মার্চার ল্যাংস্টোন হিউজ (১৯০১-১৯৬৭) ব্ল্যাক আন্দোলনের পুরোধা। একাধারে কবি, অ্যাকটিভিস্ট, ঔপন্যাসিক, নাট্যকার। জন্ম মিজৌরিতে। পরে নিউইয়র্ক আসেন। তিনি Jazz Poetry এবং Harlem Renaissance সাহিত্যান্দোলনের জন্য খ্যাত। হিউজ কালোদের জন্য আলাদা প্রতিষ্ঠানের বিরোধী ছিলেন। হিউজের বেশ কিছু কবিতা অনুবাদ করেছেন মাজহার জীবন। তার প্রথম পর্ব প্রকাশিত হলো। আরও দ্বিতীয় পর্ব প্রকাশ করা হবে দ্রুতই।
হার্লেম
মুলতবী স্বপ্নের ভাগ্যে কী জোটে?
স্বপ্ন কি শুকিয়ে যায়
রোদে পোড়া কিশমিশের মতন ?
নাকি ও খিতখিতে ঘা —
ফেটে পুঁজ হয়ে বেরোয়?
নাকি দুর্গন্ধ ছড়ায় পচা মাংসের মতন ?
নাকি বসে থাকতে থাকতে বেচারা স্বপ্নের
মিষ্টি সিরাপের মতন চচ্চড়ে পরত পড়ে যায়?
এমনও হতে পারে —
ভীষণ ভারে সে স্বপ্নের বেহাল দশা।
নাকি সে স্বপ্ন ফেটে পড়বে প্রবল আক্রোশে?
নিগ্রোর নদী বিষয়ক সংলাপ
অনেক নদীকে জেনেছি আমি:
পৃথিবীর বয়সের মতন প্রাচীন —
মানব-ধমনীতে বহমান রক্তধারার চেয়েও প্রবীণ
কত যে নদীকে জেনেছি আমি।
নদীর মতন গভীর-বিকাশ আমার আত্মার
সৃষ্টির পর ভোরেরা যখন নবীন ছিল
আমি ইউফ্রেতিসে নেয়েছি তখন।
কঙ্গোর কূলে গড়েছি আমার কুঁড়েঘর
তার ঘুমপাড়ানি গানে গানে ঘুমিয়েছি আমি।
দেখেছি নীল নদ গভীর মগ্নতায় —
আর দেখেছি পিরামিডের গড়ে ওঠা।
এব লিঙ্কন যখন নিউ অরলিয়ন্সে যায়
মিসিসিপির গান আমি শুনেছি তখন
আর দেখেছি তার কর্দমাক্ত-বুক
সূর্যের আভায় কেমন স্বর্ণালি রূপ নেয়।
অনেক নদীকে জেনেছি আমি:
প্রাচীন, গোধূলিলগ্ন অনেক নদীকে জেনেছি আমি
নদীর মতন গভীর-বিকাশ আমার আত্মার
স্বপ্ন
স্বপ্নের মৃত্যু হলে —
জীবন উড়তে না পারা
ডানা-ভাঙা এক পাখি
স্বপ্ন আঁকড়ে ধরো দৃঢ়তায়।
স্বপ্ন ঝরে গেলে —
জীবন তুষারে জমে যাওয়া
এক বিরান মাঠ
স্বপ্ন আঁকড়ে ধরো দৃঢ়তায়।
আমিও
আমিও গাই আমেরিকার জয়গান।
আমি তোমাদেরই কালো এক ভাই।
যখন ওদের পেয়ারের দোস্তরা আসে
ওরা আমাকে খেতে দেয় হেঁসেলে,
আমি বরং হাসি তখন,
তবে পেট ভরে খাই,
আর নাদুসনুদুস হই।
আগামীতে,
যখন তাদের মহব্বতের দোস্তরা আসবে
আমি খাবো টেবিলে।
তখন
সাহস দেখিয়ে
কেউ বলতে পারবে না
“হেঁসেলে গিয়ে খাও।’’
এছাড়া,
তারা দেখবে কত সুন্দর আমি
আর পাবে লজ্জা —
আমিও আমেরিকা।