছ ঠিক সেই মুহূর্তকে সাক্ষাৎ করে চলবে।

 

তাই বলা যায় তুমি যোগের পথে তখনি প্রবেশ করতে সক্ষম হবে যখন তুমি তোমার মনকে নিয়ে পুরোপুরি হতাশ হবে। যদি তুমি এখনো প্রত্যাশা কর যে, তোমার মনকে কাজে লাগিয়ে কিছু একটা করবে তাহলে বলব যোগ তোমার জন্য নয়। একটা পুরো হতাশাজনক অবস্থান লাগবে। যখন তোমার মন স্থির করবে সেটি দিয়ে কিছুই সম্ভব নয়। সে স্থির হতে পারছে না। চোখ বন্ধ করলেই নানারকম এলোমেলো চিন্তা জর্জরিত করে। তাই বলেছি তুমি পুরো হতাশা হয়ে যখন কোনো রকম শর্ত ছাড়াই এইসব থেকে মুক্তি পেতে চাইবে তবেই যোগে প্রবেশ করতে পারবে। হাজার হাজার লোক যোগে প্রবেশ করতে চায় কিন্তু অল্প কিছু লোকই কেবল মাত্র সফল হতে পারে। তুমি যখন দেখবে তোমার আর সব বৃথা কেবল যোগে প্রবেশ করার ভিতর দিয়ে তুমি সর্বশেষ কিছু একটা করতে পারবে তবেই যোগের মাধ্যমে কিছু অর্জন করতে পারবে।

 

যোগ মানেই হলো, ‘আর কোনো আশা বেঁচে নেই। কোনো ভবিষ্যত নেই। কী ঘটবে তা নিয়েও তুমি আগ্রহী নও। যা হবার হবে তবুও তুমি আগ্রহী তা জানার জন্য।’

 

একমাত্র বাস্তবতাই তোমাকে মুক্তি দিতে পারে। পুরোপুরি নিরাশ হতে হবে। আর এই পুরোপুরি নিরাশ হওয়াকেই বুদ্ধ বলেছেন ‘দুঃখ’। তুমি যদি সত্যি দুর্দশাগ্রস্থ হও তাহলে কিছু আশা করোনা। কেননা তোমার আশা তোমাকে আরো দুর্দশাগ্রস্থ করবে। আশা হলো নেশার মতো।

 

যোগ কোনো ধর্মমত নয়। এটা মনে রাখতে হবে। যোগ হলো বিশুদ্ধ বিজ্ঞান। যেমন পদার্থবিজ্ঞান, গণিত অথবা রসায়ন। কোনো খ্রিস্টান ব্যক্তি পদার্থবিজ্ঞানের সূত্র আবিষ্কার করলে সেটি খ্রিস্টানদের পদার্থবিজ্ঞানের সূত্র বলে গণ্য হয় না। যোগ হল বিজ্ঞান আর এটা একটা ঘটনা মাত্র যে, একজন হিন্দু সেটি আবিষ্কার করেছে।  কিন্তু যেকোনো ধর্মানুসারী লোক যোগী হতে পারেন।

 

যোগের কথা বললেই যে মহৎ নামটি উচ্চারণ করতে হবে সেটি হলো ‘পতঞ্জলি’। মহাঋষি পতঞ্জলি এমনই একজন যাঁর সঙ্গে অন্য কারো তুলনা হয় না। মানব ইতিহাসে তিনিই প্রথম ব্যক্তি যিনি ধর্মকে বিজ্ঞানে রূপ দিয়েছেন। বিশুদ্ধ কিছু সূত্র তৈরি করেছেন, যেগুলোর জন্য অন্ধ বিশ্বাসের প্রয়োজন নেই।

 

পৃথিবীর যাবতীয় ধর্মগুলোর মধ্যে বিশেষ কোনো পার্থক্য নেই। তথাকথিত ধর্মগুলো বিশ্বাসের উপর ভর করে টিকে আছে।

 

যোগ তোমাকে বলবে না কোনো কিছুতে বিশ্বাস করতে। যোগ বলবে ‘অভিজ্ঞতা’র কথা। যেমন বিজ্ঞান বলে থাকে ‘পর্যবেক্ষন’। আর অভিজ্ঞতা এবং পর্যবেক্ষণ একই। কিন্তু তাদের দিক নির্দেশনা ভিন্ন।

 

বিজ্ঞান বলে, ‘বিশ্বাস করো না, যত পার সন্দেহ কর, আবার অবিশ্বাসও করো না’ কেননা অবিস্বাসও একপ্রকার বিশ্বাস। তুমি ঈশ্বর ধারণায় বিশ্বাস করতে পার, আবার নাও করতে পার। বিজ্ঞান ধার্মিক, অধার্মিক, বিশ্বাসী ও অবিশ্বাসী এসব মতবাদ তোয়াক্কা করে চলে না। বিজ্ঞান কোনো কিছুর অভিজ্ঞতায় বিশ্বাস করে, পর্যবেক্ষণে বিশ্বাস করে।

 

