গীতা দাস একজন সাহিত্যিক, কলামিস্ট এবং মানবাধিকার কর্মী। নব্বইয়ের দশকে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠিত পত্রপত্রিকায় তার কলাম, প্রবন্ধ, নিবন্ধ ও ছোটগল্প নিয়মিত প্রকাশিত হয়েছে। সহজিয়ার জন্য ধারাবাহিকভাবে লিখবেন বাংলাদেশের সংখ্যালঘুর কথাসাহিত্য প্রসঙ্গে। আজ প্রকাশিত হলো কিস্তি ৮।
ত্রিপুরা নৃগোষ্ঠীর কথাসাহিত্য চর্চা
পার্বত্য চট্টগ্রামে জনসংখ্যার দিক থেকে ত্রিপুরা নৃগোষ্ঠী তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে। তাঁদের অনেকেই বাংলাদেশের শিক্ষা, সাহিত্য ও সমাজ বিষয়ক গবেষণা ও সাংস্কৃতিক জগতে প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিত্ব এবং বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চায় সম্পৃক্ত। তাঁদের নিজস্ব ভাষার নাম ককবরক। ১৯৭৯ সালে এ ভাষাকে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের সরকারি ভাষার স্বীকৃতি দেয়া হয়। ত্রিপুরা রাজ্যের সাথে পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকার ত্রিপুরাসহ অন্যান্য নৃগোষ্ঠীদের পারিবারিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক আদানপ্রদান এবং রাজনৈতিক আশ্রয়ের ইতিহাস রয়েছে। এদিক থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামের অন্যান্য নৃগোষ্ঠী থেকে ভাষা ও সাহিত্যচর্চায় ত্রিপুরা নৃগোষ্ঠীর শক্ত ভিতে অবস্থান থাকাই প্রত্যাশিত ছিল।
ত্রিপুরা নৃগোষ্ঠীর কথাসাহিত্য চর্চা নিয়ে জানুয়ারি থেকে জুন ২০২১ পর্যন্ত প্রায় ছয় মাসব্যাপী বিভিন্ন পদ্ধতি প্রয়োগ করে অনুসন্ধান সম্পন্ন করা হয়েছে। প্রথমেই এই নৃগোষ্ঠীর ভাষা ও সাহিত্যচর্চা করে, ভাষা ও সাহিত্য নিয়ে গবেষণামূলক কাজে সম্পৃক্ত এমন ব্যক্তিবর্গকে মূল তথ্য প্রদানকারী (Key Informant) হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। পরবর্তী পর্যায়ে ধাপে ধাপে তাঁদের সাথে আলোচনা পর্ব সমাপ্ত করা হয়। পার্বত্য চট্টগ্রামের নৃগোষ্ঠীদের রচিত সাহিত্য পঠনপাঠনে সম্পৃক্ত ও আগ্রহী এমন বাঙালি নৃগোষ্ঠীর ব্যক্তিবর্গের সাথেও কথোপকথনের মাধম্যে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। ত্রিপুরা নৃগোষ্ঠী রচিত সাহিত্য ও সাহিত্য পর্যালোচনা পাঠ করা হয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রামভিত্তিক বিভিন্ন সংকলন ও সাহিত্য ম্যাগাজিন পর্যালোচনা, ব্যক্তিগত সংগ্রহসহ বিভিন্ন গ্রন্থাগার থেকে তথ্য সংগ্রহ ইত্যাদিও অনুসন্ধানের অন্তর্ভুক্ত ছিল।
