মার্চার ল্যাংস্টোন হিউজ (১৯০১-১৯৬৭) ব্ল্যাক আন্দোলনের পুরোধা। একাধারে কবি, অ্যাকটিভিস্ট, ঔপন্যাসিক, নাট্যকার। জন্ম মিজৌরিতে। পরে নিউইয়র্ক আসেন। তিনি Jazz Poetry এবং Harlem Renaissance সাহিত্যান্দোলনের জন্য খ্যাত। হিউজ কালোদের জন্য আলাদা প্রতিষ্ঠানের বিরোধী ছিলেন। হিউজের বেশ কিছু কবিতা অনুবাদ করেছেন মাজহার জীবন। তার প্রথম পর্ব প্রকাশিত হলো। আরও দ্বিতীয় পর্ব প্রকাশ করা হবে দ্রুতই।
ধীরে চলো
কুকুরের কামড়
যখন দ্রুত
ওরা বলে, “ধীরে চলো”।
আমি শুনি, “ধীরে চলো”,
ওরা দরোজা বন্ধ করার সময়
আমাকে বলে :
“তুমি এখানে খাবার পাবে না!
তুমি এখানে বাস করতে পারবে না!
তুমি এখানে কাজ করতে পারবে না,
হাঙ্গামা করো না কোন! অপেক্ষা করো!” —
যখন আমি কাজ ছাড়া ক্ষুধায় মৃত্যুর মুখে
তখন আমি কি ঈশ্বর ভাববো নিজেকে,
নাকি মাথায় জ্যোতির্বলয় আর
ডানাওয়ালা দেবদূত ভাববো নিজেকে?
আমি কি মাফ করে দেবো
আর বশংবদ বেঁচে থাকবো
ধীরে চলে, ধীরে চলে, ধীরে চলে
ধীরে চলে, ধীরে ধীরে চলে
ধীরে চলে, ধীরে চলে
ধীরে চলে,
ধীরে চলে,
ধীরে চলে,
????
???
??
?
কালো মজুর
মৌমাছিরা কাজ করে।
তাদের থেকে তাদের কাজ কেড়ে নেয়া হয়।
আমরা মৌমাছিদের মতই —
কিন্তু এমনি করে অনন্তকাল
চলতে পারে না।
ইতিহাস
অতীত হলো
রক্ত আর বেদনায় গাথা।
আগামী দিনেও
তা সত্যি হতে পারে না
দক্ষিণের কাছে খোলা চিঠি
দক্ষিণের সাদা মজদুরেরা —
খনিমজুর
কৃষক
ম্যাকানিক
মিলমজুর
দোকানের নারী মজুর
রেল মজুর
ভৃত্য
তামাক মজুর
বর্গাচাষী
অভিবাদন গ্রহণ করো!
আমি এক কালো মজদুর,
আমার কথা শোনো :
এই দেশটা আমাদের হতে পারতো।
হার্লান, রিচমন্ড, গ্যাস্টোনিয়া, আটলান্টা, নিউ অরলিয়ন্সের
খনি, কারখানা আর অফিস-টাওয়ার;
আর স্থাপনা, রাস্তাঘাট এবং ক্ষমতার ঘুটিগুলো
আমাদের হোক।
“আঙুলগুলোর মতো আলাদা”
বুকার টি’র এ বয়ান এসো ভুলে যাই আমরা।
তার বদলে এসো
তোমার হাত আর আমার হাত মিলে
আমরা এক হই।
এ একতাবদ্ধ হাত —
অতীতের মৃত অন্ধবিশ্বাস চূর্ণবিচূর্ণ করে দেবে —
মিথ্যা বর্ণব্যবস্থাকে হত্যা করবে
যা ধনীদের ক্ষমতায় বসিয়েছে
আর আমাদের সময়-ঘড়িতে বেঁধে রেখেছে
অসহায়, বোকা, বিচ্ছিন্ন
আর একাকী করে রেখেছে আমাদের,
এখনও জাতির বিরুদ্ধে দাঁড় করিয়েছে জাতিকে,
কারণ একজন কালো,
আর আরেকজনের মুখ সাদা।
এসো আমরা নতুন শিক্ষা নিই —
সকল মজদুর মিলে
নতুন জীবন গড়ে তুলি,
একটা ইউনিয়ন বানাই:
যতক্ষণ অতীতের সব ভুল
ভবিষ্যৎ দিয়ে পুড়ে না যায়।
এসো সবাই এক হই আর ঘোষণা দিই:
“আমরা সবাই ভাই ভাই, সাদা কিংবা কালো
এখন থেকে তোমরা আমার বোন!”
আমি চাই না উত্তরে আর কোন গণ-অভিবাসন।
বরং শক্তি আর ক্ষমতার অভিবাসন হোক
টুসকেজিতে টাওয়ারে উড়ুক নতুন পতাকা!
গণপিটুনিতে দেখা প্রতিটি গাছে উড়ুক মুক্তি লেখা পোস্টার,
কারণ, হে গরিব সাদা মজুর,
তোমরা হাত মিলিয়েছ আমার সাথে।
আগে জানতাম না আমরা ভাই ভাই।
এখন আমরা জানি!
এই ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে
শক্তি বাড়ুক আমাদের!
আমরা জানতাম না
আমরা শক্তিশালী।
এখন আমরা জেনেছি
একতাতেই আমাদের শক্তি।
এই একতাই হোক আমাদের শক্তি
ভেঙে ফেলুক সময়-ঘড়ি,
ঘুচিয়ে দিক দুঃখ-দুর্দশা,
কেড়ে নিক জমিজলা,
কেড়ে নিক কারখানা,
কেড়ে নিক অফিস-টাওয়ার,
কেড়ে নিক হাতিয়ার, ব্যাংক আর খনি।
কেড়ে নিক রেললাইন, জাহাজ আর বাঁধ
যতক্ষণ না দুনিয়ার সব শক্তি আমাদের হয়।
সাদা মজুর
এই নাও আমার হাত।
আজ থেকে আমরা
সবাই সমান মানুষ।