সখীচরণ সমাচার

নাম তাঁর সখীচরণ হালদার। পেশায় মাছ বিক্রেতা। কখনো দোকানে বসেন, কখনো ফেরি করেন। আরও একটা নাম আছে তাঁর — মনোরঞ্জন। তিরিশ বছর ধরে জড়িয়ে আছেন মাছের সঙ্গে। সখীচরণের জীবন, জগত, বাংলাদেশ, মাছ, নদী, গাছ — নানা কিছু নিয়ে কথা হলো।

 

সহজিয়া : আপনারা আগে কোথায় ছিলেন? এখানেই ছিলেন?

সখীচরণ : হ।

সহজিয়া : পূর্বপুরুষ কোথায় ছিল?

সখীচরণ : ধামরাই থানা। আনন্দনগর।

সহজিয়া : বাপ-দাদা সবাই?

সখীচরণ : আসলে ধরা যায়, তাইলে, আছিল আপনের ওই সিংগাইর থানা — বাপ-দাদা ওয়ানথে ইন্ডিয়া গেছিল। ইন্ডিয়া থেইকা আইছিল, অইল আপনের হের বইনের বাড়ি। বইনের বাড়ি অইছে আনন্দনগর।

সহজিয়া : তাইলে মূল বাড়ি ইন্ডিয়ায়? নাকি মূল বাড়ি এইখানকায়?

সখীচরণ : এই জাগায়।

সহজিয়া : ইন্ডিয়াতে গেছিল ক্যা?

সখীচরণ : ইন্ডিয়াতে গেছিল আপনের যে, ওই জায়গায় যদি কিছু করতে পারে। সবাই মিইলা গেছিল।

সহজিয়া : বাবারা, না দাদারা?

সখীচরণ : বাফও-দাদাও।

সহজিয়া : কত সনের দিকে?

সখীচরণ :এইডে অনেক আগে। হেসুম আমরা অই নাই। আমার বাপে বিয়াও করে নাই।

সহজিয়া : তাই? ওইডা কি ব্রিটিশ আমল? না পাকিস্তান আমল?

সখীচরণ : পাকিস্তান আমল। আর ওনথে যখন হের বইনের বাড়ি আসল, হেরে বিয়া করাইছে হের বইনের বাড়ি থেইকে। আমার দাদার বাড়ি অইছে ওই চাকল গেরামে। সবাই এক জাগারই।

সহজিয়া : বাংলাদেশের থেকে ইন্ডিয়াতে গিয়ে লাভ কী হইত?

সখীচরণ : যার কিনা ইমরাও আছে ধনসম্পত্তি, তার উমরাও আছে। যার ইমরা কিছুই নাই, তার উমরা হের কিছুই নাই।

সহজিয়া : এখনও?

সখীচরণ : এখনও। অহনও আমার যুদি থাকে দশ কুটি ট্যাকা, উমরা আমার হেই দশ কুটি ট্যাকাই আছে। এইডাই মুনে করেন। আর যার কিনা এমুরা দশ ট্যাকাও নাই, হের ওমুরা দশ ট্যাকাও নাই।

সহজিয়া : মানে ওইটা কি নিরাপত্তার জন্য করে? যে এই দেশে কহন কী হয়!

সখীচরণ : হ হ…

সহজিয়া : যদি দরকার পড়ে তহন ওই দেশে গিয়া থাকতে পারবে…

সখীচরণ : যদি সুযোগ সুবিধা পায়।

সহজিয়া : আগে যেই রকম যখন বাবরি মসজিদ ভাঙল তখন….

সখীচরণ : তখন আমার বয়স তের চৌদ্দ।… চৌদ্দ পনর

সহজিয়া : সেই সময় অনেকে ইয়েতে চলে গেছে না… ইন্ডিয়াতে চলে গেছে।

সখীচরণ : হ, অনেকেই গেছে।

সহজিয়া : আর তো ফিরে নাই মনে হয়?

সখীচরণ : নাহ। ফিরছে দুই-চাইরজন ফিরছে।

সহজিয়া : আপনারা আসলে জাতিতে কী? রাজবংশী? নাকি?

সখীচরণ : নাহ, হালদার।

সহজিয়া : আগে না এই এলাকায় রাজবংশী ছিল?