ত্রিপুরা নৃগোষ্ঠী বাংলাদেশে ককবরক ও বাংলা ভাষায় কবিতা চর্চা অব্যাহত রেখেছে। জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে বাংলা ভাষায় প্রবন্ধ সাহিত্যেও তাঁদের মূল্যবান অবদান রয়েছে। তবে ককবরক ভাষায় বাংলাদেশে ত্রিপুরা নৃগোষ্ঠী রচিত কথাসাহিত্যের কোনো বই পাওয়া যায়নি। ককবরক ভাষায় কথাসাহিত্য চর্চা নিয়ে প্রভাংশু ত্রিপুরার সাথে আলোচনা হয়েছে। তিনি ভাষা গবেষণায় ও সাহিত্য জগতে ত্রিপুরাদের মধ্যে একজন জাতীয় ব্যক্তিত্ব। তিনি গবেষণায় সামগ্রিক অবদানের জন্য ২০১৪ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। তিনি ত্রিপুরা ভাষা, লোক সাহিত্য ও সংস্কৃতি নিয়ে অনেক গবেষণামূলক বই লিখেছেন এবং যুগপৎভাবে মৌলিক সাহিত্যচর্চাও করেছেন। তাঁর পর্যবেক্ষণে বাংলাদেশে ককবরক ভাষায় কথাসাহিত্য চর্চা তেমন পরিলক্ষিত হয়নি। মাতৃভাষায় কথাসাহিত্য চর্চার কোনো উল্লেখযোগ্য উদ্যোগ নেই এবং ছিল না। এ বিষয়ে মথুরা বিকাশ ত্রিপুরায় সাথে কথোপকথন হয়েছে। তিনি মাতৃভাষাভিত্তিক বহুভাষিক শিক্ষাসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে গবেষণায় মূল্যবান ভূমিকা রাখার জন্য আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা পদকে ভূষিত হয়েছেন এবং খাগড়াছড়ি জাবারাং কল্যাণ সমিতির নির্বাহী পরিচালক। তিনি মনে করেন, বাংলাদেশে ককবরক ভাষায় গদ্য সাহিত্যচর্চা বিকশিত হয়নি। এ ভাষায় বিচ্ছিন্ন দুয়েকটি গল্প লেখা ছাড়া কথাসাহিত্যের কোন বই রচিত হয়নি।
তবে ত্রিপুরা নৃগোষ্ঠীর মধ্যে বাংলা ভাষায় কথাসাহিত্যের চর্চা আছে এবং বইও প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু তাঁদের রচিত বাংলা ভাষায় কথাসাহিত্যের বই প্রকাশ ও তা সংরক্ষণ অনুসন্ধানে এক দুঃখময় ইতিহাসের অধ্যায় পাওয়া যায়। প্রসঙ্গক্রমে বলা যায়, এ প্রবন্ধের অনেক সীমাবদ্ধতা থাকা এবং অনুসন্ধানে কোনো গ্রন্থ অনাবিষ্কৃত থাকাটা অস্বাভাবিক নয়। কারণ এ নৃগোষ্ঠীর সাহিত্য ও সংস্কৃতির সাথে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন লোকজনেরই তাঁদের সৃষ্ট কথাসাহিত্য সম্পর্কে সম্পূর্ণ চিত্র নেই। যাঁরা সাহিত্যচর্চা করেন এমন অনেকেই জানেন না ঐ নৃগোষ্ঠীর অন্যরা কে কে এবং কী কী লিখছেন।
প্রভাংশু ত্রিপুরা জানিয়েছেন, তাঁর ছোটগল্পের বই ভাগ্য বিড়ম্বনা ১৯৮১ সালে ও উত্তরের মেঘ উপন্যাস ১৯৮৬ সালে স্ব-উদ্যোগে প্রকাশিত হয়েছিল। বইগুলো ত্রিপুরা নৃগোষ্ঠী রচিত বাংলা ভাষায় যথাক্রমে প্রথম ছোটগল্প ও উপন্যাস, কিন্তু এখন দুস্প্রাপ্য। কালের গর্ভে হারিয়ে গেছে। এমনকি লেখক প্রভাংশু ত্রিপুরার কাছেও বই দুটির কোনো কপি নেই। প্রভাংশু ত্রিপুরা বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে তাঁর সাহিত্য চর্চায় অনেক লোকজনের নাম কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করেছেন। তাঁদেরকে নিজের বইয়ের সৌজন্য কপি দিতে পারেন সম্ভাবনায় তাঁদের অনেকের সাথেও যোগাযোগ করে হয়েছে। কিন্তু বই দুটির কোনো কপি সংগ্রহ করা যায়নি। ত্রিপুরা নৃগোষ্ঠীর সাহিত্য ও সংস্কৃতির পৃষ্ঠপোষকদের কাছে বিষয়টি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করার দাবি রাখা হচ্ছে।
