সেই রবীন্দ্রনাথও নেই, সেই বিশ্বভারতীও নেই। আছে তবে কী? রবীন্দ্রনাথের ‘‘ইউটোপিয়া’’? বিশ্বভারতী নামে একটি প্রতিষ্ঠান আছে — যার একশো বছর পেরিয়ে গেলো। সমালোচনার চোখ দিয়ে বলতেই পারি, এইসব বিদ্যাপীঠ কবি-কল্পনামাত্র, বাস্তবে অসম্ভব! কিন্তু রবিঠাকুর তো বাস্তববিশ্বে কাজটা করেই দেখিয়েছিলেন। চেয়েছিলেন শিক্ষাদানের এমন এক পটভূমি — ধর্ম-সম্প্রদায়-সংস্কৃতির গণ্ডি পেরিয়ে যেখানে মিলবে সব।
অতিপ্রচলিত কিছু ধারণা ও বক্তব্য আছে বিশ্বভারতী বিষয়ে। এখানে গাছতলায় পড়ানো হতো/ হয়, কাজের কাজ কিছুই হয় নি/ হয় না; বিদেশি বিদ্যা শেখানো হয় নি/ হয় না। এখানে হিন্দুত্ববাদী জ্ঞান দেয়া হয়। সব চেয়ে জনপ্রিয় কথা হলো, রবীন্দ্রনাথের বিশ্বভারতী একটি ইউটোপিয়া, ইউটোপিয়া এবং ইউটোপিয়া। প্রশ্ন হলো : নিজেদের শক্তি, সাহস, কল্পনার ঘাটতিকে ঢাকতে গিয়ে ইউটোপিয়ার প্রলেপ মেখে দিচ্ছি না তো? যদি বলি পুঁজিবাদী, ভোগনির্ভর, কেবলই প্রয়োজননির্ভর বিদ্যাচর্চার বিরুদ্ধে গিয়ে স্বতন্ত্র একটি শিক্ষাক্ষেত্র তৈরি করতে চেয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ, যদি বলি বিদ্যাবিষয়ক রবীন্দ্রনাথের এই গ্র্যান্ডন্যারেটিভের সত্যিকার প্রয়োগ ও সমালোচনাই হলো না।
বাংলা অঞ্চলের দুর্ভাগ্য এই যে, পাত্তাই পেল না রবীন্দ্রনাথের প্রকৃতিকেন্দ্রিক, প্রকৃতির সঙ্গে সহাবস্থানমূলক শিক্ষার ধারণা, গুরুত্ব পেল না আনন্দের সঙ্গে শিক্ষার সম্পর্ক বিষয়ক আলাপ। কিন্তু খুব গুরুত্ব পেল বদ্ধ ঘরে টেকনোলজির বিরাট পর্দায় ঝোলানো শিক্ষা; খুবই গুরুত্ব পেল চিন্তার অচলায়তন — যেখানে একই জ্ঞানের বছরব্যাপী পুনরুৎপাদন ঘটে। পাত্তা পেল না, কৃষি-নন্দনতত্ত্ব-শিল্পকলা-চিকিৎসাবিজ্ঞান প্রভৃতির যৌথতা। কিন্তু রবীন্দ্রনাথকে তো ভাঙা গেল, রবীন্দ্রনাথের বাঙালিত্ব ধারণা তো ভাঙা গেল; বাঙালির জাতীয় চেতনাকে তো প্রশ্ন করা গেল। অথচ এই প্রশ্নের মীমাংসা কেউ দিলেন না যে, ‘বিশ্বভারতী’ বা রাবীন্দ্রিক শিক্ষাধারণার বিকল্প হিসেবে কী দিয়েছেন বাংলা অঞ্চলের শিক্ষাবিদরা? একটি গ্র্যান্ডন্যারেটিভকে প্রশ্ন করলেন, অথচ বিকল্প কিছু বললেন না, পোস্টমডার্ন এই চাতুরির অর্থ কী?
