ইসলামি বিপ্লবের নেতা আয়াতুল্লাহ খোমেইনির সাক্ষাৎকার ।। ওরিয়ানা ফালাচি

আয়াতুল্লাহ খোমেইনি
ইরানে ইসলামি বিপ্লবের প্রধান নেতা আয়াতুল্লাহ রুহুল্লাহ খোমেইনি। সত্তরের দশকে বিশ্বজুড়ে তিনি প্রকাশিত হয়েছিলেন বিস্ময়-ব্যক্তিত্ব হিসেবে। মূলত তার হাতেই গড়ে উঠেছে শাহ-শাসন পরবর্তী নতুন ইরান। এই বিপ্লব এবং খোমেইনির নেতৃত্ব ভাবিয়ে তুলেছিল রাষ্ট্র ও বিপ্লব বিষয়ক ভাবুকদের। ১৯৭৯ সালের ১২ সেপ্টেম্বর তারিখে দশ দিন অপেক্ষা শেষে খোমেইনির এ সাক্ষাৎকারটি নিয়েছিলেন ইতালিয়ান সাংবাদিক ওরিয়ানা ফালাচি। পৃথিবীর গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্বের সঙ্গে দৃঢ় আলাপচারিতায় তিনি তার পারঙ্গমতা প্রমাণ করেছেন। এই সাক্ষাৎকার গ্রহণ করতে গিয়ে ফালাচিকে অনেক বেগ পেতে হয়েছে। এমনকি খোমেইনির সামনে খুলে ফেলেছিলেন চাদরের ‘‘আবরু’’। খোমেইনি রেগে উঠে চলে গিয়েছিলেন আসন থেকে। কিন্তু পরে অন্য দিন আবার সাক্ষাৎকার দিতে সম্মত হয়েছিলেন। সেবার ফালাচির দিকে তাকিয়ে খোমেইনি হেসেওছিলেন। খোমেইনির পুত্রের ভাষ্যে, ওই প্রথম তিনি তার পিতাকে হাসতে দেখেছেন। সম্পূর্ণ সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হয়েছিল ৭ অক্টোবর ১৯৭৯ তারিখের নিউইয়র্ক টাইমসে। বিখ্যাত এই সাক্ষাৎকারের অংশবিশেষ উপস্থাপিত হল।

 

ওরিয়ানা ফালাচি : ইমাম খোমেইনি, সমগ্র দেশ আপনার হাতের মুঠোয়। আপনার নেয়া প্রতিটি সিদ্ধান্ত মূলত আদেশ। আর তাই আপনার দেশের অনেকেই বলছে যে, ইরানে কোনো মুক্তচিন্তা নেই, বিপ্লব মুক্তি আনতে পারে নি।

আয়াতুল্লাহ খোমেইনি : ইরান আমার হাতে নয়। ইরান জনগণের হাতে, কারণ জনগণ দেশকে তুলে দিয়েছে তার হাতে — যে ব্যক্তি তাদের দাস এবং যে কেবলই চায় তাদের ভালো করতে। আপনি খুব ভালোভাবেই দেখেছেন তালেঘানির মৃত্যুর পর সহিংসতার ভয় উপেক্ষা করে মিলিয়ন সংখ্যক মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছে। এ ঘটনা এটাই বলে যে, ইরানে মুক্তচিন্তা আছে। এটা এও দেখায়, মানুষ খোদার বরপুত্রদের অনুসরণ করে। আর এটাই মুক্তচিন্তা।

 

ফালাচি : থামিয়ে দেয়ার জন্য মাফ করবেন ইমাম খোমেইনি। আমি বলতে চেয়েছি, বর্তমান ইরানে আপনি ভীতির সৃষ্টি করেছেন এবং অনেক মানুষ আপনাকে একনায়ক বলে থাকেন। নতুন একনায়ক, নতুন কর্তা। নতুন মালিক। এ বিষয়ে আপনি কী মন্তব্য করবেন? এসব কথা আপনাকে পীড়া দেয়, নাকি গুরুত্ব দেন না?