বরেন্দ্র লাল ত্রিপুরা সংক্ষেপে লিখেন বি. এল. ত্রিপুরা। তাঁর উপন্যাসের নাম সোনালী ঊষা ধূসর গোধূলী। গতি প্রকাশনী। প্রকাশকাল ১৯৯৭। এটি ত্রিপুরা নৃগোষ্ঠী রচিত দ্বিতীয় উপন্যাস। ছয়মাস অনুসন্ধানের পর বরেন্দ্র লাল ত্রিপুরার নাম পাওয়া যায়। কিন্তু কোনো কপির অস্তিত্ব পাওয়া যাচ্ছিল না। অবশেষে লেখক নিজেই খাগড়াছড়িতে বসবাসরত তাঁর বোনের কাছে সংরক্ষিত একটি কপি পেয়ে বইটি ফটো কপি করে অনুসন্ধানে সহযোগিতা করেছেন।
ত্রিপুরা নৃগোষ্ঠী বাংলাদেশে ককবরক ও বাংলা ভাষায় কবিতা চর্চা অব্যাহত রেখেছে। জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে বাংলা ভাষায় প্রবন্ধ সাহিত্যেও তাঁদের মূল্যবান অবদান রয়েছে। তবে ককবরক ভাষায় বাংলাদেশে ত্রিপুরা নৃগোষ্ঠী রচিত কথাসাহিত্যের কোনো বই পাওয়া যায়নি।
শোভা ত্রিপুরা পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রথম ও একমাত্র নারী কথাসাহিত্যিক যাঁর ছোটগল্পের বই প্রকাশিত হয়েছে। ত্রিপুরা নৃগোষ্ঠীর মধ্যে তিনি একজন স্বনামধন্য নারী, যিনি সমাজকর্মের জন্য ২০১৭ সালে রোকেয়া পদক প্রাপ্ত। তাঁর লেখা দুটি ছোটগল্পের বই প্রকাশের তথ্য পাওয়া যায়। একটি বইয়েরর নাম স্বপ্নের ধূসর ছায়া (২০১৩) এবং অন্যটির নাম ধূসর পাহাড়ে সবুজ তারুণ্য (২০১৪)। ২০১৬ সালে গবেষণায় অবদানের জন্য একুশে পদক প্রাপ্ত স্বামী মংছেন চীং মংছিনের ২০১৯ সালে মৃত্যুর পর শোভা ত্রিপুরা কারও সাথে সাহিত্য নিয়ে কথা বলতেও অনাগ্রহী। তাঁর এক আত্মীয় শিক্ষক পিপলু রাখাইনের মাধ্যমে মহালছড়িতে শোভা ত্রিপুরা বাড়িতে গিয়ে তাঁদের পারিবারিক গ্রন্থাগারে অনেক অনুসন্ধান করা হয়, কিন্তু উল্লিখিত বই দুটির কোনো কপি পাওয়া যায়নি। পিপলু রাখাইন দোকানের এক কম্পিউটার থেকে ত্রিপুরা জাতির কিংবদন্তি শিরোনামে কয়েকটি গল্পের পান্ডুলিপি সরবরাহ করেন। এগুলোর লেখক সত্ত্বের সত্যতা নিয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি এবং গল্পগুলোতে রূপকথা ও লোককথার সাক্ষ্য স্পষ্ট। যেমন— জুয়াংফা এক বানরের এক নারীকে জোর করে বিয়ে করার কাহিনি। তাছাড়া, গল্প সংখ্যায় কম বলে পর্যালোচনার উদ্যোগ নেয়া হয়নি। গল্পগুলো হলো: জুয়াংফা, মাইসির স্বপ্ন, ইচিন্যা আর বিচিন্যা, এবং জলাই আর জলাইনি।
