বাংলাদেশে সংখ্যালঘুর কথাসাহিত্য ।। কিস্তি : ৬

গীতা দাস একজন সাহিত্যিক, কলামিস্ট এবং মানবাধিকার কর্মী। নব্বইয়ের দশকে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠিত পত্রপত্রিকায় তার কলাম, প্রবন্ধ, নিবন্ধ ও ছোটগল্প নিয়মিত প্রকাশিত হয়েছে। সহজিয়ার জন্য ধারাবাহিকভাবে লিখবেন বাংলাদেশের সংখ্যালঘুর কথাসাহিত্য প্রসঙ্গে। আজ প্রকাশিত হলো কিস্তি ৬

 

চাকমা নৃগোষ্ঠীর রচিত বাংলা উপন্যাস-২

এ পর্বে চাকমা নৃগোষ্ঠীর রচিত বাংলা ভাষায় বিপম চাকমার গ্রহণ লাগা ভোর উপন্যাস নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে এবং এ উপন্যাস রচনার মাধ্যমে চাকমাভাষীদের মধ্যে বাংলা ভাষায় প্রথম সার্থক উপন্যাস লেখার দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান হয়েছে।

 

বিপম চাকমা তাঁর গ্রহণ লাগা ভোর উপন্যাসের পটভূমি বেছে নিয়েছেন বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে মহৎ বিষয়, বৃহৎ পরিসর মুক্তিযুদ্ধকে এবং কাহিনির বিন্যাস করেছেন এ মুক্তিযুদ্ধে পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন নৃগোষ্ঠীর (বাঙালিসহ) ভূমিকা, ধারণা, চিন্তা, চেতনা, ত্যাগ ও ভোগান্তিকে কেন্দ্র করে।

 

এটি একটি ইতিহাসনির্ভর উপন্যাস। তবে শুধু মাত্র কথাসাহিত্য পাঠক হিসেবে পড়লে এটি মুক্তিযুদ্ধকে কেন্দ্র করে লিখিত একটি উপন্যাস। কিন্তু বিশ্লেষণী দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে পড়লে দেখা যায়, এ উপন্যাসে ঐতিহাসিক অনেক তথ্যের সাথে সাধারণের জন্য অজানা কিছু তথ্যও সন্নিবেশিত হয়েছে। যেমন: রাঙ্গামাটির তৎকালীন ডেপুটি কমিশনার ও আওয়ামীলীগ নেতা আবদুর রহমান সহ অন্যান্যদের চাকমাদের মুক্তিযুদ্ধে অংশহণ করতে না দেয়া, ‘ডেপুটি কমিশনার,আবদুর রহমান সাহেবেরা বলে দিলেন, ‘চাকমারা, তোমরা চলে যাও। তোমাদের লাগবে না। তোমাদের ছাড়া দেশ স্বাধীন করতে পারব।’ (চাকমা, ২০১৮, ১২)। চাকমা রাজার পাকিস্তানের পক্ষে যোগদান, মুক্তিযুদ্ধের সময় পার্বত্য চট্টগ্রামে পাক বাহিনীর দোসর মিজো বাহিনীর উপদ্রব, স্বাধীনতা উত্তরকালে তিব্বতি বাহিনীর উপস্থিতি, অতি আবেগী মুক্তিযোদ্ধাদের ১৯৭১ সালের ২০ ডিসেম্বর পানছড়িতে সহিংসতা, বাম রাজনীতির সাথে জড়িত লোকজনকে আওয়ামীলীগ যুদ্ধে নিতে চাইতো না ইত্যাদি। পার্বত্য চট্টগ্রামে মিজো বাহিনী ও তিব্বতি বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে অনেক তথ্য ঐ এলাকার ইতিহাসে অলিখিতই রয়ে গেছে, যাদের কথা এ উপন্যাসে বর্ণিত হয়েছে।

 

উপন্যাসে কেন্দ্রীয় চরিত্র জগদীশ মুক্তিযুদ্ধের প্রথম থেকেই নিজের দেশপ্রেম নিয়ে দৃঢ় সিদ্ধান্তে অনড় ছিলেন। তবে পার্বত্য চট্টগ্রামের চাকমাসহ অন্যান্য নৃগোষ্ঠীর অনেকের মধ্যেই দোলাচল ছিল। এ দোলাচল বাঙালি অনেক মুসলমানদের মধ্যেও ছিল। চাকমা রাজার মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে অবস্থান মানে সাধারণ চাকমারা সবাই রাজার মতাদর্শ অনুসরণ করছে, এমন সরলীকরণ ইতিহাসের ভুল ব্যাখ্যা। যে ভুল ব্যাখ্যার শিকার পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন প্রান্তিক নৃগোষ্ঠীর নিরীহ জনগণ। এ ভুল ব্যাখ্যার প্রভাবে মুক্তিযোদ্ধা প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে জগদীশ কটাক্ষের শিকার হয়েছে। অবশ্য যে কটাক্ষ করেছে তার আপন চাচা এলাকার স্বীকৃত কুখ্যাত রাজাকার। ইতিহাসের এ প্রহসন স্বাধীনতা উত্তরকালেও অব্যাহত রয়েছে।