খোমেইনি : এক দিকে, একথা শুনে আমি দুঃখিত। হ্যাঁ, এসব আমাকে আঘাত করে, কারণ আমাকে একনায়ক বলা অন্যায় ও অমানবিক। অন্য দিকে, আমি উড়িয়ে দিতে পারি না, কারণ আমি জানি, শয়তানি মানবপ্রকৃতির একটা অংশ এবং এই শয়তানিটা এসেছে আমাদের শত্রুদের কাছ থেকে। আমরা যে পথ বেছে নিয়েছি, সে পথ ক্ষমতাধরদের বিপরীতে, এটা স্বাভাবিক যে, বিদেশি স্বার্থের সঙ্গে জড়িত দাসরা আমাকে তাদের বিষাক্ত কথা দিয়ে আহত করে এবং আমার বিরুদ্ধে কুৎসা রটনা করে। আমি এমন ঘোরেও থাকি না যে, ওইসব দেশ যারা প্রতিনিয়ত আমাদের সম্পদ লুট করেছে, অপহরণ করেছে, তারা নীরবে অলসভাবে দাঁড়িয়ে থাকবে। তাছাড়া শাহর অনুসারীরা অনেক কথা বলেছে, এমন কথাও বলেছে যে, খোমেইনি মেয়েদের স্তন কেটে ফেলার নির্দেশ দিয়েছে। আপনিই বলুন, আপনি যেহেতু এখানে, আপনি এমন কোনো প্রমাণ পেয়েছেন খোমেইনি এমন ধরনের দানবিক একটি কাজ করতে পারে, মেয়েদের স্তন কেটে ফেলতে পারে?

 

ফালাচি : না, আমি দেখি নি ইমাম। কিন্তু আপনি লোকদের ভয়ের কারণ হয়ে উঠেছেন, যেমনটা আমি বললাম। এমনকি এই জনতা, যারা আপনার নামে স্লোগান দেয়, তারাও ভয়ের কারণ। এই যে, দিন-রাতব্যাপী আপনার নাম ধরে জিকির করে, আপনি জানেন তারা আপনার জন্য অবস্থান করছে, ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে আছে, কেবল এক মুহূর্ত আপনাকে দেখার জন্য আর আপনার গুনগান গাইবার জন্য ধাক্কাধাক্কি করছে, দুর্ভোগ পোহাচ্ছে – এসব দেখে শুনে জেনে আপনার কেমন লাগে?

খোমেইনি : আমি এটা উপভোগ করি। আমি তাদের কথা শুনে, তাদের দেখে উপভোগ করি। কারণ তারা সবাই এক, যারা দেশি বিদেশি শত্রুদের ছুড়ে ফেলার জন্য জেগে উঠেছিল। কারণ স্তব হলো সেই চিৎকারের ধারাবাহিকতা যা দখলদারদের উৎখাত করেছিল। এটা ভালো যে, তারা উত্তেজিত আছে, কারণ শত্রুরা এখনও নির্মূল হয়ে যায় নি। যতক্ষণ পর্যন্ত না দেশ স্থিতিশীল হচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত জনগণকে সজাগ থাকতে হবে, আবার জোর কদমে চলতে হবে, আঘাত করতে হবে। তাছাড়া, এটা হলো প্রেম, বুদ্ধিদীপ্ত প্রেম। একে উপভোগ না করা অসম্ভব ব্যাপার।

 

ফালাচি : প্রেম নাকি উন্মাদনা, ইমাম? আমার কাছে মনে হয়, এটা উন্মাদনা এবং ভীষণ বিপদজনক ধরনের। আমি বলতে চাই, ফ্যাসিবাদী উন্মাদনা। মূলত অনেকেই বর্তমান ইরানে ফ্যাসিবাদী হুমকি দেখতে পাচ্ছেন, সত্যি কথা বলতে অনেকে মনে করেন ইরানে ফ্যাসিবাদ কায়েম হয়ে গেছে।

খোমেনি : নাহ, এটা ফ্যাসিবাদও নয়, উন্মাদনাও নয়। আমি আবারও বলছি, তারা এমন করে, কারণ তারা আমাকে ভালোবাসে, তারা আমাকে ভালোবাসে কারণ তারা অনুভব করে আমি তাদের জন্য ভাবি, আমি তাদের জন্য কাজ করি। আমি ইসলামের নীতিগুলো প্রয়োগ করার চেষ্টা করি। ইসলাম হলো ন্যায়বিচার। একনায়কতন্ত্র ইসলাম ধর্মে বড় পাপ। ফ্যাসিবাদ ও ইসলামিজম নিশ্চিতভাবেই সাদৃস্যপূর্ণ নয়। ফ্যাসিজমের জন্ম পশ্চিমে, ইসলামী সংস্কৃতির ভেতর থেকে নয়।

 

ফালাচি : সম্ভবত আমরা কেউ কাউকে বুঝতে পারছি না অথবা ফ্যাসিবাদ শব্দের অর্থ ধরতে পারছি না ইমাম। ফ্যাসিবাদ বলতে আমি বুঝাচ্ছি সেই জনপ্রিয় বৈশিষ্ট্যকে, যেমনটা ঘটেছিল ইতালিতে — মুসোলিনির নামে জনতা চিৎকার করত, এখানে যেমন আপনার জন্য করছে, মুসোলিনিকে যেমন মানা হতো, একইভাবে আপনার নির্দেশ মানা হচ্ছে।