সখীচরণ : রাজবংশী আছে।

সহজিয়া : আছে?

সখীচরণ : হ। রাজবংশী অহনও আছে।

সহজিয়া : রাজবংশীদের পেশা কী?

সখীচরণ : পেশা হেই একই। মাছ বিক্রি করা, মাছ দরা।

সহজিয়া : তিরিশ বছর যাবত মাছ বিক্রি করেন?

সখীচরণ : হ।

সহজিয়া : আপনাদের কি পৈত্রিক পেশা মাছ বিক্রি? দাদাও বিক্রি করত?

সখীচরণ : তারা মাছ বিক্রি করত। বড় বড় বানজাল বাইত। ইলিশ দরত।

সহজিয়া : কোথায়?

সখীচরণ : এইডা অইল পদ্মায়। হেরা পদ্মায় বেশি থাকত। মাছ দরত। হেরা টিন পাইতা কাইটা ইলশা মাছ নিত বাইত।

সহজিয়া : এহন বিলের কী অবস্থা? বিলে মাছ পাওয়া যায় না তো…

সখীচরণ : বিলে পচা দেইখে মাছ উৎপাদন কম হয়। পোনা যদি উৎপাদন না করেন মাছটা বাড়ব কই থেইকা? গুড়া মাছ তো দরবার গেলে নাই-ই।

সহজিয়া : আগে যহন মাছ পাইতেন, তহন তো দেশি মাছ বেশি পাইতেন।

সখীচরণ : হ, বেশি পাইতাম।

সহজিয়া : এখন চাষের মাছ যে….

সখীচরণ : অহন চাষের মাছ বেশি, বিলে মাছ কম। সব জাগায় এলাকায় পুকুর আছে। ওই সিন্দুরিয়া বিলের মাছ ভালো। আর এই যে, বর্ষাকালে মাছটা ভালো পাওয়া যায়। এই তো আর এক মাস, এক মাস পর আর বিলের মাছ খাওন যাবো না। গন্দ অই যাব… ওই পানি এক্কেরে কালো।

সহজিয়া : গার্মেন্টেসের পানির কারণে এই রকম হইতাছে?

সখীচরণ : এই রকম হইতাছে।

সহজিয়া : এই করোনার সময় আয় রোজগার কি কমছে? নাকি স্বাভাবিক মোটামুটি?

সখীচরণ : অহন যে, একবারে যে কমছে তাতো ধরন যাইব না। স্বাভাবিক আছে।

সহজিয়া : পড়ালেখা করছিলেন কিছু?

সখীচরণ : নাহ করি নাই।

সহজিয়া : কিছুই করেন নাই?

সখীচরণ : না, স্যার আমি তিন দিন স্কুলে গেছি।

সহজিয়া : তিন দিন স্কুলে গেছেন… হা হা হা… কোন স্কুলে?

সখীচরণ : এইডে অইছে আনন্দনগর স্কুল।

সহজিয়া : পড়ালেখা ছাড়লেন কেন?

সখীচরণ : ছাড়ছি, তখন অভাব ছিল। সত্য বলতে কি… আমার মায় আপনে গো স্বজাতি বাইতে কাজ করছে। কাজ কইরা আমাগো খাওয়াইছে।

সহজিয়া : কে কাজ করে…

সখীচরণ : আমার মায়। যহন আমরা ছোট, তহন আমি আট বছর, দশ বছর।

সহজিয়া : কোথায় কাজ করছে?

সহজিয়া : আপনে গো স্বজাতি বাইতে। হেরা লোক বালো আছিল। হেগো পোলারে যেরকম দেখছে আমাগোও সেরকম দেখছে।

সহজিয়া : পড়ালেখা যে ছাড়লেন পরে আর কোনোভাবেই করলেন না…?

সখীচরণ : তহন আমি এক কাজে গেছিলাম স্যার। তহন গেছিলাম ফার্নিচারের কাজে। ওই জায়গায় চিয়ার টেবিলের এক সিজন কাজ করত, মেলার সময়। কাছির আছারি বানাইত। পরে হেই কাজ ছাইড়া থুইয়া আয়া পড়লাম।

সহজিয়া : ক্যান?

