পরাগ চৌধুরি মূলত অনুবাদক। বিভিন্ন ভাষার সাহিত্য অনুবাদ করেছেন বাংলায়। ভীষণ পড়ুয়া মানুষ তিনি। অভিজ্ঞতার ঝুলিও বিশাল বড়। এবার তিনি প্রবেশ করেছেন স্মৃতির অন্দরমহলে। স্মৃতি মানুষের বড় শক্তি। স্মৃতি ছাড়া ইতিহাস হয় না, স্মৃতি ছাড়া সাহিত্যও হয় না। পরাগ চৌধুরির এই স্মৃতিলেখা একই সঙ্গে স্মৃতি ইতিহাস ও সাহিত্য। চমৎকার তাঁর পর্যবেক্ষণ শক্তি, স্মৃতির বয়ান ছাপিয়ে গিয়েছে উপন্যাসের কাঠামোকেও।
আজ দুপুরের পরে খালাদের সাথে না গিয়ে নানুর বিছানো চাটির উপর দখল নিয়ে শুয়ে পড়ি। আজ গোছল শেষে খালারা চলে গেলে আমি প্রতিদিনের মতো নানুর জন্য ঘাটে অপেক্ষা করছি । এই পুকুরে এ বাড়ির মেয়েদের জন্য আলাদা ঘাট । যা বাঁশ পুঁতে আড়া বেঁধে তার উপর সুপারি গাছের পাতা — এরা বলে ছাডা তা দিয়ে পর্দার আড়াল করা আছে। সবাই চলে গেলে ঐ পাড়ে কেউ নাই দেখে নানু একা একা সাঁতরে মাঝ পুকুরে চলে গেল। তারপর দিলো ডুব। আমি সেদিকে তাকিয়েই আছি। অনেক্ষণ ধরে। মনোযোগ দিয়ে।
নানুর দীর্ঘ ও ঘন চুলের গোছা পানির উপরে বাতাসে নাচানো কাঁপা কাঁপা ঢেউয়ের সঙ্গে তাল ধরে দোল খাচ্ছে। কিন্তু নানুর ওঠার কোন লক্ষণ নাই। তখন আমার গলার ভেতর কান্না ডুকরে ওঠে। আমি ভয়ে চিৎকার করে উঠি। এই পুকুরেই হিন্দুবাড়ির উমার মতো নানুও জীবনের ভার আর সইতে না পেরে শেষ ডুব দেয়নি তো? আমার অঝোর কান্নার মাঝখানেই ভুস করে ভেসে উঠে চিৎ সাঁতার দিয়ে কি অনায়াসে তীরে ভেসে আসে নানু। পাড়ে উঠে কি কৌশলে সাদামেঘ রঙা শাড়ি বদল করে। মুগ্ধ হয়ে দেখি আমি। দূরের একটা অপরিচিত তারার মতো মনে হয় তাকে। আমার নানু সহজ সুন্দরী। সাজতে হয় না। ঠিক পুকুর পাড়ের ঋজু দীর্ঘ গাছগুলোর মতো। যাদের সারাদিন পুকুর মুকুরে নিজেকে দেখে দেখে সাধ মেটে না। তেমনি আমি নানুকে দেখি ।
একটু পরেই আধা পড়া বই হাতে নানু এসে বসে আমার পাশে। নাক টিপে বলে : কি রে আইজ ওদের সঙ্গে হাহা হিহি করতে গেলি না? মন খারাপ ঢাকার জন্য?
: নাহ। ভাল্লাগে না। আচ্ছা আজকে আপনি এতক্ষণ ডুব দিয়ে ছিলেন যে দম আটকে আসে নাই?
: না তো । দেখলাম দম বন্ধ কইররা কতক্ষণ থাকা যায় । খুব কঠিন । মরার সময় এমুনই লাগবো। পেকটিস করি মইধ্যে মইধ্যে । তুই ডরাইলি মনয়।
: নাহ। আচ্ছা নান্দাইল আপনার খলাতো বোনের বাড়ি কবে যাবেন?