 

বিপম চাকমার গ্রহণ লাগা ভোর উপন্যাসে চরিত্রদের জীবন যাপনে লোকজ্ঞানের চর্চা একটি মৌলিক বৈশিষ্ট্য। আদিবাসী বা ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী অথবা প্রান্তিক জাতিগোষ্ঠী কিংবা সবচেয়ে অগ্রহণযোগ্য পরিচয় উপজাতি — রাজনৈতিক এ বিতর্কের অবতারণা না করেও  বলা যায়, প্রাকৃতিক সম্পদের উপর তাদের নির্ভরশীল জীবন ও জীবিকার কথা, প্রকৃতির উপাদানে যাপিত জীবনের অভিজ্ঞতা, প্রাত্যহিক জীবনের খুঁটিনাটি সাংস্কৃতিক ও সামাজিক চিত্র এ উপন্যাসে বিধৃত হয়েছে। তাদের জীবন ধারণের মূল উৎস জুম চাষ, জঙ্গলের বিভিন্ন পশু পাখি ও ছড়ার মাছ শিকার করা।

 

এ নৃগোষ্ঠীরা প্রকৃতিকে লালনপালন করতে জানে। ছোট ও ডিমওয়ালা মাছ জালে ধরা পড়লেও ছেড়ে দেয়। “জু জু মা গঙ্গা দেবী এবার এদের ছেড়ে দিলাম। এরা আমার জন্য বাচ্চা দেবে। বড় হলে এদের আমার জালেই উঠিয়ে দিস।” (চাকমা, ২০১৮, ১০)। ‘জমির পরিমাপ আড়ির হিসেব প্রচলিত,“কয় আড়ি ধান লাগিয়েছিস?” (চাকমা, ২০১৮, ১১)। ঝড়ের সময় লোক অভিজ্ঞতার পরিচয়—‘গিন্নিরা এসময় চুলোর আগুন নিভিয়ে ফেলে। যাতে বাতাসে আগুনের হলকা উড়িয়ে ঝড়ের বদলে আবার আগুনই সর্বনাশের কারণ না হয়।’ (চাকমা, ২০১৮, ১৭)। প্রকৃতি থেকে প্রাপ্ত উপাদানের ব্যবহার করার কথা এ উপন্যাসে উপস্থাপিত হয়েছে। ‘কেরোসিনের ব্যবহারটা সীমিত পর্যায়ের। অধিকাংশ বাড়িতে গর্জন তেলের প্রদীপ জ্বলে। অনেকে এতে শুয়োরের তেল মেশায়।’ (চাকমা, ২০১৮, ১৭)। বন জঙ্গলে হাঁটতে গেলে জোঁক থেকে রক্ষা পেতে কেরোসিন মাখানো এবং বড় বড় চার ফুট লম্বা প্লাস্টিকের ব্যাগ দিয়ে ছাতার বিকল্প বানানো লোক অভিজ্ঞতার প্রতিফলন ও জ্ঞানের প্রয়োগ।

 

লোকজ চিকিৎসা ব্যবস্থা ও বৈদ্য বা ওঝায় চরম বিশ্বাসের চিত্র লেখক যেন আস্থার সাথে ফুটিয়ে তুলেছেন, যা আদিবাসী জীবন যাপনের অবিচ্ছেদ্য অংশ।

  • ‘আগুনে ঘর পোড়াটা ভীষণ কোনো অলক্ষণের ইঙ্গিত। বৈদ্য বা ওঝাকে ডেকে “মাথা ধোয়া” নামক শুচি-ক্রিয়া অনুষ্ঠান করতে হবে।’ (চাকমা, ২০১৮, ১৭)
  • ‘তারপর একটা কাস্তের আগার সূচালো অংশ আগুনে পুড়ে লাল টকটকে করে ছ্যাট ছ্যাট করে ফোলা জায়গায় খুঁটে দিল। টোটকা চিকিৎসা ম্যাজিকের মতো কাজ করল।’(চাকমা, ২০১৮, ৩১)
  • ‘হাড়-ভাঙা চিকিৎসায় ডাক্তারের চেয়ে বৈদ্যের ভেষজ চিকিৎসাতেই জগদীশের আস্থা বেশি।’ (চাকমা, ২০১৮, ৭৩)

