বালুতট
বারবার আমি ঝাঁপিয়ে পড়ছি সমুদ্রে
অথচ জলস্রোত সরে যাচ্ছে দূরে,
না-ছোঁয়া সীমান্তে —
আর প্রতিবার
আমি হুমড়ি খেয়ে পড়ছি বালুতটে!
বালুতট, আহা বালুতট —
তোমারও তো আরেক নাম তৃষ্ণা।
তোমার ত্বক জুড়ে চিকচিক করছে ঘাম,
হৃৎপিণ্ড জুড়ে আগ্নেয়গিরির মগ্ন উত্তাপ —
ঠিক আমারই মতো।
যে থাকে ভীষণ ভেতরে প্রতিটি ক্ষণ
কলকল ধ্বনি যার রক্তে মাংসে হাড়ে
হাত বাড়ালেই তবু, দেখি সে সুদূর —
না-ছোঁয়ার নীল, উপুড় নয়নে অশ্রু টলোমল…
অন্তর্গত
একটি পাতা
ঝরাপাতায় ছিল,
অথচ তার
ঝরার কথা নয়।
একটি আঙুল
আঙুল ছুঁয়ে দিল,
অথচ তার
সারা নোখে ভয়!
প্রতিচ্চিত্র
ছায়ার ওপর ছায়া ঢেলে দিয়ে
হামের রুগীর মতো দাঁড়ায় আকাশ
সারা গায়ে গুটিগুটি তারা…
যারা এই রাত্রি দেখে
নোনা তৃষ্ণায় ছুড়েছিল জিভ
সংকলিত মাংস নিয়ে তারা সব আলোর সাম্পান
ছায়াবীজ ছাড়ায়, ছিটায় —
নদী-গ্রীষ্ম-শালদুধ ওষুধের মতো গিলে
আমাদের শৈশব তবুও স্থির,
নিম পাতা সারা গায়ে।
ধুলো-গোত্র ছায়াদের হাতে আজ বল্লম,
ধাতব শহুরে দাঁতে শুয়ে আছে সারি সারি
জীবিত ফসিল।
শিরোনামহীন*
১
এখনো তোমার শরীরে নাচের ঘ্রাণ
কত শত ঢেউ আছড়ে পড়ছে তীরে
তার থেকে শুধু একটি ঝিনুকই নেব
অম্লান এক মুক্তা যেখানে ফোটে
সেখানেই প্রেম। দূরতম দূরে থেকে
বাতাসের কানে বোলো শুধু :
ভালোবাসি।
২
দেবো না দেবো না বোলে
দিয়ে দিলে আধেক জীবন–
যতোটুকু দেয়া যায়
নিকটে না এসে, দূরে থেকে।
দূর চন্দ্রিমার ছায়া
ভেসে থাকে সমুদ্রে যেমন
তেম্নি মিশে আছো শ্বাসে–
প্রিয় নাম রক্তে মাংসে লিখে।
* কবিতা দুটির কোনো শিরোনাম ছিল না। হতে পারে অসমাপ্ত কবিতা।