খোমেইনি : নাহ। কারণ আমাদের জনতা হলো মুসলমান, মৌলভীদের দ্বারা শিক্ষিত – যারা আধ্যাত্মিকতা ও মঙ্গলের জন্য বক্তৃতা করে। এখানে ফ্যাসিবাদ সম্ভবপর হবে যদি শাহ এখানে ফেরত আসত অথবা কমিউনিজম ক্ষমতা গ্রহণ করত। আমার নামে চিৎকার করার অর্থ মুক্তি ও গণতন্ত্রকে ভালোবাসা।

 

ফালাচি : আচ্ছা। আমরা মুক্তি ও গণতন্ত্র নিয়ে কথা বলি, ইমাম। আমরা ঠিক সেভাবেই কাজটা করি, মুক্তি ও গণতন্ত্র যেমন। কুম শহরে দেয়া আপনার প্রথম বক্তৃতায় আপনি বলেছেন যে, নতুন ইসলামি সরকার কমিউনিস্ট ও সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠীসহ প্রত্যেকের মুক্তচিন্তা ও মত প্রকাশের নিশ্চয়তা দেবে। কিন্তু ওয়াদা পালন করা হয় নি। আপনি এখন কমিউনিস্টদের সংজ্ঞায়িত করছেন ‘‘শয়তানের পুত্র’’ হিসেবে এবং বিদ্রোহী জাতিগোষ্ঠীর নেতাদের অভিহিত করেছেন ‘‘পৃথিবীর শয়তান’’ হিসেবে।

খোমেইনি : আপনি প্রথমত কোনো চিন্তাকে প্রতিষ্ঠিত করছেন এবং তারপর আমার কাছ থেকে প্রত্যাশা করছেন আপনার মন্তব্যের ব্যাখ্যা। এমনকি আপনি ধরে নিচ্ছেন, আমার উচিত যারা ষড়যন্ত্র করছে, যারা দেশকে নৈরাজ্য ও দুর্নীতির দিকে নিয়ে যেতে চায় তাদের অনুমোদন দেয়া; ব্যাপারটা যেমন এমন যে, মুক্তমত ও চিন্তা প্রকাশের মানে হলো ষড়যন্ত্র ও দুর্নীতি। আর তাই আপনার প্রশ্নের জবাবে বলছি : আমি, আমরা পাঁচ মাসেরও বেশি সময় তাদের সহ্য করেছি, আমরা যা করছি তা নিয়ে তারা ভাবে নি। তারা স্বাধীন ছিল, নিজেরা যা করতে চায়, তা করতে নিশ্চিতভাবেই স্বাধীন ছিল। তাদের কাছে যে শপথ করা হয়েছিল সম্পূর্ণভাবে তারা তা উপভোগ করেছে। এমনকি আমি আমাদের সঙ্গে কমিউনিস্টদের সংলাপের আহ্বান জানিয়েছিলাম। কিন্তু, তার প্রতিক্রিয়ায় তারা গম খেত পুড়িয়ে দিয়েছে, তারা নির্বাচন অফিস পুড়িয়ে দিয়েছে, আমাদের সংলাপের প্রত্যুত্তরে তারা রাইফেল আর অস্ত্রের ঝনঝনানি দেখিয়েছে। সত্যি বলতে তারাই কুর্দিদের নিয়ে সমস্যা তৈরি করেছে। কাজেই, আমরা বুঝতে পেরেছি তারা আমাদের সহনশীলতার সুযোগ নিচ্ছে এবং অন্তর্ঘাতমূলক কাজ করছে। তারা আসলে মুক্তি চায় না, ধ্বংস করার নিশ্চয়তা চায়। আমরা তাই তাদের থামিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমরা যখন বুঝতে পারলাম তারা সাবেক শাসনামল এবং বিদেশি শক্তির প্রভাবে অন্যান্য ষড়যন্ত্র ও উপায়ে আমাদের ধ্বংস কামনা করছে, তখন আমরা তাদের থামিয়ে দিলাম।

 

ফালাচি : উদাহরণ হিসেবে, বিরোধী পক্ষের সংবাদপত্র বন্ধ করে দিয়েছেন। কোমে দেয়া বক্তৃতায় আপনি আধুনিক রীতিতে মানুষ গড়ে তোলার কথা বলেছিলেন যাদের নিজের মত পছন্দ করার এবং অন্যের মত সমালোচনা করার অধিকার থাকবে। কিন্তু উদারপন্থী পত্রিকা আয়ানদেগান বন্ধ করা হয়েছে। একই কাজ করা হয়েছে বামপন্থী পত্রিকাগুলোর ক্ষেত্রে।

