ইউরো-আমেরিকান বিদ্যাচর্চায় বিচিত্র ধরনের গবেষণা হয়ে থাকে। তারা যখন আরেকটি অঞ্চলে ভূরাজনৈতিক আগ্রাসন চালায় তখনও সে বিষয়ে গবেষণা সম্পন্ন করে। ধর্ষণ বিষয়ে তাদের কাজের অন্ত নেই। ধর্ষণ ও যৌন সহিংসতা থেকে সুরক্ষা পেতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোও বিভিন্ন গবেষণাধর্মী কর্মকাণ্ড পরিচালনায় অংশ গ্রহণ করে থাকে। এ ধরনের একটি কাজ করেছে আমেরিকার ইন্ডিয়ানা রিপলি কাউন্টি শেরিফের দপ্তর। তারা কারাবন্দি ধর্ষক ও ডেট রেপিস্টদের সাক্ষাৎকার নিয়েছে, দেখতে চেয়েছে ভিক্টিমদের মধ্যে তারা আদতে কী খোঁজে, কীভাবে তারা ধর্ষণের পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়ন করে। চমকপ্রদ সব তথ্য বেরিয়ে এসেছে সাক্ষাৎকারগুলো থেকে। বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে এসব তথ্য সামগ্রিকভাবে প্রযোজ্য না হলেও ধর্ষকদের ধর্ষণ-প্রবণতা ও কৌশলগুলো বুঝতে সহায়তা করে। কারণ ধর্ষকরা নিজের জবানিতেই কথাগুলো বলেছে। আমরা সেসব থেকে চুম্বক অংশ উপস্থাপন করছি :
চুল
ধর্ষকদের অনেকেই বলেছে যে, তারা ছোট চুলের নারীদের টার্গেট করে না। কারণ সহজে হাতের মুঠোয় ধরে রাখা যায় না। তাদের টার্গেট পনিটেল, খোঁপা করা ও লম্বা চুলের নারী। শক্ত করে চুল ধরে রাখা যায়। এ কারণে তারা নারীর চুলের বিন্যাস খেয়াল করে।
পোশাক
ধর্ষকদের দ্বিতীয় লক্ষ্য থাকে নারীর পোশাকের দিকে। যে ধরনের পোশাক সহজে টেনে খুলে ফেলা যাবে, সে ধরনের পোশাক পরিহিত নারীদের টার্গেট করে থাকে। তাদের কেউ কেউ পোশাক কাটার জন্য সিজরও সঙ্গে রাখে।
সেলফোন, পার্স ও অন্যান্য
এমন নারীদের তারা শিকারে পরিণত করে যারা সেলফোনে কথা বলছে, পার্সে কিছু খুঁজছে কিংবা অন্য কোনো কাজ করছে; এতে করে অপ্রত্যাশিতভাবে হতচকিত করে ফেলা যায় এবং সহজে টার্গেটকে করায়ত্তে আনা যায়।
ভোর
অধিকাংশ ধর্ষক ধর্ষণে অংশ নিয়েছে ভোরের দিকে ভোর ৫.৩০টা থেকে সাড়ে ৮.৩০টা নাগাদ। সম্ভবত লোকজনের ভিড় কম থাকাই একটি কারণ।
স্থান
আক্রমণের জন্য তিনটি প্রধান স্থান ধর্ষকরা নির্বাচন করে থাকে : প্রথমত, গ্রসারি শপের পার্কিং জোন, দ্বিতীয়ত, অফিস পার্কিং বা গ্যারেজ, তৃতীয়ত, পাবলিক রেস্টরুম।
স্থানান্তর
যে স্থান থেকে ধর্ষকরা নারীকে তুলে নেয় তারা দ্রুত সে স্থান ত্যাগ করে এবং নিজের জন্য নিরাপদ ও চিন্তামুক্ত একটি স্থানে চলে যায়।
ছাতা বা অন্য বস্তু
ছাতা বা অন্য কোনো লম্বা বস্তু যা দিয়ে দূর থেকে আঘাত করা যায় এমন বস্তু হাতে থাকলে সে ধরনের নারীকে তারা টার্গেট করে না।
কেউ পিছু নিলে
ধর্ষকরা নিজেরাই কিছু ডিফেন্স ম্যাকানিজম বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছে; যেমন : রাস্তা, গ্যারেজ, অ্যালিভেটর কোথাও কেউ পিছু নিলে তাদের মুখের দিকে তাকান এবং প্রশ্ন করুন। ধরা যাক, প্রশ্ন করলেন, কয়টা বাজে? কিছু সাধারণ কথাবার্তার অংশ নিন। হতে পারে এমন, ‘অবিশ্বাস্য ঠান্ডা পড়েছে।’ তার মুখের দিকে তাকান, দেখবেন আপনি আর টার্গেট হিসেবে নেই।
পাল্টা জবাব
অধিকাংশ ধর্ষক মনে করে যে, তারা দুর্বল শিকার বেছে নেয়। যারা পাল্টা জবাব দিতে সক্ষম বা ভয় পায় না তাদের তারা ছেড়ে দেয়।
পিপার স্প্রে
পিপার স্প্রেকে ধর্ষকরা ভয় পায়। কেউ যদি পিপার স্প্রে বের করে এবং হাতের মুঠোয় নিয়ে প্রতিহত করার চেষ্টা করে তাহলে ধর্ষকরা সটকে পড়ে।
আঘাত করুন
আপনাকে যদি কেউ আঁকড়ে ধরে আপনি আঘাত করুন। পেছন থেকে জাপটে ধরলে আক্রমণকারীর বগলে খামচে ধরুন বা মধ্য-ঊরুতে জোরে জোরে আঘাত করুন।
অণ্ডকোষ
প্রাথমিক আঘাত শেষে ধর্ষকের অণ্ডকোষ টার্গেট করুন। জোরালো আঘাত করুন। ধর্ষণকারীদের মতে, অণ্ডকোষে আঘাত ভীষণ বেদনাদায়ক। তাদের ভাষ্যে, আপনি হয়তো ভাবতে পারেন যে, আপনি যতো বেশি সমস্যার সৃষ্টি করবেন আপনাকে ততো বেশি আঘাত করা হবে। আসলে তা নয়। যে বেশি সমস্যা সৃষ্টি করবে না, ধর্ষণকারীরা তাকেই বেশি টার্গেট করে। আর তাই যতো পারুন ধর্ষণকারীর জন্য সমস্যা সৃষ্টি করুন।
হাত মুচড়ে দিন
আপনার গায়ে কেউ হাত দিলে বা হাত দেবার চেষ্টা করলে তার হাতের প্রথম দুই আঙুল প্রচণ্ড শক্তি দিয়ে হাতের উল্টো দিকে মুচড়ে দিন। এতে করে ধর্ষণে উদ্যত ব্যক্তি আঘাতপ্রাপ্ত হবে এবং হাতের জোর কমে যাবে।
পরিপার্শ্ব সম্পর্কে সচেতনতা
নিজের পরিপার্শ্ব সম্পর্কে সব সময় সচেতন থাকুন। অস্বাভাবিক কিছু নজরে পড়লে এড়িয়ে যাবেন না। আপনার অন্তর্দৃষ্টিকে কাজে লাগান।
সূত্র : www.ripleycounty.com
খুবই ভালো একটা লেখা