 

লেখক গ্রহণ লাগা ভোর বইটি উৎসর্গ করেছেন—

‘মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়া সেইসব বীরযোদ্ধা, যাদের হাতে অস্ত্র ছিল না, যাদের কথা ইতিহাসে লেখা নেই এবং যাদেরকে কেউ কোনোদিন স্মরণও করবে না। কিন্তু তারা বীর ছিল।’

লেখকের যে বলয়ে বসবাস সেখানকার মানুষের ত্যাগের স্পর্শে স্পন্দিত, দেহের ও হৃদয়ের রক্তঝরার অভিজ্ঞাতা প্রসূত ব্যথা এ উৎসর্গে।  ইতিহাসে অনুল্লেখিত এবং মুক্তিযোদ্ধার জন্য স্বীকৃত বৈশিষ্ট্যের বৃত্তের বাইরে কিছু ত্যাগী, কিন্তু রাষ্ট্র কর্তৃক অস্বীকৃত মানুষের কথা এ উৎসর্গে স্থান পেয়েছে। বিপম চাকমার উৎসর্গ পত্রের সাথে সতীনাথ ভাদুড়ীর জাগরী  উপন্যাসের উৎসর্গের মিল রয়েছে।

যে সকল অখ্যাতনামা রাজনৈতিক কর্মীর কর্মনিষ্ঠা ও স্বার্থত্যাগের বিবরণ, জাতীয় ইতিহাসে কোনোদিনই লিখিত হইবে না, তাঁহাদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে —

অর্থাৎ গ্রহণ লাগা ভোরও সেই চিরন্তনদের ইতিহাস— যাদের ত্যাগের ইতিকথা অস্বীকৃত ও অলিখিত রয়েছে, তাদের কথা মনে করিয়ে দেয়ার ব্রত নিয়ে লেখা  হয়েছে এ উপন্যাস। উপন্যাসটিতে মোট তেরটি পরিচ্ছেদ এবং প্রত্যেকটির একটি করে নাম রয়েছে। নামগুলো হলো— প্রত্যাখ্যান, ফাগুন হাওয়া, বণিক পরিবার, বিজু এল বিজু গেল, পিনোন-হাদি, পাহাড় মাঝি, মুক্তিপণ, যুদ্ধ যাত্রা, রাজাকারের ঘ্রাণ, শৈশবের আইসক্রিম, যমের সাথে তৃতীয় সাক্ষাৎ, বিজয়-উল্লাস, গ্রহণ লাগা ভোর। শেষ পরিচ্ছেদের নামে বইটির নামকরণ। একদিকে দেশ স্বাধীন হওয়ার সূর্য উদিত হচ্ছে। অন্যদিকে স্বাধীনতার ভোরেই পাহাড়ে শুরু হয়ে গেছে রাহু ঝলমলে সূর্যকে গ্রাস করে গ্রহণ সৃষ্টি করার মতো সহিংস আচরণ। ‘তখনই রণবীর জগদীশকে দুঃসংবাদটা জানাল। দেশ স্বাধীন হওয়ার কিছু আগে এবং পরে পানছড়ির দিকে মুক্তিবাহিনীর দ্বারা ঘটে যাওয়া কিছু দুঃখজনক ঘটনার কথা।’ (চাকমা, ২০১৮, ৭৭)। এসব ঘটনা ঐতিহাসিক সত্য।

বাংলাদেশের জাতিগত সংখ্যালঘু বিপম চাকমা দ্বিতীয় ভাষা বাংলায় রচিত গ্রহণ লাগা ভোর  উপন্যাসে মুক্তিযুদ্ধে পার্বত্য চট্টগ্রামের সংখ্যালঘু নৃগোষ্ঠীর ভূমিকা চিত্রায়ণের পাশাপাশি এর ভৌগোলিক বলয়ের বাইরে অবস্থিত সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠীর সামনে নিজস্ব সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্যকে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন।