খোমেইনি : আমি উল্লেখ করেছি, আয়ানদেগান ছিল ষড়যন্ত্রের অংশ। জায়োনিস্টদের সঙ্গে এদের সম্পর্ক ছিল; তাদের কাছ থেকে এরা দেশের ক্ষতি করার ধারণা নিয়েছে। বাকি সব পত্রিকার ক্ষেত্রে একই ঘটনা ঘটেছে। বিপ্লবী বিচারব্যবস্থার অ্যাটর্নি জেনারেল বিচার করেছেন এবং তারপর বন্ধ করা হয়েছে। এসব মূলত মেকি বিরোধীপক্ষ, তারা প্রকৃতপক্ষে পুরনো শাসনকে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করতে চায় এবং বিদেশি স্বার্থের পক্ষে কাজ করতে চায়। আমরা তাদের বন্ধ করেছি, কারণ আমরা জানি তারা কারা ছিল, তারপর তারা কী হয়েছে। আর এটা কখনোই মুক্তির পরিপন্থী নয়। এরকম সব জায়গায়ই ঘটে।

 

ফালাচি : না, ইমাম, তা নয়। যারা শাহর বিরুদ্ধে লড়াই করেছে, শাহের দ্বারা নির্যাতিত হয়েছে, বন্দি হয়েছে, প্রহারের শিকার হয়েছে, তাদের কী করে বলেন যে, তারা ‘শাহর জন্য নস্টালজিক’ হয়ে উঠেছে? আপনি কীভাবে তাদের শত্রু বলতে পারেন? আপনি কী করে তাদের অবস্থানকে উপেক্ষা করতে পারেন, যাদের অবস্থানের অধিকার আছে — ওই বামপন্থীরা অনেক লড়াই করেছে, নির্যাতন ভোগ করেছে?

খোমেইনি : তাদের কেউই লড়াই করেনি, যন্ত্রণা ভোগ করে নি। যদি কিছু করে থাকে তাহলে তারা জনগণের ক্ষোভের সুযোগ নিয়েছে – যারা লড়াই করেছে এবং যন্ত্রণা ভোগ করেছে। আপনি এসব বিষয়ে খুব বেশি জানেন না। বামদের বড় একটি অংশ যাদের কথা আপনি বলছেন, সাম্রাজ্যাবাদী শাসনের সময় তারা দেশের বাইরে ছিল, জনগণ যখন শাহকে ছুড়ে ফেলেছে কেবল তখনই তারা দেশে ফিরেছে। আরেক অংশ এখানে ছিল, এটা সত্য, তারা লুকিয়ে ছিল তাদের গুপ্ত স্থানে কিংবা বাড়িতে। তারা তখনই বাইরে এসেছে যখন জনগণের শরীর থেকে রক্ত ঝরেছে, তারা এই রক্তপাতের সুযোগ নিয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত তাদের স্বাধীনতা খর্ব করার মতো কিছু ঘটে নি।

 

ফালাচি : ইমাম, আমি আপনাকে নিশ্চিত করতে চাই যে, আমি ঠিকভাবেই বুঝেছি। আপনি বলেছেন যে, শাহকে ক্ষমতাচ্যুত করার ক্ষেত্রে বামদের কোনো ভূমিকা নেই। এমনকি বামদের সেই অংশ যাদের অনেকে গ্রেফতার হয়েছে, সহিংসতার শিকার হয়েছে, অনেকে শহিদ হয়েছে। কিন্তু বামদের কেউ গুনছে না, হোক জীবিত বা মৃত।

খোমেইনি : তারা কোনো ভূমিকা রাখে নি। বিপ্লবে তারা মোটেও সহায়তা করে নি। তাদের কেউ কেউ লড়াই করেছে, হ্যাঁ, কিন্তু তাদের ভাবধারার জন্যে, তাদের লক্ষ্যের জন্যে, তাদের স্বার্থের জন্যে। তারা বিজয়ের নিশ্চায়ক নয়, তারা দায় গ্রহণ করে নি, তাদের কোনো ভূমিকা নেই। না, বামরা আমাদের কোনো সহায়তা করে নি, তারা আমাদের কেবল সমস্যা দিয়েছে। এখন যেমন তারা আমাদের বিরুদ্ধে, শাহর শাসনামলে তারা আমাদের বিরুদ্ধে ছিল, আমাদের প্রতি তাদের উগ্রতা ছিল শাহর চেয়েও খারাপ, আরও গভীর। এমন নয় যে, আকস্মিকভাবে বামদের কাছ থেকে সাম্প্রতিক ষড়যন্ত্র তৈরি হয়েছে। আমার মত হলো, তারা আসলে সত্যিকার বামই নয়, কৃত্রিম বাম, আমেরিকানদের তৈরি।

আমি আপনাকে জিজ্ঞেস করতে চাই, আপনি প্রচুর ঘুরেছেন, সরকারের সকল ধরন দেখেছেন এবং ইতিহাস জানেন, আপনি কি গণতন্ত্রের এর চেয়ে ভালো কোনো দৃষ্টান্ত দিতে পারবেন?

