জ্যোৎস্নাসম্প্রদায়

১৬

জলের জিপসি তুমি রঙিন বেদেনী—কালো টিপ,

লাল আঙ্গি, উঁচা খোঁপায় জবাফুল গুঁজা, গলায়

মাছের কাঁটার মালা, বাজুতে বিধ্বস্ত হয় বুঝি

ধনেশ পাখিরা, আর চলনে নাগিনী তুমি, ওগো,

হৃদয়ে লাগাও শিঙা যত বিষ নেমে যাক আজ

মহিষের শিঙ্গার চেও কালো এই অন্তরের বিষ।

শিয়ালের হাড় দিয়ে করো চিকিৎসা পৃথিবীর

সাপের চর্বির তেল করো মালিশ স্বামীর ঠাণ্ডা

অলস উরাতে, কিংবা তাকে দাও সোহাগী তাবিজ।

কতটা ঝিনুক বিক্রি হলে রজঃস্বলা হবে নদী?

স্বভাবে নাগিনী তুমি, রাতে হোক সার্থক তোমার

গাওয়াল। নদীতীরে থৈ থৈ চাঁদের মদিরা খাও,

আর নিরলে নৌকাতে টেনে নাও বেগানা পুরুষ,

তার ব্যথা উপশম করো পাঁজরে বাঘের থাবায়।

 

১৭

অমাবস্যার প্রথম রাতে মায়াবী পিদিম জ্বলে

কোন বটগাছে, বিটিছানাদের কণ্ঠ শোনা যায়

কোন পুষ্করিণীর পানিতে, বলো তো ডাহুক। পরে,

আস্বিনের শুক্লা শুরু হলে, সহস্র মাইল ব্যাপী

আতপ চালের গুঁড়ি দেখ উড়ছে আকাশে, আর

দূর্বাঘাসের মাথায় বসে কার বিটিছানা তারা

গোনে ছায়াপথে! শিশিরের শালীনতা গায়ে মেখে,

আসমান জমিন একাট্টা-করা তোমার নিনাদ

কারা শোনে বলো গোল হয়ে বসে। জোয়ালের ক্ষতে

জ্বলা নিযুত নক্ষত্র দেখে দেখে জেগে থাকে কারা!

আমি তাদেরই লোক। তাদের মাথায় দেব বলে

সোনালু ধানের শীষ ছিঁড়ে বানাই মুকুট, আর

পায়ের পঙ্কজ ধোব বলে আনি স্বর্গের শরাব।

আমি দলিতের তল্পিবাহক, শুনছ হে ডাহুক?

 

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here