: আরে আগে মঞ্জুর আসুক। খবরবারি শুনি। কালেঙ্গা যাওয়া লাগবো মনয়।
: আমিও কালেঙ্গা যাবো আপনার সাথে।
: তা কেমনে? তর ইস্কুল খুলবে তো।
: খুলুক। আম্মা কিছু বলবে না। আমি যাবই যাবো।
: পড়ায় পিছায় যাবি তো?
: না আমি বই নিয়ে আসছি। পড়তে থাকলাম নাহয়। ছোট মামা কবে আসবে?
: এই দুই তিন দিনের মইধ্যে।
: আচ্ছা নানু বাঁশবনের ঝরা পাতার উপর শুয়ে ঘুমানো যাবে? — সঙ্গে সঙ্গে ঘরের ভেতর কান পেতে আমাদের প্রত্যেকটা কথা শুনতে থাকা শিরি খালা জোরে গলা খাঁকারি দেয়। নানুর জবাব : শোয়া যাবে, কিন্তু তোর আবার এমন শখ হয় কেন? পাতার তলায় পোকা মাকড় পিঁপড়া কতো কি থাকে। এবার শিরি খালা যেন পেয়ারাকে ধমক দেয় : এই ছেরি চুপ করবি? — বুঝতে পারি ধমকটা আমাকেই দিচ্ছে।
: আচ্ছা নানু আমাদের ছোট বেলার সেই লালুকালুর গল্পটা মনে আছে? ঐ যে লাউয়া বুড়ি? রাজারানির গল্প আমার ভালো লাগে না। ঐ যে এক দেশে ছিল এক বুড়ি যার সাত কূলে কেউ নাই। যে তার নাম ভুলে গেছে । কিন্তু তবু বেঁচে আছে। বড় কষ্টের একাকী জীবন তার। কথা বলারো কেউ নাই দেখে নিজের সঙ্গেই কথা বলতো। তারপর?
: খুব মনে আছে। জীবন নিয়া তিতিবিরক্ত হইয়া একদিন সেই বুরি মামুর বারিত যাওয়া ঠিক করলো। কিন্তু যেই সে পোশাক আশাক গয়নাগাঁটি পইরা বারির বাইরে আসছে দেখে দুই ধামরা শিয়াল মহাখুশি হইয়া তারে কুর্নিশ কইররা কয় : কই যাইনগো খালাজি? আইজ পাইছি একলা। তযেমযে খাওন যাইবো। হুয়া হুয়া হুক্কা হুয়া । — ডরাইয়া তারাতারি গরো যায় বুরি। বুদ্ধি বিচরায় এই বিপদে। কতক্ষণ পরে শিয়ালরা দেখে বারের ভিতর থে একটা শুকনা লাউ গরাইয়া আসে দেউরিত। বুরি কই? রাগে গরগর করতে করতে এক শিয়ালে লাউয়েরে দেয় লাত্তি । লাউ গরাইয়া পরে পথে । শিয়ালরা বুরির জন্য অপেক্ষা করে।
এইদিকে এক হাটুইরা দেখে পথের মদ্যিখানে এক মস্ত সাঙ্কু লাউ। কতা কইন্যা গান গাউন্যা লাউ সুর ধরে : লাউয়ের ভিত্রে থাইক্কা বুরি পাকনা তেঁতুল খায়। একটা লাত্তি মারতো বুরি কত্ত দূরে যায়! গান শুইন্যা হাটুইররা হাসতে হাসতে দেয় এক লাত্তি।
লাউ গর গরাইয়া পথ বায়। এমনে তিন চাইরজনের লাত্তি খাইয়া বুরি মামুর বারির কাছাকাছি পৌঁছায় । ততক্ষণে শিয়ালের বুদ্দি ফিরে । হাদাইতে হাদাইতে ঘামতে ঘামতে শিয়াল আসে লাউয়ের কাছে । ইচ্ছা লাউ ভাইঙ্গা বুরিরে খায়। বুরি তহন
