হ্যাঁ, হিটলার ছবি আঁকতেন। কোন হিটলার? খুনি, গণহত্যাকারী, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কেন্দ্রীয় চরিত্র — এক কথায় জার্মান ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রনায়ক নাৎসি নেতা অ্যাডল্ফ হিটলার ছবি আঁকতেন।
হিটলারের স্বপ্ন ছিল হবেন চিত্রকর। আর ভিয়েনা ছিল তাঁর স্বপ্নের শহর। ১৯০৮ সালের মায়ের মৃত্যুর পর এলেন ভিয়েনায়। বাবার ইচ্ছে ছিল ছেলে হবে সরকারি চাকরিজীবী।
ফ্লাওয়ার পেইন্টিং। জলরং।
ভিয়েনায় হিটলার রাত জেগে আঁকলেন, বই পড়লেন। তাঁকে হতাশ করে দিয়ে অ্যাকাডেমি অফ ফাইন আর্টস জানাল হিটলারের আঁকা ছবি ‘সন্তোষজনক’ নয়। যদিও পাশ করেছিলেন চিত্রকলার জন্য নেয়া প্রথম ধাপের পরীক্ষায়।
শহরতলি। ১৯১৫।
১৯০৯ সাল থেকে হিটলার ছবি বিক্রি করে টাকা রোজগার করা শুরু করেন। মূলত পোস্টকার্ড থেকে ছবির অনুলিপি আঁকতেন। ছবিগুলো বিক্রি করতেন পর্যটকদের কাছে। ১৯২৫ সালে প্রকাশিত আত্মজীবনী Mein Kampf-এ বলেছেন তিনি চিত্রশিল্পী হিসেবে তাঁর ভবিষ্যৎ জীবন প্রস্তুত করার কথা ভেবেছিলেন।
আত্মপ্রতিকৃতি। ১৯১০।
হিটলার কেমন ধরনের ছবি আঁকতেন? চিত্র-সমালোচকদের মতে, হিটলারের ছবি আঁকার ধরন ইতালিয় রেনেসাঁ, গ্রেকো-রোমান চিত্রকলার অনুসারী।
১৯১৩। মিউনিখের পুরনো বসতবাড়ি।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় যোদ্ধা হিটলার কাগজ ও ক্যানভাসে সময় ব্যয় করতেন। তখন তাঁর ছবির বিষয় ছিল গ্রাম, প্রকৃতি।
ভিয়েনার ভিড়ময় রাস্তা। ১৯১১-১৯১২ সালের দিকে আঁকা জলরং।
হিটলারের ছবিতে দুই ধরনের বিষয়বস্তু লক্ষ্যযোগ্য। একদিকে তাঁর স্থাপত্যপ্রেম, অন্যদিকে প্রকৃতি।
ট্যাংক ও যুদ্ধক্ষেত্র। ১৯১৬ সালে আঁকা ছবি।
ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় হিটলার ছবি আঁকার পাশাপাশি অনেক ছবি ধ্বংস করেছেন। ধ্বংস তাঁর শিল্পের সঙ্গেও যুক্ত।
২০১৫ সালে নিলামে বিক্রি হওয়া ছবি।
তবে এও সত্য যে, চিত্রশিল্পী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে না পারার ব্যর্থতা তাঁকে আচ্ছন্ন করেছিল।
চুল্লি।
শহরতলি।
সাদা বেড়া দেয়া বাড়ি।
১৯১৪ সালে আঁকা জলরং। হিটলার বিষয়ক একটি পুস্তিকায় এটি ছাপ হয়েছিল। মুদ্রিত হয়েছিল মিলিয়নেরও বেশি কপি। হিটলার এর প্রকাশনা বন্ধ করে দেন।
ভিয়েনা স্টেট অপেরা হাউজ। ১৯১২ সালে আঁকা ছবি।
মাদার মেরি ও পবিত্র শিশু যিশু খ্রিস্ট। ছবিটি এঁকেছেন ১৯১৩ সালে।
অনেকে মনে করেন, হিটলারের ছবির শিল্পগত কোনো মূল্য নেই। কেবল হিটলার বলেই ইতিহাসে হিটলারের ছবি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।