ঔপন্যাসিক স্বাধীনতার পরপরই মার্চ মাসের প্রথম দিকে এক মাঝরাতের উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র মুক্তিযোদ্ধা জগদীশের বাড়িতে ডাকাতির ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন। এ ডাকাতি শুধু আক্ষরিক অর্থের ডাকাতি নয়। পার্বত্য চট্টগ্রামের নৃগোষ্ঠীদের মুক্তিযুদ্ধের অহংকার ও ত্যাগ ইতিহাসের পাতা থেকে ডাকাতি হয়ে গেছে। মুক্তিযোদ্ধা জগদীশকে শুনতে হয়েছে— ‘চোদানির পুত, রাজাকারের জাত রাজাকার ইগিন মনত রাখিস। নইলে এরপরে আইলে গরম ভাতর ডেকসিত মুখ চুবাই দিয়ুম। ভাতর থালা মেলা মারচ।’ (চাকমা, ২০১৮, ৭৯) ‘ভাতর থালা মেলা মারচ’ বাক্যটি দিয়েই বুঝা যায় তা মুক্তিযোদ্ধা প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে ঘটে যাওয়া জগদীশের এক রাজাকারের ভাতিজার দিকে ভাতের থালা নিক্ষেপ করার ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিহিংসার প্রতিফলন। এ প্রতিহিংসার প্রতিবাদ ও প্রতিশোধের আগুনসহ অন্যান্য কারণে পরবর্তী সময়ে পাহাড় জ্বলেছে ও পুড়েছে।

 

উপন্যাসের শুরুতেই অনিরুদ্ধের মায়ের চরিত্রের উপভোগ্য একটা বর্ণনা পাওয়া যায়। ‘অনিরুদ্ধ দেখেছে তার মায়ের রসিকতা ছলে ঠাট্টা করার আঁকশি থেকে কেউ কখনো ছুটে পালাতে পারে না।’ (চাকমা, ২০১৮, 8) কিন্তু একটি ঘটনার পর এ নারী চরিত্রটির আর কোন উল্লেখ উপন্যাসে নেই, এমনকি উল্লেখযোগ্য অন্য কোন নারী চরিত্রই নেই এ উপন্যাসে। মুক্তিযুদ্ধের সময় জগদীশদের বাড়িতে সাময়িকভাবে আশ্রয় নেয়া বাঙালি হিন্দু পরিবারের মেয়ে ‘অরুণিমাকে দেখে জগদীশের মনে ফাগুন হাওয়া বয়ে গেল এটাই সত্য।’ (চাকমা, ২০১৮, ১৫) কথা কম বলতে অভ্যস্ত জগদীশ প্রেমিকা অরুনিমার কাছে একদিনই প্রগলভ হয়। জগদীশ ও অরুণিমার মধ্যে প্রেমিক প্রেমিকা সুলভ কিছু ঘটনার চিত্র উপন্যাসে থাকলেও নারী চরিত্র হিসেবে মূল কাহিনিতে অরুণিমার উল্লেখযোগ্য কোন ভূমিকা নেই।

 

রত্তন কাকা গ্রামে ফাত্তো রত্তন মানে ভবঘুরে রত্তন হিসেবে পরিচিত। কিছুদিন ভবঘুরের যাপিত জীবন অর্থাৎ উদাসী পর্ব কাটিয়ে সংসারের কাজে ডুবে থাকেন যাকে লেখক ধ্যান পর্ব বলেছেন। ধ্যান পর্বে চলাকালীন তিনি অচলায়তন। ‘ধ্যান পর্ব চললে তাকে ঠেলেও ওঠানো যাবে না।’ (চাকমা, ২০১৮, 8৭) রত্তন কাকাকে উপন্যাসিক পাহাড়-মাঝি বলে চিত্রিত করেছেন। ধ্যান পর্ব চলাকালীন রত্তন কাকাকে ঠেলেও না ওঠানোর মধ্যেই তার পাহাড়ের চারিত্র্যিক বৈশিষ্ট্য প্রতিভাত হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের সময় অসহায় মানুষকে অচেনা জন বিরল সংকুল পাহাড়ের বন জঙ্গলের ভেতর নিরাপদে সীমান্ত পাড়ি দিতে পাহাড়-মাঝির কর্তব্য পালন করেছেন। পাহাড়-মাঝির এ ভূমিকাকে মুক্তিযোদ্ধাই বলা যায়। রত্তন কাকার জীবনকে উদাসী পর্ব ও ধ্যান পর্বে ভাগ করে সমাজে বিরল চরিত্র হিসেবে দেখালেও তিনি যে আর দশটা স্বাভাবিক সামাজিক মানুষের মতোই আচার আচরণের চর্চা করেন তা একটা ঘটনায়ই বুঝা যায় এবং যাতে লেখকের সামাজিক মানুষ পর্যবেক্ষণের সক্ষমতারই প্রমাণ মেলে।

 