ফালাচি : আপনি বলতে চাইছেন একজন বামপন্থি ইউনাইটেড স্টেইটস-এ তৈরি হয়, ইমাম?

খোমেইনি : হ্যাঁ… আমাদের লুট করতে, আমাদের বিরুদ্ধে অন্তর্ঘাতমূলক কাজ করতে এবং আমাদের ধ্বংস করতে আমেরিকানদের দ্বারা আমেরিকানদের সমর্থনে তৈরি।

 

ফালাচি : আর তাই, আপনি যখন বলেন ‘‘জনগণ’’ তখন বিশেষভাবে বোঝাতে চান সেই জনগণ যারা ইসলামিক আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত। আমি আপনাকে জিজ্ঞেস করতে চাই : লাখো মানুষ যারা নিহত হলেন, তারা কি মুক্তির জন্য নিহত হলেন, নাকি ইসলামের জন্য?

খোমেইনি : ইসলামের জন্য। জনগণ শহিদ হলেছে ইসলামের জন্য। আর ইসলাম বলতে বোঝায়, সব কিছু, আর আপনাদের বিশ্বে যেগুলোকে মুক্তি, গণতন্ত্র ইত্যাদি বলা হয়ে থাকে, তাও ইসলামের অন্তর্ভুক্ত। হ্যাঁ, ইসলাম এই সব কিছু ধারণ করে। ইসলাম এই সব কিছু গ্রহণ করে। ইসলাম সব কিছু।

 

ফালাচি : ঠিক এই ক্ষেত্রে, ইমাম, আমি অবশ্যই আপনাকে প্রশ্ন করব, মুক্তি বলতে আপনি কী বুঝিয়ে থাকেন?

খোমেইনি : মুক্তি; এই ধারণাটিকে ঠিক সহজভাবে সংজ্ঞায়িত করা যায় না। বলা যাক, তখনই ফ্রিডম বা মুক্তি বোঝায় আপনি যখন আপনার নিজস্ব ইচ্ছাকে নির্বাচন করতে পারেন এবং অন্য কিছু ভাবতে বাধ্য না হয়ে আপনার ইচ্ছানুযায়ী ভাবতে পারেন। ফ্রিডম বলতে বলতে পারি, আপনার ইচ্ছানুযায়ী বসবাস করা এবং কাজ করার স্বাধীনতা।

 

ফালাচি : ভাবতে পারা, কিন্তু প্রকাশ করতে না পারা অথবা চিন্তাকে সুদৃঢ় করতে না পারা? গণতন্ত্র বলতে আপনি কী বুঝিয়ে থাকেন? আমি অত্যন্ত কৌতূহলের সঙ্গে প্রশ্নটি করছি, কারণ (মার্চ ১৯৭৯) রিপাবলিক অথবা মনার্কি — এ বিষয়ক গণভোটে আপনি ‘‘ইসলামিক ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক’’ প্রয়োগ করতে নিষেধ করেছিলেন। ডেমোক্রেটিক শব্দটিকেই আপনি নিষিদ্ধ করেছিলেন, এই বলে যে, ‘‘এক শব্দ বেশিও নয়, এক শব্দ কমও নয়।’’ এর ফলে আপনার ওপর বিশ্বাসী জনগণ ‘‘ডেমোক্রেসি’’ শব্দটিকে এমনভাবে ব্যবহার করে যেন এটি একটি নোংরা শব্দ। এই বিশেষ্যবাচক শব্দটির সমস্যা কী, পশ্চিমে আমাদের কাছে যা অত্যন্ত সুন্দর একটি শব্দ?