রবীন্দ্রনাথ বলছেন, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখ্য কাজ বিদ্যার উৎপাদন, তাহার গৌণ কাজ সেই বিদ্যাকে দান করা।’’ তিনি তো এও বলেছিলেন, ‘‘বিদেশী বিশ্ববিদ্যালয়ের নকল করিয়া হইবে না।’’ তাহলে তিনি কী চেয়েছেন? একান্ত স্বদেশি একটি শিক্ষার ক্ষেত্র, যা উদারভাবে গ্রহণ করবে সবাইকে। দেশি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সমালোচনাও করেছেন তিনি, ‘‘আমাদের নূতন বিশ্ববিদ্যালয়গুলি দেশের মাটির উপরে নাই, তাহা পরগাছার মতো পরদেশীয় বনস্পতির শাখায় ঝুলিতেছে।’’ আধুনিক শিক্ষার সমস্যা হিসেবে দেখিয়েছেন, শিক্ষার জনগণসংযোগবিহীনতাকে। রবীন্দ্রনাথের এই মূল্যায়ন আজও কি প্রাসঙ্গিক নয়? বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কোন ধরনের জ্ঞানচর্চা করছে? কোন বিশেষ জ্ঞান উৎপাদন করছে যা অভিনব, নতুন, জনমুখী, জনসম্পৃক্ত, কমিউনিটির সঙ্গে সম্পৃক্ত? রবীন্দ্রনাথ চেয়েছিলেন শিক্ষার সঙ্গে সর্বাঙ্গীণ জীবনযাত্রার যোগ।
আমরা প্রায়শ বিউপনিবেশী চিন্তার কথা বলি। বলি, ঔপনিবেশিক জ্ঞাততত্ত্ব থেকে বেরিয়ে এসে স্বদেশি চিন্তার উত্তরাধিকারকে প্রবাহিত করতে হবে, নিয়ে যেতে হবে প্রশস্ত পথে। কিন্তু সত্য এই যে, রবীন্দ্রনাথের ভাবনাগুলোকে শিক্ষার ক্ষেত্রে মোটেও প্রাসঙ্গিক এবং প্রায়োগিকভাবে বিবেচনা করা হয় নি — তা বাংলাদেশেই হোক আর ভারতেই হোক।
কেউ কেউ ভাবতে পারেন রবীন্দ্রনাথ বুঝি, দেশভূমির চার দেয়ালে শিক্ষাকে আটকে রাখতে চেয়েছিলেন। আদতে তা নয়; রবীন্দ্রনাথ বলছেন, ‘‘ভারতবর্ষের শিক্ষাব্যবস্থায় বৈদিক পৌরাণিক বৌদ্ধ জৈন মুসলমান প্রভৃতি সমস্ত চিত্তকে সম্মিলিত ও চিত্তসম্পদকে সংগৃহীত করিতে হইবে; এই নানা ধারা দিয়া ভারতবর্ষের মন কেমন করিয়া প্রবাহিত হইয়াছে তাহা জানিতে হইবে।’’
