আফগান লোককবিতার একটি আঙ্গিক লেন্দে। দুই পংক্তিতে বিন্যস্ত এই কবিতার ধারা আফগান সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের বিরাট এক অংশ। প্রধানত নারীরাই লেন্দে কবিতার স্রষ্টা ও সংরক্ষক। যুদ্ধ, প্রেম, বিচ্ছেদ, বিরহ, প্রতিবাদ লেন্দে কবিতার প্রধান বিষয়। সহজিয়ার পাঠকদের জন্য উপস্থাপন করা হলে কিছু কবিতা।
বাবা, আমাকে তুমি বেচে দিয়েছো ওই বুড়ো লোকটির কাছে।
দেখো, খোদা একদিন ধ্বংস করবে তোমার ঘর, হায়, আমি তোমার কন্যা ছিলাম!
বোনেরা যখন এক সঙ্গে বসে তখন তারা ভাইদের প্রশংসা করে।
কিন্তু ভাইরা যখন এক সঙ্গে বসে তখন তারা বোনদের অন্যদের কাছে বিক্রি করে দেয়।
তোমাকে ডাকছি। অথচ তুমি যেন পাথর।
একদিন খুঁজবে তুমি। আর দেখবে আমি চলে গেছি দূরে।
প্রেমিকের রক্ত দিয়ে আমি উল্কি আঁকবো।
সবুজ বাগানের প্রতিটি গোলাপের জন্য লজ্জা!
আমাকে জড়িয়ে নাও আত্মঘাতী বোমার ভেতর,
তবু বলো না — আমি তোমাকে চুমু খেতে পারবো না!
খোদার কসম, আমি তোমাকে চুমু খাবো,
তবু আমার কলস ঝাঁকিও না, ভিজিয়ে দিও না কামিজ।
তাহলে চলো, উরুর ভেতর উরু গেঁথে শুয়ে থাকি;
তুমি যদি চূড়ায় উঠে বসো, কথা দিচ্ছি আমি কাঁদব না!
আহ্! আমাকে অতো শক্ত করে মুচড়ে ধরো না,
যুবতী হয়ে ওঠার ভারে গত রাত থেকে জ্বলে পুড়ছে আমার স্তন।
উজ্জ্বল চাঁদ, খোদার দোহাই, ও রকম
নগ্ন আলোয় অন্ধ করে দিও না প্রিয় ও প্রিয়ার চোখ!
আমি তোমাকে চুমু খাবো ডালিম-বাগানে — হুস্!
লোকেরা ভাববে, কাঁটা গাছের জঙ্গলে আটকা পড়েছে একটা ছাগল।
খোদা যদি তোমাকে নদীতীরের ফুল করে বানাতেন!
তাহলে জল আনতে গিয়ে আমি তোমার গন্ধ নিতে পারতাম!
এমনকি জলের স্বাদও আমি নিতে পারি না;
ভয় হয় ধুয়ে যাবে আমার হৃদয়ে লেখা প্রেমিকের নাম!
রাহুল দেবংশীকে ধন্যবাদ আফগানিস্তানের এমন ধারালো লোক কবিতার সন্ধান দেয়ার জন্য। ঐখানে তালেবান জন্মিল কিভাবে!
লেন্দে কবিতার নারী কবিদের জন্য দু:খ প্রকাশ করা ছাড়া আর কিছুই করার নেই।