খোমেইনি : শুরুতেই বলতে হয়, ‘‘ইসলাম’’ শব্দটির জন্য ডেমোক্রেটিকের মতো বিশেষণের প্রয়োজন পড়ে না। সঠিকভাবে বলতে গেলে কারণ এই, ইসলাম আদতে সব কিছু, এর দ্বারা সব বোঝায়। আমাদের কাছে দুঃখজনক বিষয় হলো, ইসলামের মতো একটি যথার্থ শব্দের পাশে আরেকটি শব্দ যোগ করা। তাছাড়া, এই গণতন্ত্র, যা তোমারা খুব ভালোবাসো, যাকে তোমরা খুব মূল্যবান মনে করো তার কোনো সঠিক অর্থ নেই। অ্যারিস্টোটলের গণতন্ত্র এক জিনিস, সোভিয়েত গণতন্ত্র এক জিনিস আবার পুঁজিবাদীদের গণতন্ত্র অন্য জিনিস। আমরা আমাদের সংবিধানে এ রকম একটি ধোঁয়াশাপূর্ণ ধারণাকে স্থান দেয়ার ইচ্ছা রাখি না। সব শেষে, একটি ঐতিহাসিক দৃষ্টান্ত দিতে চাই, দেখাতে চাই, গণতন্ত্র বলতে আসলে কী বোঝায়। নবির ধারাবাহিকতায় আলি যখন ইসলামী রাষ্ট্রের প্রধান হলেন, যার বিস্তৃতি ছিল সৌদি আরব থেকে মিশর, এশিয়ার বিরাট একটি অংশ এবং ইউরোপেরও অংশ, তখন এক ইহুদির সঙ্গে বিরোধিতা দেখা দিল। ইহুদি ব্যক্তিটি বিচারক বরাবর আরজি পেশ করল। আলি বিচারকের দেয়া শমন গ্রহণ করলেন এবং তার কাছে গেলেন। তিনি যখন বিচারকক্ষে প্রবেশ করলেন, বিচারক দাঁড়িয়ে গেলেন, কিন্তু আলি ক্রদ্ধ হয়ে বললেন, ‘‘আমি যখন কামরায় ঢুকলাম, তখন আপনি কেন উঠে দাঁড়ালেন, আর ওই ইহুদি ব্যক্তিটি যখন ঢুকল তখন কেন উঠে দাঁড়ালেন না? বিচারকের সামনে বাদী-বিবাদী উভয়কেই সমান চোখে দেখা উচিত।’’ ঘটনাক্রমে, তিনি রায় মেনে নিয়েছিলেন, যা তার বিপক্ষে গিয়েছিল। আমি আপনাকে জিজ্ঞেস করতে চাই, আপনি প্রচুর ঘুরেছেন, সরকারের সকল ধরন দেখেছেন এবং ইতিহাস জানেন, আপনি কি গণতন্ত্রের এর চেয়ে ভালো কোনো দৃষ্টান্ত দিতে পারবেন?

 

ফালাচি : ইমাম, গণতন্ত্র বলতে এর চেয়ে আরও বেশি কিছু বোঝায়। একথা অনেক ইরানিও বলেন। এই একই ইরানিরা বুঝতে পারছেন না আপনার ইসলামিক রিপাবলিকের গন্তব্য আসলে কোথায়।

খোমেইনি : আপনারা বিদেশিরা যদি বুঝতে না পারেন, তাহলে সেটা আপনাদের ব্যর্থতা। এটা আপনাদের বিষয় নয়, আমাদের পছন্দ নিয়ে আপনাদের কিছু করার নেই। যদি কিছু ইরানি তা বুঝতে না পারে, এটা তাদের জন্য ব্যর্থতা। এর অর্থ তারা ইসলামকে বুঝতে পারে নি।

 

ফালাচি : যাহোক, কিন্তু তারা নিশ্চিতভাবে বুঝতে পেরেছে আজ ইরানে মোল্লাদের স্বৈরতন্ত্র চলছে, ইমাম। নতুন সংবিধানের খসড়ায় সংবিধান বিশেষজ্ঞরা একটি ধারা পাস করেছে, পঞ্চম নীতিতে আছে, দেশের চূড়ান্ত অধিকারী হবেন সর্বোচ্চ ধর্মীয় কর্তৃপক্ষ। তিনি, আপনি। কোরান যারা ভালো জানেন কেবল তারাই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবেন। এটাই মোল্লাতন্ত্র। এর দ্বারা কি এ-ই বোঝায় না যে, সংবিধান অনুযায়ী রাজনীতি নিশ্চিত করবে ধর্মগুরু — আর কেউ নয়।

খোমেইনি : এই আইন, জনগণ যা অনুমোদন করবে, কোনোভাবেই তা গণতন্ত্রের সঙ্গে সাংঘর্ষিক নয়। যেহেতু জনগণ ধর্মগুরুবাদিতাকে ভালোবাসে, আস্থা আছে ধর্মগুরুতন্ত্রে, তারা তাদের দ্বারা পরিচালিত হতে চায়। সর্বোচ্চ ধর্মীয় কর্তৃপক্ষের এটা অধিকার, তারা রিপাবলিকের প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির কাজ পর্যবেক্ষণ করবে, এটা নিশ্চিত করার জন্য যে, তারা কোনো ভুল করছে কিনা, কিংবা আইনবিরুদ্ধ কোনো কাজ করছে কিনা : তা হলো কোরানবিরোধী কোনো কাজ করছে কিনা। এটা হতে পারে সর্বোচ্চ ধর্মীয় কর্তৃপক্ষ অথবা ধর্মগুরুদের একটি প্রতিনিধি দল।

 

ফালাচি : আমরা একটু ধর্মগুরুদের দ্বারা পরিচালিত বিচারকার্য নিয়ে কথা বলতে চাই, ইমাম। বিজয়ের পর ইরানে প্রায় ৫০০ ব্যক্তিকে প্রাণদণ্ড দেয়া হয়েছে। আপনি কি এই সংক্ষিপ্ত বিচারপ্রক্রিয়াকে অনুমোদন করছেন, যেখানে কোনো উকিল নেই, আপিল করার সুযোগ নেই?

