আমাদের ছায়াছবি, এক অজ্ঞজনের চিন্তা

একটি দেশের চলচ্চিত্র সেই দেশের ভেতরে থাকা জাতি বা জাতিগুলোর/ শ্রেণিগুলোর চালচিত্র প্রকাশ করে, তুলে ধরে জাতির দ্বন্দ্ব, সংকট আর বাসনার ধারা। কিন্তু জাতি বলতে যে কল্পিত সম্প্রদায় দুনিয়াতে আছে তা আসলে কী দিয়ে তৈরি? তাই, চায়ের দোকানে বাংলা ছায়াছবির জনপ্রিয়তা দেখে মনে মনে ভাবতে থাকি, জাতি কী জিনিস এবং আসলে কারা? জাতির রুচি, চাহিদা, স্বপ্ন, উন্নতি বলতে কাদের উন্নতি বোঝায়? তখন মনে হয়, জাতি আর শ্রেণিতে অনেক ফারাক, কিন্তু শ্রেণি জাতিকে ভুলিয়ে রাখে, শ্রেণির রুচিকে জাতির চাহিদা বলে প্রচার করে সম্পূর্ণ অগণতান্ত্রিকভাবে, আর দেখি কিভাবে এক শ্রেণি তার সমস্ত কামনা-বাসনাকে পুরো জাতির উপর চাপিয়ে দিচ্ছে তার তথ্য, ক্ষমতা ও কারিগরি শিক্ষার বলে। তখন সকল শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান, বিশেষত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে শ্রেণির ইস্ত্রি-যন্ত্র কিংবা শ্রেণি তৈরির কারখানা বলে মনে হয়।

 

সহজে বলতে গেলে, উচ্চবিত্তের প্রতি অনুগত ফ্রাইডে তৈরির কারখানা। বাংলাদেশের সিনেমা দেখলে কি এই দেশের, সমাজের কিংবা সমাজের বৃহৎ শ্রেণির কোনো চিত্র পাওয়া যায়? এর উত্তরের সাথে জড়িত থাকতে পারে আমাদের সিনেমা না দেখার সম্পর্ক, যার ফলে আমাদের সিনেমা আয় করতে পারে না। তাই হারিয়ে যাচ্ছে দর্শক, ঘরে বসে দেখছে বিদেশি সিনেমা, কমছে সিনেমা ঘর, বাড়ছে মাল্টিপ্লেক্স যেখানে ইংরেজি সিনেমা উৎসব করে দেখে শিক্ষিতমানুষজন। অন্যদিকে দেশের শ্রমিক শ্রেণির মানুষেরা এখনো টিকিয়ে রেখেছে আমাদের সিনেমা ঘর, আমাদের চলচ্চিত্র। সমাজের শিক্ষিত কিংবা উঁচু তলার মানুষেরা দেখে ওপারের চলচ্চিত্র, অন্য দেশের, অন্য ভাষার এবং নিজ দেশের চলচ্চিত্র ও নায়ক নিয়ে ট্রল করে, মিম বানায়। আমাদের জনপ্রিয় ধরনের সিনেমার এই অবস্থার পরিপ্রেক্ষিত চিন্তা করতে গিয়ে এসেছে এই আনাড়ি চিন্তার কথাগুলো।

 

বেশ কয়েক মাস ধরে এ বিষয় নিয়ে আমি ভেবেছি, কয়েকজনের সাথে কথাও বলেছি। তা হচ্ছে আমাদের চলচ্চিত্রে খলনায়কের চরিত্র। এতে রয়েছে উপস্থাপনের চরম অভাব, অনীহা ও অজ্ঞতা। এর মানে সমাজের ভিলেনের সাথে সিনেমার ভিলেনের মিল নেই। দেখা যায়, সিনেমায় উপস্থাপিত ভিলেনরা আমাদের অপরিচিত কিংবা দেখলে মনে হয় তারা সমাজের ভাঁড়। আমরা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ভিলেন হিসেবে দেখি কিছু পাতি নেতা আর পুলিশকে। যদিও তারা ভিলেন বটে, কিন্তু শুধু তারাই কেন? কেন ভিলেনের পরিসর আমাদের এতোটা সীমাবদ্ধ? খুন, ক্ষমতা, ক্ষমতার রাজনীতি, টাকার পাহাড় গড়া, অবৈধ ব্যবসা, ধর্ষণ এগুলো পাবেন ভিলেনের আগ্রহের জায়গা, নিজেকে প্রদর্শনের পরিসর। আমি জনপ্রিয় ছবিগুলোর কথা বলছি। খেয়াল করে দেখবেন, বাস্তবে ঘটেছে এমন কাহিনি নিয়ে আমাদের মুভি অনেক কম, যদি থেকেও থাকে সেক্ষেত্রে সেগুলোর বাস্তবতা অনেক মশলাদার। অনেকেই বলেন, এর কারণ আমাদের প্রতিষ্ঠান নাই, প্রযুক্তি নাই, কিংবা অবকাঠামো নাই, ভালো সিনেমা ঘর নাই।