শিক্ষার মাধ্যমে রবীন্দ্রনাথ চেয়েছেন আত্মিক মুক্তি। কিন্তু সেই মুক্তি কি আমরা পেয়েছি? রবীন্দ্রনাথ বলছেন, ‘‘রাষ্ট্রনৈতিক তপস্যাকেই মুক্তির তপস্যা বলে ধরে নিয়েছি।’’ তার প্রমাণ আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে প্রচলিত রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার দাপট এবং শিক্ষকদের ক্রীতদাসবৃত্তি। এ ধরনের ব্যক্তি ও গোষ্ঠীর কাজ রবীন্দ্রনাথ খুব ভালোভাবেই প্রত্যক্ষ পেরেছিলেন, তাই এ কথা তিনিই বলতে পেরেছেন, ‘‘চাটুকারবৃত্তি বা চরবৃত্তির দ্বারা যেমন করে হোক অপমানের অন্ন খুঁটে খাবার জন্যে রাষ্ট্রীয় আবর্জনাকুণ্ডের আশেপাশে ঘুরে ঘুরে বেড়ায়।’’ আরেক দলের কাজ হলো, ‘‘বিদ্বেষবুদ্ধিকে তৃপ্তিদান করা।’’ রবীন্দ্রনাথ নিঃসন্দেহে শিক্ষা, বিশ্ববিদ্যালয় ও রাষ্ট্রীয় আবর্জনাকুণ্ডকে এক সাথে দেখতে চান নি; তাই তাঁকে গড়েপিটে নিতে হয়েছিল বিশ্বভারতীর ধারণা।
রবীন্দ্রনাথ শিক্ষা ও জীবিকাকে ভাবেন নি, এ কথা বলা যাবে না; কিন্তু জীবিকা বা পেট ভরাবার জন্যেই কেবল শিক্ষা নয়। তিনি চেয়েছিলেন শিক্ষা সম্প্রসারিত হোক প্রকৃতির ভেতর। তিনি বলছেন, ‘‘বিশ্বপ্রকৃতির আহ্বান।’’ আধুনিক বিশ্বে উজান-পথে চলা যে খুব সহজ নয়, রবীন্দ্রনাথ তা স্বীকার করেছেন; আধুনিক শিক্ষাপ্রণালির জাল দেশকে আটকে ফেলেছে। এর বিপরীতে অবস্থান নেয়া বেশ কঠিন একটি কাজ। তবু তিনি উল্টোস্রোতে ভেসেছিলেন। দেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে বলেছেন, ‘‘কৃপণ প্রয়োজনের দাসত্বে দাগা।’’ ঔপনিবেশিক উদ্দেশ্য ও প্রয়োজন থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান করার ইতিহাসও ররীন্দ্রনাথ ভুলে যান নি, ‘‘বিদেশী বণিক ও রাজা তাঁদের সংকীর্ণ প্রয়োজন-সাধনের জন্য বাইরে থেকে এই বিদ্যালয়গুলি এখানে স্থাপন করেছিলেন…।’’
অর্থাৎ রবীন্দ্রনাথ শিক্ষার ইতিহাস ও রাজনীতিকে আলাদা করে ভাবেন নি। এখন প্রশ্ন হতে পারে, বিশ্বভারতী কি ‘‘বিশ্বভারতী’’ আছে? জবাব হলো : রাবীন্দ্রিক আদর্শ টিকিয়ে রাখতে না পারার ব্যর্থতা নিশ্চয়ই মৃত ঠাকুরের নয়। তাছাড়া কতটুকুইবা পরীক্ষণের ভেতর দিয়ে গিয়েছে শিক্ষাবিষয়ক রাবীন্দ্রিক ধারণাসমূহ? আবার এ কথাও মনে রাখতে চাই, ঠাকুরের চিন্তায় অচলায়তনের সুযোগ নেই; বেঁচে থাকলে তিনি নিশ্চয়ই যুগের সঙ্গে তাল মেলাতেন। তবু রবি ঠাকুরকে অভিনন্দন জানাই, একশো বছর টিকে আছে তাঁর গড়া প্রতিষ্ঠান!