অন্য গান ধরে: মামুর বারির লালুকালু এরাতু ধর ধর। বুরির গলা চিন্না সঙ্গে সঙ্গে মামুর বারির মালেমস্ত দুই কুত্তা দৌরাইয়া আসে। শিয়াল পন্ডিত তহন কি আর করে। দুই ঠ্যাঙের নিচে নেজ্জাখান সান্ধাইয়া ভাগাতানি প্রাণ বাচানি।
আমি তখন ছোটবেলার মতোই হাহা হিহি হাসতে থাকি। নানু আমার কপালে হাত বুলাতে বুলাতে এবার ব্ইয়ের মধ্যে ডুবে যায়। আমি একসময় উঠে ঘরে যাই। শিরি খালা মুখিয়ে উঠে : তরে যে এতো শিখাইলাম তার কী? আইজ সব্বনাশ করতি তুই। গোপন কথা জিগাইতে হয় না। ল ইস্কুল বারি যাই। রানা ভাইয়ের কথা মনে আছে? তাদের বারিত আইজ সইন্ধায় তার ছুডু বইনের বিয়া। চল দেখি গিয়া। যাওনের সম রমারেও নেওন লাগবো।
রমাকে ওদের বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে আলপথ আর হালট পার হতে হতে দেখি চওড়া হালটের দুই ধার যেমন শাদা ফুলের দলকলস তেমন ফুলফুলি চোরকাঁটায় বোঝাই। : শিরি খালা দাঁড়াও, বলে আমি হালটের কিনারে বসে দলকলসের ফুল ছিঁড়ে চুষে চুষে মধু খাই। বাকিরাও আমার মতো মৌমাছির রিজিক ছিনতাই করতে লেগে যায়। একটু পরেই সবার মনে পড়ে সন্ধ্যার আগে বাড়ি ফেরার রুটিন। তাড়াতাড়ি হেটে আমরা ইস্কুলের চৌহদ্দিতে ঢুকে পড়ি। সেখান থেকেই বার বাড়িতে রান্না হতে থাকা মাংসের সুগন্ধ পাওয়া যায়। ইস্কুলের সামনেই একটা স্বচ্ছতোয়া পদ্মদিঘি। ঠিক মাঝখানের গভীরতায় শ্বেতপদ্মের একগোছা ঘনসবুজ পাতার জটলা। ফুল ফুটলে এই জটলার চার পাশটা কেমন যেন জ্যোতির্ময় হয়ে ওঠে। বাঁধানো ঘাটের পাশে আজো কিছু কচুরিপানা ভাসছে। ইস্কুল খোলা থাকলে আমরা ঘাটে বসে পানার মোটা পেট ছিঁড়ে শ্লেট মুছতাম। বন্ধ বলে ইস্কুল বাড়িটা কেমন যেন খাঁ খাঁ করছে। সামনের মস্ত উঠানে ঝরা আম পাতার স্তুপ। গত বছর পেয়ারা খালার সঙ্গে একই ক্লাসে বসতাম আমি। ঢাকায় থাকি আর শুদ্ধ ভাষায় কথা বলি দেখে বিনোদ স্যার একটু বেশিই আদর করতেন।
ইস্কুল পার হয়ে বাঁয়ে ঘুরে আমরা রানা ভাইদের বাড়িতে ঢুকি। উঠান ভর্তি রঙিন শাড়ির মেলা যেন। আনন্দ ঝলমল মেয়েদের বেশভূষা এ বলে আমায় দ্যাখ ও বলে আমায়। ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের দৌড়াদৌড়ি হুড়োহুড়ি আর রান্নার সুগন্ধে বাড়িটা যেন মাতোয়ারা। পুরা উঠানে মাথার উপর চাঁদোয়ার মতো সুতলিতে ঝোলানো নানা রঙের তেকোনা কাগজের নিশান। কনের ঘরের পিঁড়ায় পদ্মফুলের আলপনা আঁকা। আমরা সোজা ঢুকে পড়ি কনের ঘরে। ভিতরটা মহিলাদের কলকলানিতে মুখোর। কিন্তু বাড়ির সবার মুখের উপচে পড়া আনন্দের ছিটেফোঁটাও নাই কনে নাজমার অবয়বে। বরং