 

কেউ কেউ বলেন, আমাদের দেশে সিনেমার ব্যবসা নাই। কিন্তু কথাগুলো কি সত্যি? নাকি আমাদের চিন্তাকাঠামোতে সমস্যা, দেখার ভঙ্গিতে রয়েছে এক দরিদ্রতা? যেমন, আমরা কি হলিউড, বলিউড কিংবা দক্ষিণ ভারতীয় জনপ্রিয় সিনেমা দেখি না। দেখে কি মনে হয়, বাস্তব ঘটনাকে কেন্দ্র করে জনপ্রিয় ছবি বানানো যায় না? ধরেন, বলিউডে কিংবা দক্ষিণ ভারতীয় সিনেমায় এখন শত শত ছবি হচ্ছে মিলিটারি কিংবা পুলিশের বিভিন্ন অপারেশন নিয়ে, আছে সি আই ডি কিংবা রো এর উপর তৈরি বিভিন্ন ছবি। রয়েছে খেলা নিয়ে ছবি, জীবনভিত্তিক ছবি কিংবা সামাজিকবার্তাপূর্ণ ছবি।

 

এদিক থেকে চিন্তা করে আমার কাছে মনে হয়েছে আমাদের সিনেমা পিছিয়ে যাওয়ার কারণ হচ্ছে অনেক বেশি স্ট্রাকচারাল বা চিন্তা-কাঠামোগত। আমাদের অধিকাংশ ছবির খলনায়ক/প্রতিনায়ক অনেক পুরাতন, বাস্তবতা বিচ্ছিন্ন এবং ছোট পরিসরের মানুষ। তারা সমাজের বাস্তবতাকে ফুটিয়ে তোলে না বরং নিজেরা অতিরিক্ত অমানুষ কিংবা ভাঁড় হিসেবে দেখা দেয়। পাতি নেতা, পুলিশ ছাড়া আমাদের আরো কিছু ভিলেন আছে যেমন পাকিস্তানি শাসক, রাজাকার, জঙ্গি-সন্ত্রাসী কিংবা যৌন নিপীড়ক। এরাই হচ্ছে আমাদের নিয়মিত ভিলেন যাদেরকে আমাদের সিনেমায় খুব খারাপ হিসেবে দেখানো হয়। এটা সত্য এরা আমাদের সমাজের খলনায়ক কিন্তু খেয়াল করলেই বুঝবেন এদের সময় হয়তো অতীত অথবা পরিসর অনেক ছোট। তাই এখন প্রশ্ন জাগে, শুধু এরাই কি আমাদের সমাজের ভিলেন কিংবা এরা কি একেবারেই বিচ্ছিন্নভাবে কাজ করে?

 

মানে আমাদের সিনেমায় কিন্তু জাতীয় নেতা কিংবা দেশের মন্ত্রী পর্যায়ের কাউকে প্রতীক ধরে বানানো হয়েছে বলেও মনে হয় না। এর মানে হতে পারে উপস্থাপিতরা ছাড়া বাকিরা সবাই নায়ক, তাই না? উদাহরণ হিসেবে বলছি, আমাদের কি ৭৫ নিয়ে মুভি আছে? ৯০ নিয়ে আছে? কিংবা দেশের ক্ষমতার পালাবদল নিয়ে কোনো মুভি আছে? শিক্ষাক্ষেত্রে ব্যাপক বাণিজ্য ও দুর্নীতি নিয়ে ছবি হয়েছে? বড় বড় খুন, হত্যা, রাহাজানি, জাতীয় স্ক্যাম নিয়ে মুভি হয়েছে? কিংবা ক্রিকেট নিয়ে? নারী ফুটবল দল নিয়ে? মনে হয় না পাবেন। কেন নয় ?