রবীন্দ্রনাথ তাঁর সময়ে আধুনিক ছিলেন সর্বতোভাবে। সর্বভারতীয় জীবনবোধের পরাকাষ্ঠা অন্বেষণ ও প্রদর্শন রবীন্দ্রসত্তার মৌল বৈশিষ্ট্য। কিন্তু রবীন্দ্রনাথকে ধারণ করতে ব্যর্থ হয়েছে ভারত ও বাংলাদেশসহ এ অঞ্চলের দেশগুলো। আজও আমরা রবীন্দ্রনাথকে বেচে খেয়ে চলেছিমাত্র। রবীন্দ্রনাথকে ধারণ করিনি। অশিক্ষা, কুশিক্ষা, কুসংস্কার, ধর্মনাশী ধর্মচিন্তা ও বিদ্বেষের অতলের যাত্রী হয়ে আছি আত্মবিনাশী এই বাঙালি।
রবীন্দ্রনাথের শিক্ষাভাবনা চমৎকার। আর বিশ্বভারতী নিয়ে তাঁর ভাবনাচিন্তাগুলো পাঠ করলে মনে হয় এর চেয়ে ভালো আর কিছুই হতে পারে না।
শুরু থেকেই বিশ্বভারতী নিয়ে অনেকের সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের মতান্তর, মনান্তর দুটোই ঘটেছে। দেশ-বিদেশের অনেক জ্ঞানী-গুণীজনের সমাবেশ ঘটেছিলো, সেটা বেশ জাহির করা করা হয়; অন্যদিকে এখান থেকে নিজেদের সরিয়ে নিয়েছিলেন এমন ব্যক্তির সংখ্যাও কিন্তু কম নয়। তাঁদের বিষয়ে আমরা নীরব থাকি।
রবীন্দ্রনাথের জীবদ্দশায় এখানে প্রাতিষ্ঠানিক ‘একনায়কতন্ত্র’ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো, যাকে চিত্রিত করা হয়, ওসব ছিলো প্রতিষ্ঠানকে রক্ষার স্বার্থে। ফলে এমন ব্যাপারও ঘটেছিলো যে কেউ-কেউ বলা শুরু করেছিলেন ওটা বিশ্বভারতী নয় বরং ‘বিশ্ব-বা-রথী’!
রবীন্দ্রনাথ নিজের ‘আসমানদারী’র কথা প্রমথ চৌধুরীর কাছে স্বীকার করেছিলেন। সেই আসমানদারীর একটা অনন্য নিদর্শন এই বিশ্বভারতী। একে এককথায় উড়িয়ে দেয়া যাবে না, সেটা অবশ্যই অনুচিত কাজ। তবে এর ইতিহাস ও কাজের বৈশিষ্ট্যের মধ্যে এমন কিছু ব্যাপার আছে, যা প্রচলিত বাস্তবতাকে অস্বীকার করে।
এই সমাজব্যবস্থার স্থিতিশীলতার পক্ষে থাকবো আবার নতুন শিক্ষা-ব্যবস্থা প্রবর্তনের জন্যে জীবনপাত করবো; পরিশেষে ফলের প্রাপ্তি দেখে হতাশ হবো—এমন একটি ব্যাপার রবীন্দ্রনাথের মধ্যে যুক্তিহীনভাবে বিরাজমান ছিলো। তিনি একা নন, তাঁর সঙ্গে আরও বেশ ক’জনার মধ্যে এই চেতনাটির বিস্তার ঘটতে দেখি। শিক্ষার খোলনলচে বদল করতে হলে প্রচলিত সমাজ-ব্যবস্থার বিপক্ষে গিয়েও যে দাঁড়াতে হয় কখনো-কখনো—এই সহজ সত্যটি রবীন্দ্রনাথ মাঝে-মধ্যেই স্বীকার করে নিতে নারাজ ছিলেন। তারই পরিণতি আজকের এই বিশ্বভারতী।
এই প্রতিষ্ঠানটির সার্বিক কর্মকাণ্ডের আজকের চিত্রটি দেখার সুযোগ পেলে রবীন্দ্রনাথ নিজেই নিজের শিক্ষাচিন্তার দেউলিয়াত্ব স্বীকার করে নিতেন। এই সততাটুকু তাঁর ছিলো। এখানেই তিনি তাঁর স্বদেশবাসীর চেয়ে আলাদা হয়ে উঠেন। হয়তো-বা স্বতন্ত্র।
বিশ্বভারতী যদি হয় রবীন্দ্রনাথের শিক্ষাচিন্তার সফলতার নাম, তাহলে সত্যের খাতিরে এটাও বলতে হয় যে, রবীন্দ্রচিন্তার এক সার্বিক ব্যর্থতারও নাম—বিশ্বভারতী!