সখীচরণ : এক সিজনে তো আর কাম শিখা যাবো না।

সহজিয়া : যে এলাকাটায় থাকেন, সেই এলাকার নাম কী?

সখীচরণ : চাকল গেরাম। গোপীনাথপুর আছে। অহন যেমন চাকল গেরাম কয়েকটা ভাগ হইছে। যেমন মাঝিপাড়া চাকল গেরাম। নতুন পলট করছে ওইডার নাম দিছে বংশাই টাউন।

সহজিয়া : ওইখানে তো হিন্দু-মুসলমান নানা রকম মানুষ থাকে। কোনো সমস্যা হয় না তো?

সখীচরণ : না, এমনি কোনো সমস্যা নাই। সবাই মিইলা জিইলাই আছি। আর… এক জাগায় থাকলে তো একটু কমবেশি লাগবোই। এইডা কি রাগ কইরা থাকন যাইব।

সহজিয়া : দূর্গাপূজা হয় ওইখানে?

সখীচরণ : হয়। পূজা হইত দুইডে, তিনডে কইরে দুইডে কইরে পূজা অইত। ইবের একটা অইব।

সহজিয়া : একটা, কারণ কী?

সখীচরণ : পুলাপানে যে একটা পূজা করত সেইডে অইব না। পুলাপানে যে সমিতি করত, টেকা তুলত, টেকা তুলা বন্দ, পূজা এহন বন্দ অইছে।

সহজিয়া : কারিগর নিয়ে আসেন কই থেকে?

সখীচরণ : কারিকর আছে আমগো ওই জায়গায়ই। পূজাডা বন্দ অইছে কারণ জাগার অভাব। তিন বছর দুই বছর যাই করল, অন্য মাইনষ্যের জাগায় করছে। এহন জাগা যদি কেউ দেয় তাইলে পূজা করবার পারব। তাছাড়া করার মতন ক্যাপাসিটি নাই।

সহজিয়া : এই যে বাংলাদেশে যে মাছ নাই, এইটার মূল কারণ কী মনে হয় আপনার?

সখীচরণ : একমাত্র মূল কারণ হইছে গার্মেন্টেসের যে পানিডে নামে ওই পানিডা আপনের কিচ্ছু করন যায় না। আপনে নদীতে দিবেন নদী সুইদ্দে মনে করেন কালা হয়ে যাবে। নদীর পানিতে যে একটু আত দুইবেন, আত তো দূরের কতা কাছেই যাওন যায় না।

সহজিয়া : আপনারা আগে নদী কেমন দেখছেন? এই বংশাই নদী।

সখীচরণ : আগে নদী ডালিমের রসের মতন পানি আছিল। আমরা ওই নদীর জল দিয়া ভাত রাইন্দা খাইছি, যহন জাল বাইছি, পানি খাইছি। নদীর পানি দিয়া বাত রাইন্দা খাইছি, পানি খাইছি।

সহজিয়া : আপনারা বাজারটাজার করতেন কই?

সখীচরণ : বাজার নয়ারহাটে করতাম, আর উমরা — ওই যে সাভার।

সহজিয়া : যাইতেন কী দিয়ে? তখন কি নৌকা চলত বেশি?

আমরা তো ডেউয়ে থাকার পারি নাই। সাভারে এক সময় মঙ্গলবার আইলে ডেউয়ের নিগা থাকন যায় নাই। ওইযে শ্যালো গেছে, ট্রলার গেছে। পাছ মিনিট পরপরই মনে করেন আছেই।

কোত্থেকে এতো মানুষ আসত?

আগে সাভারে তো অনেক এলাকার মানুষ আইত। ব্যবসায়ী। ব্যবাসায়ী বেশির ভাগ। আপনের দল্লা, ওদিকার মানুষ সাভারের হাটটা বেশি করত। হেরা ধানের ব্যবসা করত, চাইলের ব্যবসা করত।

বিল কি আর বিলের মতো আছে?

হে বিল নাই। খাল বইরা গার্মেন্টস কইরা হালতাছে।

আগে তো গাছপালা ছিল, নদী ছিল। গাছপালা নিয়ে কী করা যাইতে পারে?