 

বলতে পারেন খলনায়ক নিয়ে কেন কথা বলছি। কারণ সহজ, সিনেমায় খলনায়ক শক্ত এবং দেশ ও সমাজের জন্য ক্ষতিকর এরকম কেউ না হলে আমাদের নায়কের চেষ্টা ও বিজয় মার খেয়ে যায়। তাই বলতে চাচ্ছি সিনেমায় দেশ ও সমাজের শত্রু বলে যাদের দেখানো হয় এক্ষেত্রে চরম অনীহা ও অজ্ঞতা দেখা যায়। জাতীয় অর্থনীতি, রাজনীতি কিংবা জাতীয় নিরাপত্তাকে  হুমকিতে ফেলতে পারে এমন কাউকে খলনায়কের চরিত্রে দেখি না। তাই নায়ক সমাজ ও দেশের প্রতিনিধি হয়ে উঠতে পারে না।

আপন বাস্তবতা, চলমান ইতিহাস, নিজের গল্প থেকে সরে গিয়ে ভিন্ন, বিচ্ছিন্ন ভিলেন/প্রতিনায়ক উপস্থাপনের ফাঁদে পড়েছে আমাদের জনপ্রিয় সিনেমা এবং তথাকথিত ভালো সিনেমা।

শুধু তাই নয়, আমাদের যে নায়ক কিংবা খলনায়ক তারা শ্রেণির প্রতিনিধিও হতে পারে না। কারণ ছবিতে কাহিনি উচ্চবিত্তের, দুই ব্যক্তির প্রেম কিংবা প্রতিশোধের নেশা, তাদের ভেতরে প্রতিযোগিতা কিংবা দুই পরিবারের লড়াই এগুলোই দেখানো হয়। একটু থাকালেই দেখতে পারেন, যাদের কাহিনি দেখানো হয় তারা এখন আর বাংলাদেশের সিনেমা দেখে না এবং একারণে আমাদের সিনেমা ঘরের সংখ্যা জ্যামিতিক হারে কমছে। আর যারা দেখে তারা নিছক রগরগে বিনোদনের জন্যই দেখে, কিছুই নিতে চায় না, নিতে আসে না, নেয়ার দরকার নেই। কিংবা নেয়ার মত কিছু নাই। তার সমাজের ভিলেন এই লোক না, তার সমাজের ভিলেন আরো ব্যাপক, আরো শক্তিশালী।

 

এখন আসেন, আমরা যারা বাংলাদেশের সিনেমা দেখি, (যদি দেখে থাকি) তাহলে সিনেমায় কী দেখি এবং কেন দেখি? আবার কিছু শিক্ষিত গুণীজন ছবি বানান সেটা আবার কয়েক হাজার/ লাখ শিক্ষিত মানুষের জন্য, তাও বিশেষ পরিসরে দেখানো হয় যেমন, বিশ্ববিদ্যালয়ের মিলনায়তন। এই ছবিগুলোতে আবার ইনিয়েবিনিয়ে উত্তরাধুনিক কায়দায় অতি ছোট্ট এক বিষয়কে কেন্দ্র করে গল্পটি বলা হয়। সেখানে স্থান, পরিসর, সময় ও চরিত্রগুলো অনেক বেশি ব্যক্তিকেন্দ্রিক এবং নিজেকে নিয়ে মহাসংকটে আছে। কাজেই এই ঘরানার সিনেমা দেখে তা থেকে বার্তা কিংবা প্রাসঙ্গিকতা বের করা দর্শকদের জন্য রীতিমত পাঠাগারে হাজার পাতা পড়ে গবেষণা করার মত। কয়েকশ কিংবা কয়েক হাজার দর্শক দেখে, প্রশংসা করে কিন্তু তা দিয়ে ব্যবসা হয় না, যেহেতু এতটা জনপ্রিয় হয় না।