খোমেইনি : স্পষ্টতই আপনারা পশ্চিমারা এড়িয়ে যান বা এড়িয়ে যাওয়ার ভাণ করেন, কাদের প্রাণদণ্ড দেয়া হয়েছে। তারা হলো সেই ব্যক্তি যাঁরা রাস্তায়, স্কয়ারে গণহত্যায় অংশ নিয়েছে, যারা ঘরবাড়ি পুড়িয়েছে, নির্যাতন করেছেন, যাদের জেরা করা হয়েছিল তাদের হাত-পা কেটেছে। তার প্রতি আমাদের কী করা উচিত ছিল? ক্ষমা করা? স্বাধীনভাবে ছেড়ে দেয়া? আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ,  অভিযোগের বিরুদ্ধে জবাব — এ ধরনের সুযোগ আমরা তাদের দিয়েছি। কিন্তু অপরাধ যখন প্রদর্শিত তখন আপিল করার কী প্রয়োজন ছিল বা আছে? এর বিপরীত কথা আপনি লিখতে পারেন, কলম আপনার হাতে। আমার জনগণ আমাকে আপনার প্রশ্নগুলো করে না। আমি যদি আরও একটি গভীরে যাই : আমরা যদি ওই অপরাধীদের প্রাণদণ্ড না দিতাম, তাহলে জনরোষ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেত। সাবেক আমলের প্রতিটি সক্রিয় কর্মকর্তাকে ফাঁসিতে ঝুলানো উচিত ছিল। মৃতের সংখ্যা হতে পারত পাঁচশোর বেশি। তার সংখ্যা হতে পারত হাজারের কোঠায়।

ফালাচি : আচ্ছা ঠিক আছে। কিন্তু আমি কেবল নির্যাতক এবং সাভাক হত্যাকারীদের কথা বলি নি, ইমাম। আমি তাদের ফাঁসির কথা বলেছি, সাবেক শাসনামলে যাদের কিছু করার ছিল না, আমরা তাদের কথা বলছি, যারা এখনও ব্যভিচারিতা, যৌনপেশা বা সমকামিতার জন্য নিহত হচ্ছে। একজন গরিব যৌনকর্মী অথবা স্বামীর প্রতি অবিশ্বাসী নারী অথবা একজন পুরুষ যিনি অন্য জন পুরুষকে ভালোবাসেন — এদের হত্যা করা কি ঠিক?

খোমেইনি : আপনার আঙুলে যদি গ্যাংগ্রিন হয়, আপনি কী করবেন? আপনি কি আপনার সম্পূর্ণ হাতকে আক্রান্ত হতে দেবেন, তারপর সমস্ত শরীরকে গ্যাংগ্রিনে ভরিয়ে তোলার সুযোগ করে দেবেন, নাকি আঙুল কাটবেন? যা সমস্ত দেশে দুর্নীতি বয়ে আনে এবং জনগণের মধ্যে দুর্নীতি প্রবেশ করায়, সেগুলোকে উৎপাটিত করতে হয়, যেমন গম খেতে গাঁজা জন্মালে তুলে ফেলতে হয়। আমি জানি, এমন অনেক সমাজ আছে যেখানে স্বামী ব্যতীত অন্য পুরুষ দ্বারা পরিতৃপ্ত হবার অনুমোদন দেয়, যেখানে একজন পুরুষের বাসনা পরিতৃপ্ত হতে পারে অন্য পুরুষ দ্বারা। কিন্তু আমরা যেমন সমাজ গড়তে চাই, সেখানে এ ধরনের বিষয়ের অনুমোদন করতে চাই না। ইসলামে, আমরা এমন নীতির বাস্তবায়ন করা হয়, যা দ্বারা সমাজকে পরিশুদ্ধ করা যায়, এবং তা অর্জনের জন্য আমরা অবশ্যই তাদের শাস্তি দিতে চাই — যারা আমাদের তারুণ্যের ভেতর শয়তানকে নিয়ে আসে। আপনি কি তা-ই করতেন না? একজন চোর যখন চোর, তখন আপনি কি তাকে জেলে ভরতেন না? এমন অনে দেশ আছে না, যেখানে খুনিকে ফাঁসি দেয়া হয়? এ কারণেই কি আপনি তা করেন না যে, তারা যদি মুক্ত ও জীবন্ত থাকে, তারা অন্যদের দূষিত করবে এবং দূষণ ছড়াবে।

কারণ আমি চাই, শাহকে দেশে এনে জনতার সামনে বিচারের মুখোমুখি করতে — পারসি জনগণের বিরুদ্ধে সংঘটিত ৫০ বছরের অপরাধের, একই সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা ও অর্থ আত্মসাতের।