আমাদের দেখে যখন সে তার বিহ্বল কোমলকান্তি মুখ তুলে ধরে তাকালো আমার মনে হলো যেন নির্বোধ ও অসহায় একটা কোরবানির পশু। নাজমা শিরি খালার চেয়ে একটু বড়ই হবে বয়সে। গত বছর তাকে শাড়ির আঁচল কোমরে কষে বেঁধে তরতরিয়ে পেয়ারা গাছে উঠতে দেখেছি। আজ তার দুই হাতে লাল রঙের মেহেন্দি। হলুদ মাখা মুখখানায় কাজলআঁকা একজোড়া বিষণ্ণ চোখ। কে একজন তার চুল আঁচড়ে দিচ্ছে।
হঠাৎ আমার নানুর বলা একটা ছড়া মনে পড়ে — পাতলা চুলি সোনার মেয়ে চুলের লাগি কান্দে,/ কচুপাতার ঢিপলা দিয়া আলগা খুফা বান্দে। শিরি খালা ও রমা মাসি খুব মনোযোগ দিয়ে নাজমার জামাই বাড়ি থেকে পাঠানো শাড়ি গয়না খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখে। দুই সখী ফিস ফিস করে কানে কানে কি বলে যেন হাসা হাসি করে। জামাই আসবে সন্ধ্যার পর। রমা ও শিরি খালার খুব ইচ্ছা থাকলেও আর দেরি করা যাবে না। আবার রানা ভাইয়ের ঘরে একবার ঢুঁ দিতে হবে।
গতবছর আমরা যখন ক্লাসে তখন রানা ভাইয়ের বাড়ি থেকে হঠাৎ বুকচেরা আর্তনাদ শোনা গেল। স্যার কিছু বুঝে উঠার আগে আমরা সব ছেলে মেয়ে হুড়মুড়িয়ে ছুটলাম ঐ বাড়ির দিকে। বাড়ির উঠানের বাইরে সুপারি গাছ ঘেরা একটা খোলামেলা জায়গা। ওখানে মাটি খুঁড়ে বানানো চুলার উপর লম্বা লম্বা বিরাট দুইটা লোহার কড়াই ভর্তি ঝোলাগুড়। এক কোনায় স্তুপ করে রাখা আখের ছিবড়া । পাশেই আখের রস বের করার মেশিন। তার পাশেই রানা ভাই তার দুই বছর বয়সী ছেলেটার নিস্তেজ ছোট্ট শরীরটা দুই হাতে বুকের কাছে ঝুলিয়ে ধরে স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে। বাচ্চাটার সারা শরীরে যেন ঝোলাগুড় লেপে দেওয়া। হঠাৎ দেখলে যে কারুর মনে হবে যে ইস্কুলের স্পোর্টসের দিন কেউ বুঝি যেমন খুশি তেমন সাজোর ভাস্কর্য হয়ে দাঁড়িয়ে। এদিকে লোহার কড়াইয়ের পাশে মাটিতে লুটিয়ে হাহাকার করে অঝোরে কাঁদছে আমেনা মামি। মাটিতে বসে তাকে জাপটে ধরে কাঁদছে রানা ভাইয়ের মা ও বোন। আমি দেখতে পেলাম সুপারি গাছগুলো যেন আস্তে আস্তে মাথা দুলিয়ে মৃদুমন্দ বাতাস দিয়ে বাচ্চাটার গায়ের তাপ কমিয়ে দেবার চেষ্টা করছে। যেন বাচ্চাটার বাবা মাকে সান্ত্বনা দেবার চেষ্টা করছে।