রতন কাকা একবার দলবল নিয়ে পাহাড়ি বাঁশ বনের ভেতর দিয়ে যাওয়ার সময় এক রাজ গোখরোর সামনে পড়ে। তিনি সাপটাকে দ্বিখন্ডিত করে সাথে নিয়ে নেয় দলবল নিয়ে রাতের আশ্রয়দাতার জন্য। উপাদেয় মাংস। কিন্তু আট – দশ সের ওজনের সাপ কাঁধে নিয়ে সামনে থেকে জঙ্গল পরিস্কার করা কষ্টকর বলে একজনকে তা নিতে বলাতে বাঙালি নৃগোষ্ঠীরা তখন – ‘সবাই বলতে থাকে ‘ফেলে দেন ফেলে দেন।’ তারা ভয়ের চেয়ে সংস্কারে বেশি জর্জরিত। এদের অবস্থা দেখে রত্তন কাকার একটু রোখ চেপে গেল। পলায়নপর জনতাকে নিয়ে তার একটু তামাশা করতে ইচ্ছে হলো। দেখা যাক এরা কি করে। তিনি পথের ওপর বসে পড়লেন। সাপটা যদি কেউ কাঁধে তুলে নেয় তবেই তিনি হাঁটবেন, নয়তো আট-দশ সের ওজনের বোঝা কাঁধে নিয়ে চলতে পারবেন না।’ (চাকমা, ২০১৮, ৫০) সাপের মাংস দিয়ে আতিথ্যের উপহার সামাজিক রীতিনীতির অংশ। তার বেঁকে বসা আমাদের আশেপাশের সাধারণ সাদাসিধে মানুষের ব্যবহারেরই পরিচয় পাওয়া যায়। আর এসব সাধারণ সাদাসিধে মানুষের অবদানেই বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ মহিমান্বিত। অন্যদিকে, রাজ গোখরোর মাংস খাওয়া প্রসঙ্গ টেনে উপন্যাসিক অরণ্যচারী নৃগোষ্ঠীদের খাদ্য সংস্কৃতি নিয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ বাঙালি সমাজের ট্যাবুর বিষয়টি উপস্থাপন করেছেন। রাজ গোখরোর মাংসকে যে কোন পশুপাখির মাংসের মতোই স্বাভাবিক খাদ্য হিসেবে বিবেচনা করে বাঙালি সমাজকে ট্যাবু থেকে বের হয়ে আসার ইঙ্গিত দিয়েছেন।

 

জগদীশ এ উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র। উপন্যাসটির প্রথমেই ‘প্রত্যাখ্যানের কাঁটা এমনভাবে খোঁচাতে থাকে যে মনে হয় মরে না যাওয়া পর্যন্ত এ থেকে মুক্তির আর কোন উপায় নেই। কালের প্রবাহে এর প্রভাব হয়ত কমে, কিন্তু না কমা পর্যন্ত তার কাছে বিষয়টা অসহ্য মনে হয়। স্বপ্নে, জাগরণে, উঠতে, বসতে, নির্জনে এমন কি হৈ-হল্লার সময়ও মনের ভেতরে বারবার উঁকি দেয়।’ (চাকমা, ২০১৮, 8৭) এ উঁকি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করতে না দেয়ার অপমানের জ্বালা। অবশ্য মুক্তিযুদ্ধ করে দেশ মুক্ত করলেও সংখ্যালঘু নৃগোষ্ঠীর জগদীশরা আজও মুক্তি পায়নি। উপন্যাসের শেষ পৃষ্ঠায়— ‘ইত্তুগি মায়ের, দেবরকে দেখে একটু ঠাট্টা করতে ইচ্ছে হলো। সে বলল, ‘কি ভাই, মুখ কালা কেন? দেখে তো মনে হচ্ছে এই ভোরবেলা সূর্যের গ্রহণ লেগেছে।’ (চাকমা, ২০১৮, ৮০)

 

উপন্যাসের প্রথমে ও শেষ পৃষ্ঠার বর্ণনা পার্বত্য চট্টগ্রামের জগদীশদের তথা প্রান্তিক নৃগোষ্ঠীসমূহের অবস্থা, অবস্থান এবং ইতিহাসের বয়ান। উপন্যাসের প্রথমেই মুক্তিযুদ্ধের শুরুতেই বিভিন্ন প্রান্তিক নৃগোষ্ঠীর প্রতি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির বৈরী মনোভাব এবং  মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেয়ার অনুমোদন না দেয়া ; অবশেষে এ নৃগোষ্ঠীরা স্বাধীন দেশে আবার পরাধীন হয়। নিজদেশে পরবাসীর মতো ভয়াবহ আচরণ পায়। বিজয়ের প্রাক্কালেই পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন নৃগোষ্ঠীর উপর নেমে আসে সহিংসতা। ভোরের আলোতেই গ্রহণ লাগে। এ গ্রহণের উদাহরণের মধ্যেই এ উপন্যাসের সমাপ্তি।

 