ফালাচি : ইমাম, একজন সাভাক খুনি ও নির্যাতকের সঙ্গে একজন যৌনস্বাধীনতাকামী নাগরিকের তুলনা কী করে সম্ভব? উদাহরণ হিসেবে বলা যাক, গত কাল এক ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে সমকামিতার জন্য।

খোমেইনি : দুর্নীতি, দুর্নীতি। আমাদের দুর্নীতি দূর করতে হবে।

 

ফালাচি : কয়েক সপ্তাহ আগে বেশারে ১৮বছর বয়সী এক মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে ব্যভিচারিতার অভিযোগে, সে ঘটনার কথাই বলা যাক।

খোমেইনি : গর্ভবতী? মিথ্যা, মিথ্যা। মেয়েদের স্তন কেটে ফেলার মতোই মিথ্যা। ইসলামে এ রকম ঘটনা ঘটে না। ইসলামে গর্ভবতী নারীকে হত্যা করা হয় না।

 

ফালাচি : এগুলো মিথ্যা নয়, ইমাম। সব ইরানিয়ান পত্রিকা প্রতিবেদন করেছে এবং টিভিতে বিতর্কও হয়েছিল, কারণ তার প্রেমিককে কেবল একশো চাবুক মারা হয়েছিল।

খোমেইনি : এটা যদি সত্য হয়ে থাকে, এর অর্থ মেয়েটি তা-ই পেয়েছে, যা তার প্রাপ্য। বিশেষ ঘটনা আমি কী করে জানবো? কোর্টকে জিজ্ঞেস করুন, যারা তার বিচার করেছে। এ ধরনের বিষয় নিয়ে কথা বলা বন্ধ করুন। আমি ক্লান্ত হয়ে পড়ছি। এগুলো গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার নয়।

 

ফালাচি : তাহলে আমরা কুর্দিদের নিয়ে কথা বলি, যারা অটোনমি চেয়েছে তাদের ফাঁসিতে ঝোলানো হচ্ছে।

খোমেইনি : কুর্দি — যাদের বিচার করা হচ্ছে, তারা কুর্দি জনগোষ্ঠীর লোক নয়। তারা বিধ্বংসী, যারা জনগণ ও বিপ্লবের বিরুদ্ধে কাজ করছে, তাদের একজন — কাল যাকে ফায়রিং স্কোয়াডে হত্যা করা হয়েছে। সে ১৩জন ব্যক্তিকে হত্যা করেছিল। আমি খুশি হবো যদি কাউকে হত্যা করা না হয়, কিন্তু যখন এই লোকের মতো কাউকে ধরে হত্যা করা হয় আমার ভালো লাগে।

 

ফালাচি : আজ সকালে গ্রেফতারকৃত পাঁচ জনের ব্যাপারে কী বলবেন, যারা কমিউনিস্ট হ্যান্ডআউট বিলি করছিল?

খোমেইনি : যদি তারা গ্রেফতার হয়ে থাকে, তাহলে তা তাদের প্রাপ্য, কারণ তারা বিদেশি স্বার্থে কাজ করছিল — শাহের আমলে আমেরিকার হয়ে কাজ করা নকল কমিউনিস্টদের মতো। অনেক হয়েছে। এসব বিষয়ে অনেক বলেছি।

 

ফালাচি : আচ্ছা, ইমাম। আমরা শাহর বিষয়ে কথা বলি। ইমাম, আপনিই কি শাহকে বিদেশে শাহকে হত্যার নির্দেশ দিয়েছিলেন? আপনিই কি বলেছিলেন, যে এই কাজটি সম্পন্ন করতে পারবে, সে বীর হিসেবে বিবেচিত হবে এবং সে যদি এই অভিযানে মারা যায়, তাহলে সে বেহেশতে যাবে?

খোমেইনি : না! আমি নই। কারণ আমি চাই, শাহকে দেশে এনে জনতার সামনে বিচারের মুখোমুখি করতে — পারসি জনগণের বিরুদ্ধে সংঘটিত ৫০ বছরের অপরাধের, একই সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা ও অর্থ আত্মসাতের। তাকে হত্যা করা হতো টাকাগুলো হারিয়ে যেতে। আমরা যদি তাকে এখানে এনে বিচার করতে পারি, তাহলে টাকাগুলো ফেরত পেতে পারি। না, না, আমি চাই না, সে বিদেশে খুন হোক। আমি তাকে এখানে চাই, এখানে। আর তা ঘটানোর জন্য আমি তার সুস্থতার জন্য দোয়া করি, ঠিক যেমন করে রিজা পাহলভির জন্য দোয়া করতেন আয়াতুল্লাহ মাদারি। এই পাহলভির বাবা, রিজা পাহলভি, যে কিনা বিপুল পরিমাণ অর্থ নিয়ে বিদেশে পালিয়ে গিয়েছিল।

(সংক্ষেপিত)

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here