আপনার লেখায় চিন্তার খোরাক আছে। ধন্যবাদ।
·
রবীন্দ্রনাথের শিক্ষাভাবনা চমৎকার। আর বিশ্বভারতী নিয়ে তাঁর ভাবনাচিন্তাগুলো পাঠ করলে মনে হয় এর চেয়ে ভালো আর কিছুই হতে পারে না।
শুরু থেকেই বিশ্বভারতী নিয়ে অনেকের সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের মতান্তর, মনান্তর দুটোই ঘটেছে। দেশ-বিদেশের অনেক জ্ঞানী-গুণীজনের সমাবেশ ঘটেছিলো, সেটা বেশ জাহির করা করা হয়; অন্যদিকে এখান থেকে নিজেদের সরিয়ে নিয়েছিলেন এমন ব্যক্তির সংখ্যাও কিন্তু কম নয়। তাঁদের বিষয়ে আমরা নীরব থাকি।
রবীন্দ্রনাথের জীবদ্দশায় এখানে প্রাতিষ্ঠানিক ‘একনায়কতন্ত্র’ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো, যাকে চিত্রিত করা হয়, ওসব ছিলো প্রতিষ্ঠানকে রক্ষার স্বার্থে। ফলে এমন ব্যাপারও ঘটেছিলো যে কেউ-কেউ বলা শুরু করেছিলেন ওটা বিশ্বভারতী নয় বরং ‘বিশ্ব-বা-রথী’!
রবীন্দ্রনাথ নিজের ‘আসমানদারী’র কথা প্রমথ চৌধুরীর কাছে স্বীকার করেছিলেন। সেই আসমানদারীর একটা অনন্য নিদর্শন এই বিশ্বভারতী। একে এককথায় উড়িয়ে দেয়া যাবে না, সেটা অবশ্যই অনুচিত কাজ। তবে এর ইতিহাস ও কাজের বৈশিষ্ট্যের মধ্যে এমন কিছু ব্যাপার আছে, যা প্রচলিত বাস্তবতাকে অস্বীকার করে।
এই সমাজব্যবস্থার স্থিতিশীলতার পক্ষে থাকবো আবার নতুন শিক্ষা-ব্যবস্থা প্রবর্তনের জন্যে জীবনপাত করবো; পরিশেষে ফলের প্রাপ্তি দেখে হতাশ হবো—এমন একটি ব্যাপার রবীন্দ্রনাথের মধ্যে যুক্তিহীনভাবে বিরাজমান ছিলো। তিনি একা নন, তাঁর সঙ্গে আরও বেশ ক’জনার মধ্যে এই চেতনাটির বিস্তার ঘটতে দেখি। শিক্ষার খোলনলচে বদল করতে হলে প্রচলিত সমাজ-ব্যবস্থার বিপক্ষে গিয়েও যে দাঁড়াতে হয় কখনো-কখনো—এই সহজ সত্যটি রবীন্দ্রনাথ মাঝে-মধ্যেই স্বীকার করে নিতে নারাজ ছিলেন। তারই পরিণতি আজকের এই বিশ্বভারতী।
এই প্রতিষ্ঠানটির সার্বিক কর্মকাণ্ডের আজকের চিত্রটি দেখার সুযোগ পেলে রবীন্দ্রনাথ নিজেই নিজের শিক্ষাচিন্তার দেউলিয়াত্ব স্বীকার করে নিতেন। এই সততাটুকু তাঁর ছিলো। এখানেই তিনি তাঁর স্বদেশবাসীর চেয়ে আলাদা হয়ে উঠেন। হয়তো-বা স্বতন্ত্র।
বিশ্বভারতী যদি হয় রবীন্দ্রনাথের শিক্ষাচিন্তার সফলতার নাম, তাহলে সত্যের খাতিরে এটাও বলতে হয় যে, রবীন্দ্রচিন্তার এক সার্বিক ব্যর্থতারও নাম—বিশ্বভারতী!
আপনার লেখায় চিন্তার খোরাক আছে। ধন্যবাদ।