রাঙামাটিতে বসবাসরত শোভা ত্রিপুরার মেয়ে প্রিয়াংকা পুতুল মায়ের ছোটগল্পের বইয়ের কোনো খোঁজ দিতে পারেননি। তবে অন্যান্য কিছু বই আছে বলে জানান। অবশেষে রাঙামাটির মলয় ত্রিপুরার ব্যক্তিগত গ্রন্থাগার থেকে শোভা ত্রিপুরার দুটি ছোটগল্পের বইয়ের একটি স্বপ্নের ধুসর ছায়া এর ফটোকপি সংগ্রহ করা হয়। বইটি প্রকাশ করেছে অঙ্কুর প্রকাশনী, প্রকাশকাল ২০১৩। মলয় ত্রিপুরা নিজেদের সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিষয়ক বই নিয়ে একটি স্মারকগ্রন্থ প্রকাশের কাজ করছেন। তিনি জানালেন যে ত্রিপুরাদের মধ্যে বৈষ্ণব পদবী নামধারী খাগড়াছড়ির রামগড়ের একজন একটি উপন্যাস লিখেছেন। বিভিন্নভাবে রামগড়ে অনুসন্ধান করা হলেও কোন উপন্যাসের সন্ধান পাওয়া যায়নি। বিষয়টি অধিক অনুসন্ধানের দাবি রাখে।
অনুসন্ধানে ভুল তথ্যেরও মুখোমুখি হতে হয়েছে। ভবিষ্যত অনুসন্ধানকারীদের স্বার্থে আক্ষরিকভাবেই উদাহরণটির উল্লেখ করা হলো। অনামিকা ত্রিপুরার লেখা বন পাহাড়ের পদাবলি নামে একটা উপন্যাসের বিজ্ঞাপন দেখে বইটি কেনার পর দেখা যায় এটি কোন উপন্যাস নয়। ব্যক্তিগত জীবনের, ব্যক্তিগত সম্পর্কের, ব্যক্তিগত ভ্রমণের, পোষা কুকুর ইত্যাদি নিয়ে কিছু কথা।
অনুসন্ধান পরিচালনা করতে গিয়ে ত্রিপুরা নৃগোষ্ঠীর দ্বিতীয় ভাষায় রচিত কথাসাহিত্য অনুসন্ধানে কিছু সীমাবদ্ধতা ও প্রতিকূলতার সম্মুখীন হয়ে পরিকল্পিত কৌশলে কিছুটা পরিবর্তন আনতে হয়েছে। পরিবর্তিত পরিকল্পনায় যেকোনো লেখকের আট থেকে দশটি গল্প যেকোনো মাধ্যমে প্রকাশিত থেকে সংগ্রহ করতে পারলে তা পর্যালোচনার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। পরবর্তী কালে প্রভাংশু ত্রিপুরা বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত তাঁর বাংলা ভাষায় লেখা আটটি এবং উন্নয়ন কর্মী ও কলাম লেখক ঞ্যোহ্লা মং একটি ছোটগল্প সরবরাহ করেন। এরই ভিত্তিতে তাঁর ছোটগল্পকে পর্যালোচনার আওতাভুক্ত করা হয়। নিম্নে এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য দেয়া হলো :
ক্রম | গল্পের নাম | প্রকাশনার নাম | প্রকাশকের তথ্য | তারিখ | মন্তব্য | |
১ | খগ্রী | ওয়াকরাই | সম্পাদনা: প্রশান্ত ত্রিপুরা
প্রকাশক: নববর্ষ উদযাপন পরিষদ |
১৪ এপ্রিল, ১৯৯৫ | প্রভাংশু ত্রিপুরা বিভিন্ন পত্রিকা থেকে ফটোকপি করে তথ্যসূত্রসহ পাঠিয়েছেন।
প্রগতি সমাজ নামে সিরিজ হিসেবে তিনি ১০ থেকে ১২টি গল্প বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় লিখেছিলেন। কিন্তু একটি মাত্র গল্প লেখকের সংগ্রহে আছে। |
|
২ | বাজি | শিলালিপি: কালের কণ্ঠ | সম্পাদক: আবেদ খান | ১২ মার্চ, ২০২০ | ||
৩ | সরবত | ফুরুংনি সাল
(দ্বিতীয় সংখ্যা) |