কিন্তু আজ সুন্দরী আমেনা মামি বিয়ে বাড়ির ঝলমলে পোশাকে যেন গল্পের সেই আলোমতি পরীবানু। কোলে মাসখানেক বয়সের ঘুমন্ত মেয়ে শিশু । আমরা তার ঘরে গেলে মামি শিরি খালার কাঁধে হাত জড়িয়ে টেনে ঘরের ওপাশে নিয়ে কি যেন বলাবলি করে দুজনেই হাসিতে গলে যেতে থাকে। মামি ছেলে হারিয়ে একটা মেয়ে পেয়েছে কোলে। মামি কি সেই নিষেধ না মানা প্রাণবন্ত দুরন্ত ছেলেটিকে ভুলে গেছে ? আমি এই উঠানে এখনো মায়ের শাসনের গন্ডি ভেঙে পালাতে থাকা হাস্যপর ভরপুর জীবনানন্দ শিশুটিকে স্পষ্ট দেখতে পাই। মস্ত উঠানের ওপাশে রান্নাঘরের টালি দেয়া চালের উপর বসে একটা আলুঝালু নিঃসঙ্গ কাক বিরামহীন ভাবে নালিশ জানানো সুরে তার কর্কশ স্বরে প্রাণপনে ডেকে চলেছে। নানু শুনলে অবশ্যই হুশহাশ করে তাড়াতে তাড়তে বলতো দূর হ অমঙ্গলের দূত। আলাই বালাই দূরে যাক। জীবন সুখের হোক। তার নিজের জীবনে সুখের দীর্ঘায়িত যাপন না হলেও আমার নানুর সবার জন্য মঙ্গল কামনা এমনই। সেখানে নানুর আত্মপর ভেদ নাই। এমন একটা কল্যাণকামী আকাশের মতো প্রশস্ত ও প্রশান্ত মন আছে তার। যার সংবাদ অনেকেরই জানা নেই ।
হালট ধরে চলতে চলতে আমার আবার ইচ্ছা হলো পথের কিনারে বসে দলকলসের মধু খাই। কিন্তু তা বলতেই রমা মাসি বাধা দেয়। : ভাগ্নিরে তাইলে আমার পিডে মাইয়ার আতের বর বর তাল পরার সুমো ধরিছ কইলাম। বারি ফিরতে দেরি অইলে এইডাই নিয়ম। তেওতো আইজ আইতো দিছে শিরি আছে দেইক্কা। — আলপথে উঠে শিরি খালার পিছনে হাটতে হাটতে বলি : শিরি খালা তুমি যে বলো বিয়ের সময় সবাই খুব খুশি থাকে তাহলে আজ নাজমাকে এমন কান্না কান্না দেখলাম কেন?
: কারণ তার পছন্দের ছেলের সাথে তার বাবা বিয়া দিতে না করে দিছে । এই জামাই নাজমা চায় না ।
: তাহলে ঐ পছন্দের ছেলেটার সঙ্গে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করে না কেন?
: ইশ কি কথার ছিরি । এত্তো সোজা না। এইসব বরদের বিষয়। তুই বুঝবি না। আরেকটু বর হইলে সবই বুঝে আইবো। বুজছস?
: তোমারও কি এমন পছন্দ আছে শিরি খালা? তোমার বিয়ের দিন তোমাকে নাজমার মতো দেখতে চাই না । হাসতে হাসতে বিয়ে করতে হবে। আচ্ছা বিয়ে না করলে কি হয়? — এমন সময় রমা মাসি আর পেয়ারা খালা একসঙ্গে চেঁচিয়ে উঠে
: ঐ দেখ ফইট্টা। ফইট্টা দৌরাইয়া যায় । ল ধরি তারে। — সঙ্গে সঙ্গে আমি আমি শাদা খরগোশটার পিছনে প্রাণপণে দৌড়াই । আর সবাই আমার পিছনে। বোকা খরগোশ আমাদের ফেরার পথেই আগ বাড়িয়ে তীরবেগে লাফিয়ে দৌড়ায়। আমরা সবাই মিলে হৈ হৈ করে তাকে তাড়া করতে করতে পুকুর কোনায় এলে সে এক লাফে ঢুকে পড়ে কবরখানায় । হাসতে হাসতে হয়রান আমারা এবার হেঁটে হেঁটে যার যার বাড়ির পথ ধরি ।
(চলবে)
পড়ুন ।। কিস্তি : ৫