মসনদ-এ-রুমি ।। কিস্তি : ৪

তেরো শতকের ফারসি ভাষার কবি জালালউদ্দিন মুহাম্মদ রুমি; পুরো নামের বদলে যাঁর নামের জন্য কেবল রুমিই চলে। রুমির কাব্যসম্ভার থেকে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ উক্তির অনুবাদ করেছেন দেবজ্যোতি ঘোষ

 

৩১

প্রথম দফায় শুনেছিলাম

তোমার হৃদয়ের কলধ্বনি,

সেই ঝরণাধারা পান করে

ডুবে গেলাম তোমার মাঝে,

আর ভেসে গেলাম প্রেমের তীব্র স্রোতে।

 

৩২

যে পায় প্রেম আঘাতে-বিষাদে,

হাজার রূপের অন্তরালে যায় হারিয়ে।

 

৩৩

তোমাকে পাওয়ার তীব্র আবেগ,

সে তোমারই দেওয়া,

কাছে যাওয়ার হাজারো প্রচেষ্টা,

সে তোমারই চাওয়া!

 

৩৪

যাকে হারিয়ে

খুঁজে ফেরো বিশ্ব-ব্রহ্মাণ্ডে,

সে তোমার মনের ভিতরে।

 

৩৫

তুমি,

জন্ম দাও সকল প্রাণের,

ধূলি থেকে পৃথক কর সত্তাকে,

আত্মাকে কর কুর্নিশ,

পাহাড় ফুরে আনো ঝর্ণার স্বচ্ছতা,

অন্তর্দৃষ্টিকে কর মলিনতামুক্ত,

তুমি সেই সুধা যা পানে

আপনি আপনাকে বিস্মরিত হয়ে

ঘোষণা করে “আনাল হক্ব”,

তোমার তাই নাম দিয়েছি ধর্ম!

 

৩৬

হৃদয়ে বিরাজে চির হেমন্ত,

খসে পড়ে একটার পর একটা পাতা,

ভেসে যায় অলোকনন্দায়।

 

৩৭

দুঃখ কীসে?

কোথায় মেলে সুখ?

মানুষ কেবল পোড়ে

তার নিজের চিন্তার আগুনে।

 

পুড়তে থাকা হৃদয়ের মুক্তি নেই,

যতক্ষণ না সে অঙ্গার হয়,

পরিপূর্ণ আত্মজ্ঞানী হয়,

মুক্তি নেই আত্মার

যতক্ষণ আপনাকে আপনি না চেনে।

 

৩৮

প্রশ্ন যত জটিল হবে,

উত্তর তত খাঁটি!

 

৩৯

ঠোঁটে তোমার নাম,

চোখে তোমার ছবি,

হৃদয়ে তোমার স্মৃতি,

পাতার পর পাতা লেখা

চিঠির ঠিকানা হবে কী?

 

৪০

জীবন শোধায় মৃত্যকে,

আমাকে ভালোবাসে লোকেরা,

তোমাকে কেন ভয় পায়?

মৃদু হেসে মৃত্যু বলে,

সত্য আর মিথ্যের প্রভেদ

তোমার আমার মাঝখানে!

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here