 

অন্যদিকে, সিনেমা ঘরে যে ছবি দেখানো হচ্ছে সেগুলোতে না আছে গল্প, না আছে চরিত্র, না আছে কোনো প্রেক্ষাপট। যা আছে তা চুরি করা, ধার করা এবং সমাজের বিশেষ শ্রেণির নির্ভেজাল বিনোদনের জন্য তৈরি করা হয়েছে, যারা সমাজের চাপায় পড়ে সব সময় মরছে বলে সিনেমা ঘরে গিয়ে সে এই চাপা সমাজের বাস্তব চিত্র দেখতে চায় না। বরং তাই দেখতে চায়, যা সে জীবনে বাস্তবে আশা করে না এই সমাজে। কাজেই দেখানো হয়, নায়কের জয় হয়, নায়ক-নায়িকার বিয়ে হয়, শ্রেণি/জাত/মত ডিঙিয়ে প্রেমের জয়  এবং সিনেমার পর্দায় উপচে পড়ছে যৌনতা। পেছনে কাজ করে পুরুষবাদী মানসিকতা, দেহবাদী ব্যবসার খায়েশ, দেখার চোখ; কেননা তারা নিজেরাই আবার সিনেমা ঘরের সিংহভাগ দর্শক। এর কারণে সকল শ্রেণি/পেশা/লিঙ্গের মানুষ সিনেমা দেখতে যায় না। এতে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে সিনেমা ঘর, চলছে না দেশের সিনেমা ব্যবসা। তাই সিনেমায় আসতে চায় না মেধাবী পেশাদার মানুষজন।

 

তাই আমার কাছে মনে হয়, আপন বাস্তবতা, চলমান ইতিহাস, নিজের গল্প থেকে সরে গিয়ে ভিন্ন, বিচ্ছিন্ন ভিলেন/প্রতিনায়ক উপস্থাপনের ফাঁদে পড়েছে আমাদের জনপ্রিয় সিনেমা এবং তথাকথিত ভালো সিনেমা। অনেকেই বলে থাকেন আমাদের সেন্সর বোর্ড অনেক সিনেমা আটকে দেয়। তার মানে দাঁড়ায়, যে সিনেমা মুক্তি পায়, সেগুলো আমাদের বিচারকদের বিবেচনায় ভালো? যদি তাই হয় আমরা এগুলো নিয়ে হাসাহাসি করি কেন? এগুলো আমাদের অনুমোদিত সরকারের কাছ থেকে স্বীকৃত। আমি মনে করি, পরিসর বড় না করে, দেশের/ সমাজের বাস্তব চিত্র না দেখানোর জন্য আমাদের সিনেমাতে দেখানো হয় এক ভাঁড় শ্রেণির ভিলেন কিংবা গুণী সিনেমাতে ক্ষুদ্র পরিসরে অতি সুক্ষ্ণ এক বার্তা দেয়া হয় যাতে সবাই ধরতে না পারে। এতে মনে হয়, ভিলেন বুঝতে পারলেই আমাদের ক্ষতি হয়ে যাবে, ধসে পড়ে যাবে আমাদের সব কিছু, সব অবকাঠামো কিংবা আমাদের মেকি মূল্যবোধ। যেহেতু সিনেমাতে কিংবা সমাজে ভিলেন চিনতে কিংবা উপস্থাপন করতে আমরা পারছি না, কাজেই আমাদের নায়কেরা ও জ্বলে উঠতে পারে না; না সিনেমা ঘরে না সমাজে। তাই ছবি, কাহিনি, নায়ক, ভিলেন সব ভাড়া করতে আনতে হয় এবং আমরা তাই করছি।দিনে দিনে হয়ে যাচ্ছি একটি শক্তিশালী ভাড়াটে জাতি হিসেবে যারা ভাড়া যায় এবং ভাড়া করে।

ওয়েব সিরিজ হচ্ছে এই সময়ে জাতির মহাকাব্য, উপন্যাসের ভিজুয়াল বিকল্প, জাতীয় গল্পের বাহক।