জগদীশ শিক্ষিত হলেও মাছ ধরা, জুমের অভিজ্ঞতাসহ পাহাড়ের যাপিত জীবনের সব ধরণের কাজেই অভ্যস্ত। অলৌকিক নায়োকোচিত, সমাজ বহির্ভূত, অতিরঞ্জিত কোন আচরণ নয়, এ যেন আমাদের ঘরেরই কোন ছেলে। যার ‘পেটে দুটো দানা পড়তেই জগদীশের চলে এসেছিল ঘুম।’ (চাকমা, ২০১৮, ৫২)। সে কোন ধৈর্যশীল মহামানব নয়। ‘জাত নিয়ে টানাটানি শুরু হওয়ায় জগদীশ আর ধরে রাখতে পারল না। গরম ভাতের থালাটা, নিজে তার চেয়ে দ্বিগুণ গরম হয়ে সাইফুলের মুখে ছুঁড়ে দিল।’ (চাকমা, ২০১৮, ৬২)

 

মুক্তিযোদ্ধা হলেও সে অপারেশনের দায়িত্ব পেয়ে চিরন্তন শাশ্বত মানব চরিত্রের মতো মৃত্যু ভয়ে ভীত। ‘আজকেই কি তার জীবনের শেষ দিন? দেশ স্বাধীন হবে আর সে বেঁচে থাকবে না। এটা ভাবতেই তার ভেতরের আমিটা যেন হাহাকার করে উঠল। জীবনের প্রতি অপরিসীম মায়া এবং বেঁচে থাকার চিরন্তন আকুতি তার মধ্যে স্বার্থপরতার এক বিস্ফোরণ ঘটিয়ে দিল।’ (চাকমা, ২০১৮, ৭২) এখানে উপন্যাসিক কল্পনায় আশ্রয় না নিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রাণ বিসর্জনকে মানবিকতা দান করেছেন; বায়বীয় বিষয় থেকে বাস্তবতার ও সত্যের মুখোমুখী দাঁড় করিয়ে তাদের দেশপ্রেমকে সমুজ্জ্বল করেছেন।

 

চাকমা ছেলেদের রাজাকারের বাড়ি পাহারার চাকরি নিয়ে স্বদেশের পক্ষে জগদীশের বক্তব্য স্পষ্ট। ‘নিজের ঘর পোড়া দিয়ে সেই আগুনে গোলার ধান ভেজে খই বানিয়ে খাওয়া কি বুদ্ধিমানের কাজ?’ (চাকমা, ২০১৮, ৩৯) জগদীশরা অনেক সময় “চায়না বুদ্ধিষ্ট” (চাকমা, ২০১৮, ২৩) পরিচয় দিয়ে পাক বাহিনীর হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে। এখানে বাঙালিদের সাথে চাকমাদের নৃতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্যের পার্থক্য স্পষ্টভাবে চিত্রায়িত। রামায়ণ থেকে রাজাকারি করার তুলনা করে উদাহরণ- ‘কাজ নেই বলেই কি গ্রামের সব খবর রাজাকারের কানে তুলেছিলি? বিভীষণগিরি করাও তো একটা কাজ, তাই না?’  (চাকমা, ২০১৮, ৩৮) কোরান শরীফ ও ঠাকুর পূজার উপকরণ- ‘কারো ঝোলায় ঠাকুরের মূর্তি, শঙ্খ, সিঁদুর, চন্দন, কারো ঝোলায় কোরান শরিফ, ব্যাটারি, টর্চলাইট, হাবিজাবি ইত্যাদি।’ (চাকমা, ২০১৮, ৫১) এসবের উল্লেখ বৃহত্তর পরিসরকে একটা ক্যানভাসে নিয়ে আসার প্রয়াস এবং লেখকের ধর্মনিরপেক্ষ মানসিকতার পরিচয়ও প্রকাশ পেয়েছে।

 

গ্রহণ লাগা ভোর উপন্যাসে বিপম চাকমা কথোপকথনে তিন ধরণের ভাষা ব্যবহার করেছেন – প্রমিত বাংলা, চট্টগ্রাম অঞ্চলের ভাষা ও চাকমা ভাষা। চাকমা কথোপকথন খুবই কম এবং চাকমা কথোপকথনের সাথে বন্ধনীতে প্রমিত বাংলা লিখে দিয়েছেন যাতে পাঠকের বুঝতে সুবিধা হয়। যেমন: ‘থিক কোইয়োচ বোন, দোলরে ভিলে দেবেদায়ও পুজোন। (ঠিক বলেছিস বোন, সুন্দরকে দেবতায়ও পূজা করে।)’ (চাকমা, ২০১৮, ২০)

 