যত গাছ কম কাটব, তত অক্সিজেন বিদ্দি পাইবো। আর আপনি যদি একটা গাছ কাটেন, তিনডা লাগাইতে অইবো। এহন গাছ কাইট্যা যদি পুরা বাগান খালি কইরা হালান তাইলে তো অক্সিজেন কম পাওয়া যাইব। আর আপনার তাপমাত্রাও বেশি থাকব।

আপনাদের এলাকায় গাছ ছিল অনেক?

গাছ ছিল।

কী গাছ হারায়া গেছে? এখন আর দেখেন না এরকম…

অনেক গাছই হারায়া গেছে।… অনেক গাছ ছিল অহন তো মনে করেন পুরা খালি। যে গাছাগাছালি আছিল এহন মনে করেন পুরাডাই ধুয়া, পরিস্কার। অহন থাকনের মদ্যে দুই-একটা কাঠল গাছ আছে, পঞ্চাইশ ষাইট বছর আগের দুই-একটা। এই সমস্ত দুই-একটা গাছ আছে। তাছাড়া নতুন কইরা যে গাছ লাগাইছে, হে গাছ দেহি নে। অহনে মানুষ যাই করছে ওই যে মেহগনি গাছ, জাগা পইরা রইছে, দুই-চাইরটা বা পঞ্চাইশটা লাগায়া থুইছে। এছাড়া আমি আর কিছু দেহি নে।

আপনার মুক্তিযুদ্ধের কথা মনে আছে?

মুক্তিযুদ্দের সময় আমি দুই বছরের কুলে। তিন বছর অইব। তহন আমার মায়, কাজ ছিল। তো বম পড়ে না…? আমি কইতাম, মাগো গমা পড়ে। ইডা আমার পুরাডাই মুনে আছে। যহন ফুটে তহন…

তহন থাকতেন কই?

ওই একই জায়গায়।

মুক্তিযুদ্ধের এই পুরো সময় বাপ-মা এইখানেই ছিল? নাকি ইন্ডিয়াতে গেছিল?

এইখানেই ছিল। আমার মায় ইন্ডিয়াতে যায় নাই। আমার বাপে বিয়া করার আগে গেছিল।

যুদ্ধের ডরে ভয়ে…? এইখানেই ছিল?

এইখানেই ছিল। আমরা কুনো জায়গায় পলাই নাই।

ইন্ডিয়াতে গেছিলেন কখনো?

নাহ। যাই নাই।

বাংলাদেশের কোন কোন জায়গায় গেছেন?

আমি একমাত্র গেছিলাম, আমার মামাতো ভাই যে একটা বিয়া করাইছে, দুই বছর আগে তহন আমি শক কইরে গেছিলাম ওই বডারটা একটু, তাই আমি… বর্ডার দেইক্যে আইছি।

বর্ডার দেখছেন? কোনখানে?

এইডে হইছে আপনের শুলকি। স্ট্যান্ডের নাম।

কই এইটা?

উত্তর দিনাজপুরের এই দিকে আর কি। জায়গার নাম শুলকি। দামুরহাট। দামুরহাটের থেকে একটু পুব দিক।

যাওয়ার ইচ্ছা নাই?

আমার আর ইচ্ছা নাই। ইচ্ছা থাকলে তো বাব-মায় আগেই গেত। একবার যহন যায়া ছেক খায়া আইছে আর যাওনের চিন্তা করে নাই।

ওহ, ওইখানে গিয়ে ভালো বন্দোবস্ত করতে পারে নাই?

নাহ।

এমনি কেউ আছে? আত্মীয় স্বজন?

আত্মীয়স্বজন আছে। আমার শরিক বাই আছে। আর আত্মীয়ের মইদ্যে আছে অইল আমার ফুফাত বাই-ভাইস্তে-ভুইস্তে আছে। পিশাত বুইন আছে। আর আমার জ্যেঠাত ঘরের ভাই ব্রাদার আছে। এই তো আত্মীয়। আমাগো শরিকের মইদ্যে।

এই পূজায় কী করবেন? পরিকল্পনা কী?

এই পূজায় পরিকল্পনা… আমাগো সমাজে নাই, কিন্তু আরেক সমাজে আছে, ওই… যায়ে অনেক জাগায় ঘুইরে মুইরে পূজা ঠাকুরমাকুর দেকমু।

ছোটবেলার পূজার কথা মনে পড়ে? কী করতেন?