সম্পাদনা: ধন রঞ্জন ত্রিপুরা
প্রকাশক: ত্রিপুরা স্টুডেন্ট’স ফোরাম, চট্টগ্রাম |
বৈসু, ১৪২৪ ত্রিপুরাব্দ, এপ্রিল,২০১৪ | ||
৪ | হেডম্যান দর্পণ | বৈসু | সম্পাদনা: নির্মল ত্রিপুরা
প্রকাশক: ত্রিপুরা স্টুডেন্ট’স ফোরাম, চট্টগ্রাম |
এপ্রিল,২০১৫ | ||
৫ | উত্তরাধিকার | মহামুনি | সম্পাদনা: সুচরিত মুৎসুদ্দী
প্রকাশক: মহামুনি মন্দির উন্নয়ন ও সংরক্ষণ কমিটি
|
২১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ | ||
৬ | যাত্রা পথে | এমাং (৫ম প্রকাশনা) | সম্পাদনা: অঞ্জন ত্রিপুরা
প্রকাশক: ত্রিপুরা স্টুডেন্ট’স ফোরাম, খাগড়াছড়ি |
৯ আগষ্ট, ২০১৪ | ||
৭ | প্রগতি সমাজ
( এক) |
সান্তুআ জার্নাল | সম্পাদনা: নবলেশ্বর ত্রিপুরা | ২৬ আগষ্ট, ২০১৯ | ||
৮ | বাংবার | স্মারক সংকলন | সম্পাদনা : বিপম চাকমা
পার্বত্য চট্টগ্রাম আদিবাসী লেখক ফোরাম |
৬ ডিসেম্বর, ২০১৯ | ||
৯ | আকাঙ্ক্ষিত
পর্বতের ভাষণ |
পার্বত্য চট্টগ্রাম আদিবাসী লেখক সম্মেলন
২০১৪ স্মারক সংকলন |
পার্বত্য চট্টগ্রাম আদিবাসী লেখক সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি, রাঙামাটি, পার্বত্য চট্টগ্রাম | উন্নয়ন কর্মী ও কলাম লেখক ঞ্যোহ্লা মং-এর সৌজন্যে প্রাপ্ত | ||
ত্রিপুরা নৃগোষ্ঠীর কথাসাহিত্য অনুসন্ধান করতে গিয়ে প্রতীয়মান হয়েছে যে, তাদের সাহিত্য ও সংস্কৃতি সমৃদ্ধ; নিজস্ব ভাষা রয়েছে, ভাষা নিয়ে গবেষণা করার বলিষ্ঠ উদাহরণ রয়েছে। বাংলাদেশে এ ভাষাকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য সাহিত্য সৃষ্টিও অব্যাহত রয়েছে। কিন্তু তা সংরক্ষণের জন্য আরও সচেতনতা প্রয়োজন। সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডসহ বুদ্ধিবৃত্তির চর্চা করে এমন ব্যক্তিগণের উদ্যোগও আবশ্যক। গত শতকের আশির দশকে প্রভাংশু ত্রিপুরা রচিত কথাসাহিত্যের বইসমূহ, বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত ছোটগল্পসমুহ এবং শোভা ত্রিপুরার এ শতকে রচিত বইয়ের কোন কপি না পাওয়া প্রমাণ করে তাদের নিজস্ব সাংস্কৃতিক সম্পদের প্রতি উদাসীনতা। যে কোনো সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর নিজেদের সাংস্কৃতিক পরিচয়কে প্রতিষ্ঠা করার জন্য প্রয়োজন সুদৃঢ় আন্তঃব্যক্তিক যোগাযোগ রক্ষা করা, নিয়মিত সাংগঠনিক কার্যক্রম ও সাহিত্যচর্চা নিয়ে সাংগঠনিক বন্ধন তৈরি করা, পারস্পরিক সম্পর্কযুক্ত বিভিন্ন সাহিত্য বিষয়ক কার্যক্রম পরিচালনা করা এবং নিজের নৃগোষ্ঠীর বাইরে তা প্রকাশ করার উদ্যোগ গ্রহণ করা। ত্রিপুরা নৃগোষ্ঠীর মধ্যে এর ঘাটতি অনুভূত হয়েছে।
(চলবে। পরবর্তী পর্ব প্রভাংশু ত্রিপুরা রচিত কথাসাহিত্য পর্যালোচনা)
পড়ুন ।। কিস্তি : ৭