চাকমা জীবন যাপনের সাথে অবিচ্ছেদ্য অনেক শব্দের টীকা দেয়া আছে। যেমন: ইজোর, ফিয়োঙ ,মদগরা, তিন পুর, পাজন, জগরা। কিন্তু আরও অনেক শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে যার টীকা নেই, কিন্ত বাক্যে এর অর্থ সুস্পষ্ট।  ধারাবাহিকভাবে ও সময়ের বহমানতায় এসব শব্দ বাংলা ভাষায় নিজের স্থান করে নিবে বলেই প্রতীয়মান হয়। উদাহণস্বরূপবলা যায় পিনোন-হাদি, রেঙ, হভং, কোত্তি ইত্যাদি শব্দ।

 

গ্রহণ লাগা ভোর উপন্যাসের নামটিই আলংকারিক। উপন্যাসের বিভিন্ন আখ্যানে রয়েছে বিভিন্ন উপমা, উৎপ্রেক্ষা, রূপক, চিত্রকল্প, সমাসোক্তি ইত্যাদি অলংকারের সার্থক ব্যবহার। এ লেখা যে দ্বিতীয় ভাষা হিসেবে লেখা তা পাঠকের মনে ঘুণাক্ষরেও ঠাঁই পায় না। নিম্নে কিছু উদাহরণ দেয়া হলো:

  • ‘মাছেরা শীতের আবাস ছেড়ে বের হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে মাত্র। বর্ষার আগমনে যখন চারদিকে মেঘের সংঘর্ষে দিগন্ত ছিঁড়ে বিদ্যুতের ঝলক ছুটবে, বজ্রের বিকট চিৎকার পানিতে কাঁপন ধরাবে, পাহাড়ি ছড়াতে জলের প্রবল স্রোতের সৃষ্টি হবে তখনই মাছের হৃদয় জাগবে চাঞ্চল্য।’ (চাকমা, ২০১৮, ১০)
  • ‘গণদুর্যোগ বা গণবিপর্যয়ে মানুষ যেন দেবতা হয়ে ওঠে।’ (চাকমা, ২০১৮, ১৩)
  • ‘এ নিয়ে তিনি মানসিক যন্ত্রণায় দগ্ধ হতে হতে দিনরাত ভাঙা ডালের মতো ঝুলে থাকেন।’ (চাকমা, ২০১৮, ১৫)
  • ‘দমকা শীতল হাওয়া এসে পলকা পোকায় খাওয়া স্থাপনা আর নরম ডালপালার টিকে থাকার ক্ষমতা পরীক্ষা করে গেছে। ঝরে যাওয়া পাতাগুলো যে ধুলোকে বিশ্বাস করে আঁকড়ে ছিল সেই ধুলোবালি সমেত বেদিশা হয়ে ছোটাছুটি লাগিয়েছে।’ (চাকমা, ২০১৮, ১৭)
  • ‘কোথাও সামান্য পথ রেখা যা রাখালদের পশুপালনের দ্বারা সৃষ্ট নয়তো কোন জুমিয়া পরিবারের তিন চার মাস জুমে আসা – যাওয়ার কারণ ঘাসেদের আত্মবিসর্জন দিয়ে জায়গা ছেড়ে দেয়া।’ (চাকমা, ২০১৮, ৩০)
  • ‘জগদীশ উঠোনে বসে বসে আখক্ষেতে বেড়া দেয়ার জন্য ভাউজ্যা বাঁশ ফালি করছিল। মনের ভেতরেও তখন তার একই অবস্থা। মনের ক্ষেত রক্ষা করার কী কৌশল বাতলানো যায় তাই সে ভাবছিল।’ (চাকমা, ২০১৮, ৪১)
  • ‘কিন্তু পথের দু’পাশে দাঁড়িয়ে থাকা বনের ঝোপ-ঝাড়ের লতাপাতা, গুল্ম, বা বৃক্ষের ডাল কাছে এসে আস্তে করে ‘শরীর ছুঁয়ে দিয়ে বলে, ‘তুমি তো এ পথ ধরে আর কোনো দিন ফিরে আসবে না, একটু ছুঁয়ে দিই?’ জলসিক্ত হাত দিয়ে সে সবাইকে ছোঁয়, আশীর্বাদও করে হয়তো। এদেশের ভূমি-জলে যেন তার সাথে আবার দেখা হয়।’ (চাকমা, ২০১৮, ৫১)
  • ‘সূর্য বোধহয় কিছুক্ষণ আগে হাসতে শুরু করেছে।’ (চাকমা, ২০১৮, ৫৩)
  • ‘আকস্মিক সাইফুলের মুখে ভাতের থালা আছড়ে পড়ার দৃশ্যে তারা সবাই সাইফুলকে সাথে নিয়ে বিমূঢ়-নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়ে ডুব দিল।’ (চাকমা, ২০১৮, ৬২)
  • ‘সে বলল, ‘কি ভাই, মুখ কালা কেন? দেখে তো মনে হচ্ছে এই ভোরবেলা সূর্যের গ্রহণ লেগেছে।’’ (চাকমা, ২০১৮, ৮০)

