কোভিড-১৯ ছোট থেকে বড় ধরনের শ্রুতির সমস্যা সৃষ্টি করছে। ম্যানচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণা মতে, কোভিড-১৯-এর ফলে শ্রবণযন্ত্রে বিভিন্ন রকম সমস্যা দেখা দিচ্ছে; যেমন : টিনিটুস বা কানে শব্দ করা। অধ্যাপক কেভিন মুনরো জানিয়েছেনে, প্রতি দশ জন রুগীর একজন জানিয়েছেন তাদের শ্রবণে কোনো-না-কোনো বদল ঘটেছে, যদিও আরও গবেষণার প্রয়োজন আছে বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।
পিএইচডি গবেষক আল মুফাররিজের সঙ্গে যৌথ অধ্যয়নে ৫৬ টি কেইসে দেখেছেন কোভিড-১৯-এর সঙ্গে শ্রবণসমস্যা এবং শারীরিক ভারসাম্যহীনতার সম্পর্ক আছে।
২৪ টি পাঠের তথ্য বিশ্লেষণ করে গবেষকরা জানিয়েছেন ৭.৬ ভাগ শ্রবণশক্তি হারিয়েছেন, ১৪.৮ ভাগ ভুগছেন টিনিটুসের সমস্যায়, ৭.২ ভাগ ভুগছেন ভার্টিগো জনিত সমস্যায়; এদের প্রত্যেকে কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত হয়েছিলেন।
একই সঙ্গে বিশেষজ্ঞরা দাবি করেছেন, গবেষণাটি গুণগত দিক থেকে সুচারুভাবে সম্পন্ন হয়েছে। প্রাথমিক তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছিল প্রশ্নোত্তর অথবা চিকিৎসা বিষয়ক নথিপত্র থেকে। মুনরো বলেন, ‘শ্রুতিব্যবস্থায় কোভিড-১৯ দীর্ঘমেয়াদি কোনো প্রভাব ফেলে কিনা সে বিষয়ে জরুরি ও সতর্ক অধ্যয়ন দরকার।’ তিনি আরও বলেন, ‘মিসলেস, মাম্পস এবং মেনিনজাইটিসের মতো ভাইরাস শ্রবণশক্তির ক্ষতি করে থাকে। এটা মোটামুটি জানা। কিন্তু শ্রুতিব্যবস্থার ওপর সার্স-কভ-২ ভাইরাসের প্রভাব বিষয়ে অল্পই বোঝাপড়া হয়েছে।’
গবেষক মুফাররিজ বলেন, ‘যদিও বিচিত্র ধরনের তথ্য পাওয়া যাচ্ছে, কিন্তু তথ্যের ভিত্তি মজবুত। সত্যিকার অর্থে আমাদের দেখা দরকার, হাসপাতালে ভর্তি হওয়া কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত রুগির অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যার তুলনা ও প্রতিতুলনা।’
অধ্যাপক মুনরো বলেন যে, বিভিন্ন জনের কাছ থেকে তিনি শতাধিক ইমেইল পেয়েছেন, যেগুলোতে দাবি করা হয়েছে কোভিডে-১৯-এ আক্রান্ত হবার পর শ্রবণ ব্যবস্থায় বদল দেখা দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘এটা অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয়। জরুরি প্রতিরোধ দরকার, যদিও এটা এখনও অস্পষ্ট যে, কোভিড-১৯ সরাসরি শ্রবণ সমস্যার সঙ্গে যুক্ত, নাকি অন্য কারণ এর সঙ্গে যুক্ত — যেমন : দ্রুত সেবা দানের জন্য দেয়া চিকিৎসা।