হেসুম তো আরও, তহন তো পূজা আরও বেশি অইছে। তহন আনন্দ আরও বেশি অইছে।

কী করতেন? সিনেমা টিনেমা দেকতে যাইতেন?

সিনামা দেকতাম আগে।

কই দেকতেন?

দেকতাম আমগো সাভার দেকতাম। আর আমগো ধামরাই। দুনোডা হল অহন ভাইঙ্গে হালাইছে। গুলবাহার আছিল। আগে তো সবাই মিলা দেকছি। মা-বইন সবাই। এহন হে ছবি দেহার জো কই।

বাড়িতে টিভি আছে?

হ, টিভি আছে।

টিভি দ্যাহেন?

দেহি।

টিভিতে কী দ্যাহেন?

টিভির মইদ্যে আমি স্যার খবরডাই বেশি দেহি। খবরডা দেহি, টকশোডা দেহি। আবার যদি সংসদ হয়, তাইলে একটু…

টকশো দ্যাহেন ক্যান?

দেহি। বাল্লাগে দেহি। অনেক কিছু হুনন যায়, বুজন যায়।

এই যে বাংলাদেশে যে, নারী-নিপীড়ন-নির্যাতন ধর্ষণ যে বাড়ছে, এইটা নিয়া আপনার বক্তব্য কী?

এইডা মনে করেন খুবই খারাপ। জঘন্য। বিচারডা যদি স্বাধীনভাবে থাকত, তে এই ধরনের কাজ করতে পারত না কেউ, সাহস পাইত না।

বিচারটা যদি ঠিকভাবে হইত?

যদি ঠিকভাবে হইত। অহন তো ধরবার গেলে দেহা যায়, আমি যদি দশটা খুনও কইরা ফালাই, টেহা দিয়া মাপ পাইয়া যায়। এই জায়গায় তো মুনে করেন সব শেষ অইয়া যায়। এইভাবে চলতে থাকলে তো কোনোভাবে থামা সম্ভব না।

সামনে তো পূজা, কেনাকাটা করবেন না?

করছি। শাটপ্যান্ট বানাইছি। পোলাগো দিছি। যাও মার্কেট করগা। তারপর যে, মায় কিইনা দিব।

বাংলাদেশের কোন কোন জায়গায় গেছেন আপনে?

আমি বাংলাদেশের কুনো জায়গায় যাই নাই। আমি কুনো জায়গায় গুরি নাই।

ঢাকায় গেছেন তো নাকি?

ঢাকায় এমনে আমার সব জাগায় ঘুরাফিরা আছে। আর যাওনের মইদ্যে আমি মামিসিং গেছি।

আর কুনো জেলায় যান নাই?

নাহ আর কুনো জেলায় যাই নাই। রাজবাড়ী পর্যন্ত গেছি। ঢাকা নবাবপুর পর্যন্ত গেছি।

সংসদ ভবনে গেছেন?

সংসদ ভবনে অনেক বার গেছি।  অহনে-সে কড়াকড়ি। আগে তো মনে করেন যায়া আতমুক দুইছি জাতীয় সংসদ ভবনের প্যান্ডেলের দিকে। তহন ওই জাগায় তিন ঘণ্টা চাইর ঘণ্টা বইয়া থাকছি। গুরছি গারছি। অহন তো হে ই নাই। এহন তো আপনের ওই ইয়ের ভিতরেই ঢুকতে দেয় না। রাস্তা দিয়াই যা দেহনের গুইরা গাইরা দেহন লাগে।

আপনার অবসর কাটে কী করে? বাকি সময় কাটান কীভাবে? ব্যবসাটেবসা তো করেন। তারপরে?

অহন তো সকালে বেচি বারোডা পর্যন্ত। বারোডা থেইকে তিনডা পর্যন্ত বন্দ। আবার পাচটা থেইকে মাছ বেচা শুরু করি।

আর বাকি সময় বাড়িতে?

দুপুর বেলা খায়াটায় গুম পারি।

টিভি দেখেন কখন রাতে?

টিভি দেহি রাইতে। দশটার আগে না।

 

1 COMMENT

  1. পড়ে বেশ মজা লাগলো। মনেই হল না যে, পড়ছি। ঠিক যেন নিজ কানে শ্রবণ করলাম।

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here