বাংলাদেশের জাতিগত সংখ্যালঘু বিপম চাকমা দ্বিতীয় ভাষা বাংলায় রচিত গ্রহণ লাগা ভোর  উপন্যাসে মুক্তিযুদ্ধে পার্বত্য চট্টগ্রামের সংখ্যালঘু নৃগোষ্ঠীর ভূমিকা চিত্রায়ণের পাশাপাশি এর ভৌগোলিক বলয়ের বাইরে অবস্থিত সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠীর সামনে নিজস্ব সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্যকে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন। এ উপন্যাসটি বাংলাদেশের সংখ্যালঘুর কথাসাহিত্যের গণ্ডি অতিক্রম করে বাংলাদেশের কথাসাহিত্যের মূলস্রোতে বিচরণের দাবি রাখে। তাঁর মাতৃভাষা চাকমা বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় ভাষা বাংলার সমমর্যাদায় অধিষ্ঠিত থাকলে তিনি দ্বিতীয় ভাষা বাংলায় সাহিত্য সৃষ্টি করতেন কি না তা প্রশ্ন সাপেক্ষ বিষয়। এখানেই জাতিগত সংখ্যালঘু ও ভাষাগত সংখ্যালঘু জীবনের ট্র্যাজেডি।

 

যে কোনো সাহিত্য ব্যক্তি কর্তৃক সৃষ্ট হলেও তা সাহিত্যিকের স্বভাষী, স্বজাতি  ও স্বদেশের সম্পদ। সুতরাং, গ্রহণ লাগা ভোর  বাংলা কথাসাহিত্যের ভাণ্ডার সমৃদ্ধ করলেও এর বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদের অংশীদারিত্ব চাকমা নৃগোষ্ঠীও। সুতরাং, বিপম চাকমার সৃষ্ট সাহিত্য চাকমা ভাষায় অনুবাদ করে সাহিত্য সম্পদের জাতিগত অংশীদারিত্ব নিশ্চিত করা প্রয়োজন। এটাও সর্বজন দ্বারা সর্বকালে সর্বত্র স্বীকৃত যে ভাষা বিকাশে সাহিত্য চর্চা প্রয়োজন এবং সাহিত্য সৃষ্টি ছাড়া ভাষা জনবিচ্ছিন্ন কিছু জ্ঞানের সমাহার। চাকমা ভাষা ও সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করতেও এ উপন্যাস চাকমা ভাষায় অনুদিত হওয়া প্রয়োজন। এ দায়বদ্ধতা শুধু উপন্যাসিকের ব্যক্তিগত নয়, বিভিন্ন আদিবাসী সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিষয়ক সংগঠনের, সরকারি সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের ও পার্বত্য চট্টগ্রামের স্বায়ত্বশাসিত দপ্তরেরও।

 

এ পর্বের মাধ্যমেই শেষ হলো বাংলাদেশের চাকমাভাষী নৃগোষ্ঠীর দ্বিতীয় ভাষা বাংলায় রচিত কথা সাহিত্য পর্যালোচনা।

 

(চলবে। পরবর্তী পর্ব – মারমাভাষী রচিত কথাসাহিত্য নিয়ে আলোচনা)

 

তথ্যসূত্র

চাকমা, বিপম। ২০১৮। গ্রহণ লাগা ভোর, ঢাকা: বেহুলাবাংলা

ভাদুড়ী, সতীনাথ। বৈশাখ ১৩৬২। জাগরী, কলিকাতা-১২: বেঙ্গল পাবলিশার্স

আগের লেখাআসুন মাসিক নিয়ে কথা বলি
পরের লেখামসনদ-এ-রুমি ।। কিস্তি : ১০
গীতা দাস
গীতা দাসের জন্ম নরসিংদী জেলার সদর উপজেলায়। তিনি একজন সাহিত্যিক, কলামিস্ট এবং মানবাধিকার কর্মী হিসেবে বাংলাদেশের নারী আন্দোলনের সাথে সরাসরি যুক্ত। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় থেকেই লেখালেখি করছেন। নব্বইয়ের দশকে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠিত পত্রপত্রিকায় তার কলাম, প্রবন্ধ, নিবন্ধ ও ছোটগল্প নিয়মিত প্রকাশিত হয়েছে। তাছাড়াও অনলাইনে পরিচালিত বিভিন্ন পত্রিকায় নিয়মিত লিখছেন। সাহিত্যচর্চার পাশাপাশি সাহিত্য বিষয়ক অনুসন্ধান ও সাহিত্য সমালোচনা তার নিয়মিত আগ্রহের বিষয়।

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here