তাহলে এটা স্মরণ রাখতে হবে যোগ হচ্ছে আমাদের অস্তিত্ব সম্বন্ধীয়, অভিজ্ঞতা সম্বন্ধীয় পর্যবেক্ষণ। এক্ষেত্রে ব্যক্তির নিজস্ব বিশ্বাস কিংবা ধর্মবিশ্বাস এর প্রয়োজন নেই। শুধু সাহস প্রয়োজন। বিশ্বাস তোমার অস্তিত্বে কোনো পরিবর্তন আনতে পারে না। বিশ্বাস হলো জামার মত। জামা পরিবর্তন করা যায়। বিশ্বাস করা সহজ কেননা এতে ঝামেলা নেই। আর যখন তখন চাইলে এই বিশ্বাসকে সরিয়ে রাখা যায়। আর যোগ যেহেতু বিশ্বাস নয় তাই তা কঠিন। এবং অনেক ক্ষেত্রে অসম্ভব কর্মও বটে যহেতু যোগ পুরোপুরিই অস্তিত্ববাদী। তুমি সত্যে উপনীত হতে পার কেবল তোমার অভিজ্ঞতা দিয়ে। তোমাকে পরিবর্তিত হতে হবে পুরো জীবন দিয়ে, মনস্তত্ত্ব দিয়ে আর এরকম পরিবর্তনের মাধ্যমেই তুমি একটি নতুন বাস্তবতায় উপনীত হতে পারবে।

 

তাই যোগ একই সঙ্গে মৃত্যু এবং একটি নতুন জীবনের সূচনা। যতক্ষণ পর্যন্ত না তোমার ভিতরে পুরোনো বিশ্বাস, প্রথা, ধ্যান ধারণার পরিবর্তন হচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত নতুন কিছু জন্ম নিতে পারছে না। তুমি একটি বীজ মাত্র। আর এই বীজ মাটিতে রোপণ করতে হবে, তা না হলে নতুন চারা গজাবে না। তাই যোগ একই সঙ্গে মৃত্যু এবং একটি নতুন জীবনের সূচনা। ফলে যোগের ক্ষেত্রে বিশ্বাস পরিবর্তনের প্রশ্ন উঠাই অমূলক।

 

যোগ কোনো দর্শনও নয়। এমন কিছুও নয় যে তোমাকে চিন্তা করতে হবে। এটা এমন কিছু যেটা তোমাকে করতে হবে। চিন্তা এখানে কাজ করবে না। চিন্তা তুমি মস্তিষ্ক থেকে করবে। তুমি একটি নির্দিষ্ট কায়দায়, নির্দিষ্ট যুক্তি, সূত্র মেনে চিন্তা করবে যা তোমার হৃদয় পর্যন্ত পৌঁছাবে না। তোমার হৃদয় হচ্ছে তোমার সবচেয়ে গভীর জায়গা আর তোমার মস্তিষ্ক হলো সেটির শাখা।

 

পতঞ্জলির মাধ্যমে আমরা চিন্তা করব না কিংবা কোনো কিছু অনুমান করার চেষ্টাও করব না। পতঞ্জলির সাহায্যে আমরা আমাদের সত্তার পরমসূত্রগুলো সম্পর্কে অবগত হব। কীভাবে নতুন জন্ম লাভ করতে হয়। আর একারণে আমি বলি যোগ হলো বিজ্ঞান। পতঞ্জলি বুদ্ধের মতো আলোকপ্রাপ্ত। বুদ্ধ, কৃষ্ণ, মহাবীর, জরথুস্ত্র তাদের কারোরই বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি ছিল না।

 

পতঞ্জলি হলেন বুদ্ধের পৃথিবীতে একজন আইনস্টাইন। তিনি একটি বিস্ময়। তাকে নিঃসন্দেহে নোবেল প্রাইজ দেওয়া যায়। তুমি যদি পতঞ্জলিকে অনুসরণ কর তাহলে দেখবে তিনিও গাণিতিক সূত্র মেনে চলেন। তিনি যা বলেছেন করে দেখ, দেখবে সেটার পরিণতি ঘটতে বাধ্য। এটা অনেকটা দুই যোগ দুই চার এর মত অথবা জলে তাপ দিচ্ছ তাপমাত্র একশ হলে জল ফুটতে শুরু করছে। বিশ্বাসের প্রয়োজন নেই যে, জল ফুটবে অথবা দুই যোগ দুইয়ে চার হবে। আর একারণেই আমি বলি পতঞ্জলির সঙ্গে কারো তুলনা হয় না।

 

[* পতঞ্জলি ১৫০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ বা খ্রিস্টপূর্ব দ্বিতীয় শতকে যোগ দর্শনের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রামাণিক শাস্ত্রগ্রন্থ যোগসূত্র-এর সংকলক ছিলেন। কিংবদন্তি অনুসারে, পতঞ্জলি মহাভাষ্য (পাণিনির অষ্টাধ্যায়ী-এর উপর রচিত কাত্যায়নের বৃত্তিকার টীকা) গ্রন্থেরও রচয়িতা। তিনি আয়ুর্বেদের উপরও একটি বই লিখেছিলেন।]

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here