মসনদ-এ-রুমি ।। কিস্তি : ১৩

তেরো শতকের ফারসি ভাষার কবি জালালউদ্দিন মুহাম্মদ রুমি; পুরো নামের বদলে যাঁর নামের জন্য কেবল রুমিই চলে। রুমির কাব্যসম্ভার থেকে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ উক্তির অনুবাদ করেছেন দেবজ্যোতি ঘোষ

১২১

একবিন্দু প্রেমসুধা প্রাপ্তির আশায়

রাজা ছাড়ে তার সমস্ত রাজ্যপাট,

আর প্রেমিক আপন হৃদয়-সিন্ধু সেঁচে

হেলায় নিত্যদিন পান করে প্রেমের শরাব।

 

১২২

যখন মুখ খুলি,

ঠোঁটের গভীরে পাই তোমার উপস্থিতি,

যখন মন খুলি,

মনের গভীরে দেখি তোমার বসতি,

ধন্য আমি,

আমার গহিনে তোমার গোপন বসবাস।

 

১২৩

ভালোবাসা ব্যাখ্যাতীত,

কেবল তার স্বাদ অনুভব করা যায়,

ভালোবাসা ব্যাখ্যাতীত,

তবুও ভালোবাসাই ব্যাখ্যা করে সব।

 

১২৪

ভোরের শান্ত-শীতল স্নিগ্ধ বাতাসের মতো

তাজা আর স্বচ্ছ হতে চাও?

বা হতে চাও জ্বলন্ত সূর্যের মতো

উষ্ণ আর দীপ্তিমান?

বন্ধু, তবে আগে ভালোবাসতে শেখো।

 

১২৫

হে মূর্খ,

যদি আপন হৃদয়ের মূল্য বিচার না করলে,

দুনিয়ার তাবৎ তৈজসের মূল্য জেনে কী লাভ?

 

১২৬

জ্বলন্ত প্রদীপের চারপাশে ঘুরে মরে আলোকপতঙ্গ

আর ভালোবাসার চারপাশে ঘোরে অসহায় প্রেমিক,

পতঙ্গের মতোই জ্বলে পুড়ে নিঃশেষ হয় প্রেমিক,

আপন ভালোবাসার চিহ্ন বয়ে নিয়ে।

 

১২৭

ঈশ্বর,

অবিশ্বাসীর ভিড়েও ফোটান

রক্তরাঙ্গা লাল গোলাপ।

সুবাসে তার লেখা হয় সৃষ্টির গূঢ় রহস্য।

 

১২৮

পথপ্রদর্শক তোমার অন্তরে,

মুসাফির, ডাকো তাকে,

“নিশ্চয়ই তিনি উত্তম সাহায্যকারী”।

 

১২৯

মুসার কাছে চেওনা রাজ-ঐশ্বর্য,

আর যিশুর কাছে চেওনা শরীর-সুখ,

হৃদয়ের পবিত্র আদালতে চিত্ত রেখো স্থির।

 

১৩০

আপনি বিচ্ছিন্ন হও আপনার হতে

চাও বিমুক্ত হৃদয় পানে,

কেবল মুক্ত হৃদয় জানে সকল সৃষ্টিতত্ত্ব।

 

পড়ুন ।। কিস্তি ১২

মসনদ-এ-রুমি ।। কিস্তি : ১২

 

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here