সাম্প্রতিক সময়ে সিনেমার জগতে শুরু হয়েছে ওয়েব সিরিজ। প্রভাব পড়েছে আমাদের সিনেমা পাড়ায়। কয়েকটি ভালো ওয়েব সিরিজও নির্মিত হয়েছে। ব্যবসাও করেছে ভালোই। যেমন, মহানগর, মরীচিকা, তাকদীর, লেডিস এণ্ড জেন্টলম্যান ইত্যাদি। কাহিনি, নির্দেশনা, গল্প-বলা, চরিত্রায়ন কিংবা অভিনয়ের গুণের কারণে পেয়েছে বেশ জনপ্রিয়তা। তবুও এখানে কথা থেকে যায়, এগুলোও আমাদের পাতি নেতা, পুলিশ এবং যৌন-নিপীড়ক এই সীমারেখা পেরিয়ে জাতীয় কিংবা বৃহৎ সমাজের গল্প হতে পারছে না। এখানে নাই প্রান্তজনের কথা। এখানে আছে শুধুমাত্র অতি অল্প কিছু মানুষের একটি শ্রেণির গল্প এবং তাদের সমস্যা। কেন এই কথা বলেছি? কারণ ওয়েব সিরিজ হচ্ছে এই সময়ে জাতির মহাকাব্য, উপন্যাসের ভিজুয়াল বিকল্প, জাতীয় গল্পের বাহক। সেক্ষেত্রে আমাদের ওয়েব সিরিজ হতে পারতো ভাষা আন্দোলন নিয়ে, ৭১ নিয়ে, সাত বীরশ্রেষ্ঠ নিয়ে, জাতীয় নেতাদের নিয়ে। সেগুলোকে বাদ দিয়ে কিংবা পেছনে ফেলে, আমরা যখন অপরাধ, খুন, অবৈধ ব্যবসা, ধর্ষণকে কেন্দ্র করে সিনেমা বানাই কিংবা ওয়েব সিরিজ তৈরি করি তখন মনে হতে পারে আমাদের গল্প মানেই হচ্ছে এগুলো। কাজেই জাতীয় ইমেজ তৈরি হয়ে একটি শ্রেণির ইমেজের উপর ভিত্তি করে।

 

কাজেই আমার কাছে এই দৈন্যদশার এক গুরুত্বপূর্ণ কারণ মনে হয়েছে আমাদের চিন্তা-কাঠামোর দরিদ্রতা। এখানে কাজই হচ্ছে মন্ত্রণালয়ের কিংবা সরকারের — যেহেতু এক সিনেমা বা ওয়েব সিরিজ অনলাইনের মাধ্যমের দেশের ভেতরে কিংবা বাইরে আমাদের প্রতিচ্ছবি হিসেবে কাজ করে। এই জায়গায় আমি আমাদের চলচ্চিত্রকে ক্রিকেট খেলার সাথে তুলনা করতে চাই। ক্রিকেটের আজকের এই উন্নতি কি কেবলই ব্যক্তি খেলোয়াড়ের উপর ছেড়ে দিলে হতো? এই উন্নতির পেছনে আছে কাঠামো, চাওয়া, আমাদের বিনিয়োগ, স্বপ্ন ও অনেক বছরের সাধনা। তাই এখন আমাদের আছে জনপ্রিয়তা, আমাদের খেলোয়াড়রা দেশে বিদেশে খেলে আয় করছে, সুনাম অর্জন করছে এবং দেশে বিনিয়োগ করছে যাতে করে ক্রিকেট আরো ভালো হয়। একই কাজ আমরা করতে পারি চলচ্চিত্রের বেলায়। আমাদের মেধাবী পরিচালক আছে, অভিনেতা আছে, আছে গল্প। আমাদের লাগবে ভালো ব্যবস্থাপনা, লাগবে বিনিয়োগ, লাগবে সদিচ্ছা। কারণ এক যুগ পরে যদি এক আয়নাবাজি হয় তাহলে আপনার এই শিল্প টিকে থাকবে না। মান পড়ে যাবে, হারিয়ে যাবে জনপ্রিয়তা, হারিয়ে যাবে সিনেমা ঘর এবং দর্শক দেখবে অন্য দেশের অন্য ভাষার চলচ্চিত্র।

1 COMMENT

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here