জহির খানের কবিতা

New Planet, 1921 by Konstantin Yuon

ফানুস উৎসব থেকে বলছি

শাদা কালো ফ্রেমে আমরা পাতাদের গান করি
দেখি শৈশবের দৈত্যদের  বেভুল অসতর্ক প্রেম
দেখছি তুই তুমি আপনি  সময় সতর্কে কৌশল
ভাবছি পাখাঝাপটায় সম্পর্ক কতোটা অসহায়
দেখছি সোনালী ফুল রোদ বৃষ্টি হচ্ছে অনবরত
দেখি শরীরের আড়মোড়া ভাঙন গতিবিধি স্বর
শুনছি হাওয়াদের কামছলা অতীত কথার গল্পে

অতঃপর তাহারা সুখে-শান্তিতে
সহবাস বসবাস চাষবাস করছেন
প্রাগৈতিহাসিক সময় ধরে

এখন
দেখি এইসব মৃত ফানুস উৎসব অনুষ্ঠান

 

আমি তো কবিতা লিখি স্যার   

আমার নাক বরাবর ভদ্রলোক
আবহমান বাংলার নৌকায় চড়েন
বাংলায় কথা বলেন বাংলা গান করেন
উদার এক লাল সবুজের নদী হয়ে উঠেন

ঠিক পেছনে দাঁড়িয়ে আছেন যে ভদ্রলোক
উনিইতো সবুজ সোনালী ধানের চাষ করেন
লাঙলের ফলায় খুব ই মায়ার কায়ায় ফসল
ভালোলাগে- খুবই জরুরী ভালোবাসা বন্ধুগো

ডানপাশের ভদ্রলোক উনি অদৃশ্য এক শক্তি

দাড়িপাল্লা নিয়ে বণিক চেয়ারে বসে থাকেন
ভীনদেশী প্রোডাক্ট কেনাবেচা করেন- ঠকান

বামপাশের ভদ্রলোক ও দেশেই থাকেন
দেশের কথা হয় ভালোবাসেন লাল দল
রাজপথের মহান শ্রমজীবী মানুষের কথা
ভদ্রবাড়ীর কেউ কেউ রাতের অন্ধকারে
হয়ে উঠেন চায়না প্রোডাক্ট দালাল চক্ষু

ঘেন্নাপিত্তি — প্রতিবাদ মহামান্য আদালত থু

অতঃপর
কারাে গহীন বনে সুন্দরের ভাগ বসাতে চাইনি
আমি কবিতা লিখি  লিখতে হয় তাই-
বই চুরি করেছি বউ চুরি করিনি করবো ও না
কবিতাই লিখতে আসছি ছলা গল্প করতে নয়

 

দুধভাত কবিতা

কোথাও উঁচু কোথাও নিচু
স্বরে বা সুরে শালিকের ওড়াউড়ি
উড়ে অন্যরাও — প্রবল আস্থা

দূরের আকাশ দূরে রয়
দুধভাত মন্ত্র পড়ে ঋষি পাখি
গোল হয় মানুষের চিন্তা

ঘোরে অঘোর সম্পর্কে ভাটা পড়ে
ফিরে আসে রুপালি সন্ধ্যা প্রিয়তু

এখন শালিকেরা ফিরে তীরে উঠে
অন্ধকারে শালিক মানুষ বন্ধু হয়
ভেদাভেদ হয় ঝগড়া হয় — মানুষ

 

কিছুই ভালো লাগেনা

চারপাশে শুধু দেখি কুবেরের ধনরক্ষক
মানরক্ষক দেখিনা নেই কোথাও নেই

কিছুই ভালো লাগেনা
কি বলার আছে- পথিক
দূরের গ্রাম পথ ধরে হাঁটি
মুচকি হাসি হাওয়া খাই

ভাবছি একটা গ্রাম কিনবো
মানরক্ষক নিয়োগ দিবো

এখন
ধন ধোনে যাক কিচ্ছু যায় আসেনা

 

বালু নদীর কথা

কি সব কথা তোমার সাথে কতোকাল আগে
পাড়ে ওপাড়ে অসংখ্য পরিবার পরিকল্পনা…
জলে সুরে সুখ শরীর দোলে
ভেসে আসে এক ছবি নদীর নাও
ভালোবাসায় পাশে ছিলো শালবন

খুব নিরবে নিভৃতে

তখন
স্পর্শ তোমার বহু শ্রমিকের ঘাম ঝরানো সুখ
ট্রেনের বগিগুলোও চেয়ে থাকতো
এক অপলক দৃষ্টি  নিয়ে   তোমার দিকেই…

আর এভাবেই চলে মাঝি-মল্লাদের পারাপার

প্রতিদিন

তবু কত-শত প্রেমিক ঠায় নেয় তোমার বুকে
ভালোবাসায় ডুবন্ত সেই ভুল বুঝেছি আজ

অতঃপর
যৌবনে খুঁজে পাওয়া বালু জলে প্রেম-প্রণয়
তোমাকে কেটে টুকরো টুকরো করে নেয়

একদল হায়েনারা

গড়ে উঠে রাজ্যের সব দালান-কোঠা

দখল প্রতিযোগিতা

নাকে তেল দিয়ে
সাধারণ মহোদয়

চলে শ্রমিক আন্দোলন

বালু তুমি মহান
কিছু সাদা ভাত
উঠে আসো আমাদের পেটে

আগের লেখাথার্টিভাইভ না তার্টিপাইব?
পরের লেখাপ্রসঙ্গ : সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর
জহির খান
কবি ও চলচ্চিত্র নির্মাতা। প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ : ‘অননুমোদিত কবিতা’, ‘নিয়মের কোন গতিই মিথ্যানা’, ‘অভ্যন্তরীণ কবিতা’। ইতোমধ্যে দেশ ও দেশের বাইরে বিভিন্ন সংকলনে সংকলিত হয়েছে তাঁর কবিতা, অনূদিত হয়েছে ইংরেজি ভাষাতেও। দীর্ঘদিন সম্পাদনা করেছেন "রাস্তা" (শিল্প সাহিত্য বিষয়ক কাগজ)। চতুর্থ বই "খান সাহেবের কবিতা" প্রকাশের অপেক্ষায়।

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here